সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের পাকিস্তান প্রীতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের! এবার পাকিস্তানের বিতর্কিত ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের সুখ্যাতি করলেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলে দিলেন, মুনিরের সঙ্গে বৈঠকে বসে তিনি ‘সম্মানিত’। তবে ভারত-পাক যুদ্ধবিরতি নিয়ে ট্রাম্পের অবস্থানে কিছুটা বদল দেখা গেল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই প্রথমবার যুদ্ধবিরতির ‘কৃতিত্ব’ নিজে না দাবি করে সেটা দুই দেশকে দিলেন।
সংঘর্ষবিরতির দিন থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করে আসছেন, তাঁর মধ্যস্ততাতেই দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দুই দেশের মধ্যেকার যুদ্ধ থেমেছে। ক’দিন আগে হোয়াইট হাউসে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সাইরিল রামাফোসার সঙ্গে আলাপচারিতাতেও তিনি দাবি করেন, বাণিজ্যের শর্তেই ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতি সম্ভব হয়েছে। যার মধ্যস্ততা তিনিই করেছেন। এমনকী, বুধবারই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফোনালাপের পর ট্রাম্প স্পষ্ট বলে দেন, “ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধটা আমি থামিয়ে দিয়েছি। আসলে পাকিস্তানকে খুব ভালোবাসি।”
মোদির সঙ্গে ফোনালাপের পর পাকিস্তানের সেনাপ্রধান তথা ফিল্ড মার্শালের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা হয় ট্রাম্পের। তারপরই সংঘর্ষবিরতি নিয়ে অবস্থান বদলের ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ভারত-পাক সংঘর্ষ বিরতিতে ভারতের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বড় ভূমিকা নিয়েছেন। আর পাকিস্তানের হয়ে সেই কাজটা করেছেন আসিম মুনির। এ হেন বুদ্ধিমান লোকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পেয়ে তিনি ‘সম্মানিত’। ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই খুবই ‘স্মার্ট’ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ট্রাম্পের কথায়, “আজ আমি আসিম মুনিরের সঙ্গে দেখা করলাম কারণ আমি সংঘাত থামানোর জন্য ওকে ধন্যবাদ দিতে চাই। যুদ্ধ না করার জন্য, লড়াই থামিয়ে দেওয়ার জন্য আমি ওকে ধন্যবাদ দিতে চাই।” মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলছেন, “দু’জন বুদ্ধিমান মানুষ, খুব বুদ্ধিমান মানুষ যুদ্ধ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভুলে গেলে হবে না, দুটো দেশের হাতেই আণবিক অস্ত্র আছে। খুব শক্তিশালী আণবিক অস্ত্র আছে। তাই এই যুদ্ধ থামাটা বুদ্ধিমানের কাজ।” যুদ্ধবিরতির কৃতিত্ব নিজে নিতে না চাইলেও ট্রাম্পের মুখে ফের বাণিজ্য চুক্তির প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “মোদির সঙ্গেও আমার কথা হয়েছে। আমরা ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করব। পাকিস্তানের সঙ্গেও বাণিজ্য চুক্তি করব।”
ট্রাম্প সংঘর্ষবিরতি নিয়ে মন্তব্যে সম্ভবত এই প্রথমবার নিজে কৃতিত্ব দাবি করলেন না, যা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। আসলে ভারত শুরু থেকেই দাবি করে আসছে, সংঘর্ষবিরতির সিদ্ধান্ত একান্তই ভারত ও পাকিস্তানের নিজস্ব। এতে কোনও বাণিজ্য চুক্তি বা তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতার কোনও ভূমিকা নেই। কিন্তু ট্রাম্প এতদিন জোরালো কণ্ঠে দাবি করে আসছেন দুই দেশের সংঘাত বন্ধের নেপথ্যে তিনিই রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই ট্রাম্পের এদিনের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ।