মাটির দুর্গা

মাটির দুর্গা

ভিডিও/VIDEO
Spread the love


‘শুনেছি জেলে নাকি হোমরাচোমরা কয়েদিরা আপনার মতো লিকলিকেদের দিয়ে গা-হাত-পা টিপিয়ে নেয়! অকারণে চুলের মুঠি ধরে ঝাঁকায়, কথায় কথায় চড়-ঘুসি চালায়, এমনকি শৌচকর্মের জল পর্যন্ত এনে দিতে বলে! তা মশাই, আপনি সেসব সহ্য করতেন কী করে? চেহারার যা ধরন আপনার!’

সাধারণ দু’-চারটে কথার পরিচয়ে পরিচিত কেউ এধরনের কথা বললে ঠাঁটিয়ে চড় কষানোর ইচ্ছে দমন করতে পারে খুব কম সংখ্যক মানুষই৷ অরূপরতন তেমন ইচ্ছে দমিয়ে কথা ঘুরিয়ে বলল, ‘দেখুন… কী যেন নাম আপনার?’

‘আমার তেমন কোনও নাম নেই, নামকরণের প্রয়োজনও নেই! আপনি বলুন৷’ লোকটি বলল৷

‘আমার কেসটা ছিল প্রেম ঘটিত৷ এককোণে পরে থাকতাম, বিড়বিড় করতাম৷ বিশেষ কেউ আমায় ঘাঁটাত না৷ জানেন তো, ব্যর্থ প্রেমিক চিরকাল করুণার পাত্র৷ আর হ্যাঁ, শব্দটা জেল নয়, সংশোধনাগার৷’

‘মারাত্মক ভুল হয়ে গেছে মশাই! আপনি আলাপের শুরুতেই বলেছেন সংশোধনাগার৷’

‘ঠিক আছে৷ এত ভেঙে পড়বেন না৷ এ আর এমন কী ভুল! ভুল তো হয়েছিল আমার৷ রূপমতীর ফাঁদে পা দেওয়া৷’

‘প্রেমের প্রস্তাবকে আপনি ফাঁদ বলছেন!’

‘হ্যাঁ বলছি৷ না বলে পারছি না৷ আমি ছিলাম রূপমতীর সাত নম্বর প্রেমিক৷’

‘সাত নম্বর প্রেমিক! কী বলছেন মশাই?’

‘বিশ্বাস হচ্ছে না, না? ঠিকঠাক হিসেব করলে সংখ্যাটা বাড়তেও পারে৷ বেশি ঘেঁটে লাভ কী বলুন?’

‘ইন্টারেস্টিং! আপনি কি প্রথম থেকেই জানতেন আপনি সাত নম্বর? নাকি মেলামেশার পরে জানলেন!’

‘প্রথমে জানলে তো ওঁর ফাঁদে পা-ই দিতাম না৷ প্রেম-মহব্বতের ব্যাপারে কেউ কি সাতে-পাঁচে থাকতে চায়? সবাই প্রথম এবং শেষ হতে চায়, বুঝলেন৷’

‘ভাবার বিষয় মশাই৷ তবে কী জানেন, কোনও মানুষ যদি লোভ, হিংসা, অধিকারের নেশায় তলিয়ে না গিয়ে কেবলমাত্র সুন্দরের সাধনা করে তবে তার কাছে সুন্দর ধরা দেবেই৷ সুন্দরের সাধনা আবার সবার ক্ষেত্রে এক রকম নয়৷ আপনার ক্ষেত্রে সুন্দরের সাধনা বলতে ছিল রূপমতীর প্রেম? টি-টোয়েন্টির স্কোরের মতো নাম্বারিংয়ে না গেলে হয়তো…৷’

‘আরে না মশাই, আপনি প্রথম থেকে না শুনলে ঠিক বুঝতে পারবেন না৷’ লোকটিকে থামিয়ে দিয়ে বলল অরূপরতন শিকদার৷

‘শুনব, অবশ্যই শুনব৷ তার আগে বলে রাখছি, ইচ্ছেয় বা অনিচ্ছেয় ফুল প্রজাপতিকে ডাকে৷ কারণ প্রজাপতি হচ্ছে ফুলের প্রেমিক৷ ওই প্রজাপতি প্রেমিকের জন্যই ফুলেরা এত সেজে থাকে৷ আপনাকে ফুল-প্রজাপতির গল্প বলার উদ্দেশ্য প্রতিটি প্রজাপতির উচিত নিজের মতো করে ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করা৷ আগুপিছু ভাবলে মধু সংগ্রহের নেশাটাই কেটে যায়৷’

‘রূপমতীকে ভালোবাসাটা আমার নেশা নয়৷ আমার প্রথম প্রেম৷ জীবনে সবকিছুরই একটা প্রথমবার থাকে৷ নিজে না বাঁচলে অন্য সব মানবিক সম্পর্কই অসত্য, মূল্যহীনের যুগে রূপমতীই ছিল আমার জীবনের একমাত্র সত্য৷ কিন্তু সেটা বোঝার ক্ষমতা ওঁর ছিল না! কথায় কথায় রবীন্দ্র-নজরুল-জীবনানন্দের বুলি আওড়ানো, সাংস্কৃতিক মঞ্চে দরদি কবিতা পাঠ, জিনস-টপ বর্জিত আধুনিক জীবনযাপন যে চারিত্রিক মাপকাঠি নয়, আমি হাড়ে-হাড়ে টের পেয়েছি৷’

‘কিন্তু বর্ণনা শুনে তো মনে হচ্ছে যথার্থ শিক্ষিত পরিবারের মেয়ে৷ পরিবারের শিক্ষা না থাকলে কোনও মেয়ে এমন সংস্কৃতিমনস্ক হতে পারে? রূপমতী যে শিক্ষিত এবং বাচ্চাদের স্কুলের দিদিমণি, তা আপনি অবশ্য আগেই বলেছেন৷ ও যে নীল রঙের স্কুটি চালিয়ে স্কুলে যেত, সেকথাও বলেছেন৷’

‘আপনি বর্ণনা শুনে যা ভাবছেন আমি প্রথম প্রথম ওঁর সঙ্গে মিশে তেমনটাই ভেবেছিলাম৷ পরবর্তীতে বুঝলাম আমার ধারণা ভুল! রূপমতী ভিতরে এক, বাইরে আরেক।’

‘এই ভিতর-বাহিরটা কী রকম?’

‘একশ্রেণির নায়িকা রেপ সিনে শুট করার পর ভিলেনের কোলে বসে হাসতে হাসতে মদের গ্লাসে চুমুক দেয়৷ অন্য শ্রেণি সম্মানহানিতে কাঁদতে থাকে, অনেক সময় সিনেমাও ছেড়ে দেয়৷ রূপমতী ওই প্রথম শ্রেণির নায়িকা, বুঝলেন৷’

‘যাহ বাবা, যেমন নাম তেমনই খিটকেল চরিত্র দেখছি!’

‘না, ওঁর আসল নামটা সুন্দর, রূপশ্রী৷ ওই নামেই সকলে চেনে৷ আমিই রূপমতী নামটা রেখেছিলাম৷ সাহিত্যে রূপশ্রীর নামটা যায় না কি, ভেবে দেখুন৷’

‘সাহিত্য আমার কাছে ভীষণ কমপ্লিকেটেড ব্যাপার৷ আমি সাহিত্যের ধার ঘেঁষি না৷ তবে আপনার সাহিত্যে এলেম আছে বুঝলাম৷ কবিতা-টবিতা লেখেন নাকি?’

‘একটু-আধটু যে লিখতাম না, তা বলব না৷ কাল হল ওই লেখাই৷ রূপমতীর সঙ্গে প্রথম পরিচয় সূত্র ছিল কবিতা৷ তারপর বেশ কিছু অনুষ্ঠান মঞ্চে সে আমার কবিতা পাঠ করেছে৷’

 

অন্ধকারের নিজস্ব জগৎ আছে৷ সেই জগতে অন্ধকার, অন্ধকারকেই আলো ভাবে৷ ঘুটঘুটে অন্ধকারময় ঘরে সম্পূর্ণ অপরিচিত দুজন৷ লোকটি এবং অরূপরতন শিকদার৷ দু’বছর আগে হলেও অরূপরতন লোকটির সঠিক পরিচয় না জানা পর্যন্ত একটি কথাও বলার প্রয়োজন মনে করত না৷ কিন্তু নিজেরই সঠিক পরিচয় সম্পর্কে সন্দিহান মানুষের পক্ষে অপরের পরিচয় নিয়ে মাথাব্যথা থাকার কথা নয়৷ অরূপরতনও সে প্রয়োজন বোধ না করে সিগারেট জ্বালাল৷ মসৃণ ধোঁয়া ছেড়ে আন্দাজে বুঝল লোকটির হাতেও সিগারেট৷ দু’বার খুকখুক করে কাশল৷ শব্দ হল চারবার! অর্থাৎ লোকটিও কাশছে৷ মনের অন্ধকারের সঙ্গে এই অন্ধকার না মিশলে অরূপরতন জানতে পারত তার মতনই ছ’ফুটের ছিপছিপে লোকটির মুখভর্তি বহুদিনের না কাটা দাড়ি৷ ফুলভর্তি ডালার মতো মাথায় ঝাঁকড়া চুল৷

‘শুনছেন! ও মশাই, ঘুমোলেন নাকি?’

‘না, আপনি বলুন৷ আমি শুনছি৷ তবে কাটছাঁট করে বলবেন৷’

‘দু’পেগ মদ গলায় ঢেলে কেউ ঘুমিয়ে পড়ে, কেউ মাতাল সেজে অনবরত খিস্তি মেরে মনের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে চায়৷ আপনি মনের মধ্যে একটা বেশ গভীর ক্ষত নিয়েই ময়দানে নেমেছিলেন৷ পরবর্তীতে আর সেই ক্ষত শুকিয়ে আপনার মধ্যে প্রেম-ভালোবাসার বোধ জন্ম নেয়নি! কারণ মানুষ কাউকে একবার ভুল বুঝতে শুরু করলে তার আর শেষ থাকে না৷ অপরপক্ষ সম্পর্কে যে কোনও ব্যাপারে নিজের মতো একটা ভুল ধারণা সে তৈরি করে নেয়!’

‘আমি প্রথম থেকে বলছি… আপনি শুনুন৷’

‘আপনার পরিচিত প্রায় আশি শতাংশ মানুষই রূপমতী সম্পর্কে নেতিবাচক কথাবার্তা বলেছে৷ শুনে শুনে, প্লাস-মাইনাসের দোলাচলে ঠিক যে সময় আপনি ভাসছেন, ঠিক সে-সময়ই একদিন দেখলেন একটি সুদর্শন ছেলের মোটরবাইকে হাওয়ায় উড়ছে রূপমতী৷’

‘আপনি কী করে জানলেন? এর আগে তো কখনও আমাদের দেখা হয়েছে বলে মনে হয় না!’

‘আমার কথা পরে বলছি…৷ সেই দিনটিতে আপনি শ্মশানযাত্রী৷ প্রতিবেশী জেঠিমার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ৷ পায়চারি করছিলেন শ্মশান ঘেঁষা রাস্তায়৷ সময়টা সন্ধে৷ সে-সময়ই আপনাকে পাশ কাটানো একটা বাইকে দেখলেন রূপমতীকে৷ সঙ্গে সঙ্গে ফোন করলেন৷ সে বলল, টিউশন পড়াতে এসেছে ছাত্রের বাড়ি৷ আপনি বিশ্বাস করলেন না৷ মনে মনে বললেন মিথ্যেবাদী৷’

‘ওঁ সত্যি মিথ্যেবাদী, বুঝলেন৷ অনেক প্রমাণ পেয়েছি৷’

‘হ্যাঁ তা সত্যি৷ তবে আপনার প্রমাণগুলো আইডিয়া ভিত্তিক৷ বাস্তবের সঙ্গে মেলাতে চাননি৷ তেমন চার্ম আপনার ছিলই না৷’

‘মশাই, আপনার কথাগুলো অনেকটা আকাশবাণীর মতো! আমায় ভাবতে দিন কী করে মিলে যাচ্ছে সব৷’

‘সব তো মেলেনি! আপনি সব মেলাতে পারেননি, সিদ্ধান্ত নিয়েছেন…৷’

‘ঠিক-ই বলছেন৷ সিদ্ধান্তই নিয়েছিলাম৷ জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল সিদ্ধান্ত৷ এক মৃত্যুতে দুটি মৃত্যু! কেন যে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম?’

‘ছোট-ছোট আইডিয়া পাহাড় সমান হলে, আপনি ভাবলেন রূপমতী আপনাকে ইগনোর করছে, তখন আপনার মধ্যে প্রচণ্ড জেদ চেপে বসে৷ এমন জেদ তাদের মধ্যেই চেপে বসে, যাদের জীবনে ভালোবাসার মানুষের অভাব৷ ছোট থেকেই আপনি ভালোবাসাহীন একটি দ্বীপের মানুষ৷ জীবনে সফল হতে পারেননি বলে আপনার আত্মীয়রা সম্পর্কের পাঠ চুকিয়ে দিয়েছে৷ কেউ কোনও দিন আপনার খোঁজ রাখেনি৷ সেই শূন্যতা পূর্ণ করেছিল রূপমতী৷ আপনার ভাষায় আশ্চর্য মেয়ে৷’

‘আমার জীবনের প্রথম আশ্চর্য রূপমতী৷ দ্বিতীয় আশ্চর্য আপনি, বুঝলেন৷ কী করে জানলেন কোন মরমে আমি মরে আছি?’

‘পরপর চারবার একই জীবন পাঁচালি পড়লেন৷ বিরক্ত হচ্ছিলাম তবু আপনার কথা শুনছিলাম কেন জানেন? কারণ, আপনি সত্যি বলছিলেন৷ এবার আপনার জীবনের চরম সত্যিটা আমি বলছি শুনুন, আপনি রূপমতীকে ধাক্কা মারেননি, খুন করেননি৷ জেলেও যাননি৷ রূপমতী জীবিত৷’

 

‘বুধবারে পার্ক বন্ধ থাকবে জেনেই আপনি রূপমতীকে দেখা করতে বলেছিলেন৷ আপনার উদ্দেশ্য ছিল পার্ক বন্ধ দেখলে রূপমতী নিশ্চয় এসেই ফিরে যাবে না৷ আপনার সঙ্গে সময় কাটাতে পার্ক সংলগ্ন নদীর বাঁধ বরাবর দু’-এক রাউন্ড ঘোরাফেরা করবে, নয়তো পা ছড়িয়ে বাঁধের উপর বসবে৷ সেই সুযোগে ধাক্কা দিয়ে আপনি তাঁকে নদীতে ফেলে দেবেন৷ আপনি জানতেন রূপমতী সাঁতার জানে না৷ রূপমতীর সলিলসমাধি ঘটলে আপনি ভালোবাসা হারাবার ভয় থেকে মুক্তি পেয়ে বাকিটা জীবন অন্ধকারময় ঘরে কাটিয়ে দেবেন৷’

লোকটি বলেই চলল, ‘রূপমতীকে হারাবার ভয় আপনার মধ্যে যে সহজ সরল কিন্তু মর্মান্তিক ফিলোসফির জন্ম দিয়েছিল তার গন্ধ পেয়ে যায় পাহাড়ি নদী৷ ভালোবাসা আর শত্রুতার নিজস্ব গন্ধ থাকে৷ অপরপক্ষ টের পেয়ে যায়৷ নইলে কী করে ঠিক বুধবারেই, বিকেল পাঁচটাতেই একদিকে হঠাৎ বৃষ্টি অন্যদিকে শান্ত পাহাড়ি নদীটি হড়পায় শক্তিশালী হয়ে ওঠে! ভাসিয়ে নিয়ে যায় পার্কের একাংশ৷ সেদিন সন্ধেতে সমস্ত নিউজ চ্যানেলে পার্কের সঙ্গে ভেসে যাওয়া রূপমতীর বয়সি একটি মেয়ের মুখ ভেসে ওঠে৷ সেই করুণ মুখ দেখে আপনার ফিলোসফির সঙ্গে বিরোধ বাধে ফিক্সেশানের৷ অবশ্য আপনার ভালোবাসা এত গভীর, এত কঠিন ছিল যে আপনার মধ্যে অনেক আগেই ফিক্সেশানের জন্ম হয়েছিল৷ বিশেষ করে যেদিন সন্ধেতে আপনি শ্মশান সংলগ্ন রাস্তায় অন্য একজনকে দেখে রূপমতী ভেবে বসেন৷ সেই ফিক্সেশান দৃঢ় হয় নিউজের মেয়েটিকে দেখে৷ ব্যাস তারপর…৷’

‘তারপর…?’ অরূপরতনের গলায় বিস্ময়৷

‘তারপর! শুরু হল আপনার বন্দি জীবন৷’

খুব সহজ সুরে কথাগুলো বলে উঠে দাঁড়িয়ে লোকটি স্বগতোক্তি করল, ‘এবার, মন চলো নিজ নিকেতনে৷’

‘চলো মন বললেই চলা যায়..! তবে এসেছিলেন কেন?’ এতক্ষণ মন্ত্রপূত সর্পের মতো মাথা নীচু করেছিল অরূপরতন৷ এবার মাথা তুলে বলল৷

‘আমি তো আসিনি, আমি তো রয়েছি আপনার মধ্যেই৷ আমি আপনার পরম বন্ধু! মাঝে মাঝেই আপনি আমার সঙ্গে ঝগড়া করেন, আবার ভালোওবাসেন, বুঝলেন মশাই৷’

‘না বুঝলাম না৷ আমি হেঁয়ালি বুঝি না৷’

‘হেঁয়ালি নয়… আমি তো সেই লোক যে আপনার মধ্যে থাকি৷ আপনার সুখে হাসি, দুঃখে কাঁদি৷ আমি সবার মধ্যেই থাকি৷ সবার মতো হয়ে৷’

‘চলে যাবেন?’

‘হ্যাঁ, আপনি ঘুমোলেই যাব৷’

‘কোথায় যাবেন?’

‘রূপমতীর কাছে৷’

‘সে এখন কোথায়?’

‘দরজা খুললেই তাকে দেখতে পাবেন৷ দেওয়ালে ঠেস দিয়ে পা ছড়িয়ে বসে আছে আপনার বারান্দায়৷ পাশে পড়ে আছে একটি কাপড়ের পুঁটুলি৷ ওই ওর সর্বস্ব৷’

‘সত্যি বলছেন? বিশ্বাস হচ্ছে না…৷’

‘রূপমতীকে বিশ্বাস আপনার আগেও হয়নি৷’

‘আমি তার কাছে যাব৷ আপনি আমায় নিয়ে চলুন৷’

‘নিজেকে মুক্ত করলে নিজেই যেতে পারবেন৷ আমার প্রয়োজন হবে না৷ তবে এখন নয়৷ সকাল হোক৷ অপেক্ষার ক্লান্তিতে সে ঘুমিয়ে পড়েছে৷ আগে আমি গিয়ে তাকে জাগিয়ে তুলি৷’

‘ওঁ কি এখনও আগের মতোই চঞ্চল, না কি…৷’

‘না… শান্ত৷ দীর্ঘ অপেক্ষায় সে শান্ত৷’

‘জানেন রূপমতী পাখির মতো একসঙ্গে অনেক কথা বলে!’

‘এখন সে প্রায় কথাই বলে না৷ যে কম কথা বলে, সে খুব শক্তিশালী হয়, জানেন৷’

‘আর ওঁর মুখভরা হাসি?’

‘শত দুঃখ-যন্ত্রণাতেও ছড়িয়ে রেখেছে মুখে৷ ঠিক যেমন ছড়িয়ে রাখে মাটির দুর্গা।’

 

 



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *