ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: একুশের বিধানসভা নির্বাচন, চব্বিশের লোকসভা ভোটে পদ্মশিবিরের দখলে গিয়েছে বনগাঁ। কিন্তু ছাব্বিশে এই সমীকরণ বদলে দেওয়াই পাখির চোখ রাজ্যের শাসক শিবিরের। আর সেই লক্ষ্যে এখন থেকেই ঝাঁপাচ্ছে তৃণমূল। সোমবার বনগাঁর সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে ক্যামাক স্ট্রিটে বৈঠক করে সেই সুর বেঁধে দিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সাফ বার্তা, ”মতুয়া গড়ে জিততে হবে। আর কোনও দ্বিতীয় কথা নেই। একজোট হয়ে মতুয়া গড়ের লড়াইয়ে নেমে পড়ুন সবাই।” কী কারণে সেখানে বিজেপির ভোটব্যাঙ্ক বাড়ছে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন অভিষেক।
২০২৬ সালে বাংলায় বিধানসভা ভোট। তার জন্য এখন থেকেই একেবারে তৃণমূল স্তরে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে শাসকদল। চতুর্থবার দলকে ক্ষমতায় আনতে প্রত্যেক জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে আলাদা আলাদা করে বৈঠক সারছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফের রাজ্যজুড়ে সবুজ ঝড় তোলাই লক্ষ্য। গেরুয়া শিবিরের হাত থেকে একাধিক আসনও ছিনিয়ে আনতে হবে। তার মধ্যে অন্যতম মতুয়া গড় বনগাঁ। একুশের বিধানসভা ভোটে বনগাঁ উত্তর ও বনগাঁ দক্ষিণ, দুটি আসনেই বিজেপি জিতেছিল। ছাব্বিশে এই ফলাফল উলটে দিতে হবেই, সোমবার জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে এমন কড়া বার্তাই দিয়েছেন অভিষেক। তাঁর কথায়, ”মতুয়া গড়ে জিততে হবে। আর কোনও দ্বিতীয় কথা নেই।” তিনি আরও বলেন, ”মতুয়াদের মধ্যে বিজেপি ভোট বাড়ছে কেন? এটা নজর রেখে নিজেদের মধ্যে নিবিড় যোগাযোগ স্থাপন করুন।”
এদিনের বৈঠকে অভিষেক মনে করিয়ে দেন বছর দুই আগে বনগাঁয় ঠাকুরবাড়ি সফরের সময় বাধাদানের বিষয়টি। ২০২৩ সালে অভিষেকের ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচি চলাকালীন মতুয়াদের ঠাকুরবাড়ি যাওয়ার আগে সেখানে চূড়ান্ত অশান্তকর পরিবেশ হয়ে উঠেছিল। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে বাধা দিতেই কার্যত ঠাকুরবাড়ির দুই যুযুধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এমন বিশৃঙ্খলা তৈরি করে বলে অভিযোগ। সোমবার বনগাঁ সাংগঠনিক নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে সেকথাও মনে করিয়ে দেন অভিষেক। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালার ঠাকুর, ঠাকুরবাড়ির জনপ্রতিনিধি তথা বাগদার বিধায়ক মধুপর্ণা ঠাকুর, প্রাক্তন বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। সকলের উদ্দেশেই অভিষেকের একটাই বার্তা, ছাব্বিশে মতুয়া গড় জিততে হবে।