সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শিল্ডে খেললেও ইরানে ‘এসিএল টু’র সেপাহান ম্যাচ না খেলতে যাওয়া নিয়ে সবুজ-মেরুন সমর্থকদের একটা অংশ খুশি নয়। তবে মোহনবাগান ম্যানেজমেন্টের তরফে যে সরকারি বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল তাতে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল ফুটবলারদের নিরাপত্তার বিষয়টি। মোহনবাগানের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার শুভাশিস বসু, জেমি ম্যাকলারেন, সাহাল আব্দুল সামাদ, মনবীর সিং, অনিরুথ থাপারা এবার স্যোশাল মিডিয়ায় সরব হলেন ইরান ইস্যু নিয়ে।
এদিন শুভাশিস নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন তোলেন, “নিরপেক্ষ ভেন্যু অন্যদের জন্য, কিন্তু মোহনবাগানের জন্য নয়?” এর পাশাপাশি ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রিলিমিনারি রাউন্ডের দুটি ম্যাচের উদাহরণ দিয়ে আরও লেখেন, “ভারতের দল বলেই কী এই পরিবর্তন হল না।” শুভাশিস যে ম্যাচ দুটির কথা তুলে ধরেছেন, সেই ম্যাচ দুটিকে এএফসি ইরান থেকে সরিয়ে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে নিয়ে গিয়েছিল বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। সেই পোস্টের সঙ্গে একটি এএফসির নোটিশকে পোস্ট করেছেন তিনি। ২০২০ সালের সেই দুটি ম্যাচের একটি ছিল ইরানের ক্লাব শাহর খোদরোর সঙ্গে বাহারিনের ক্লাব রিফফার ম্যাচ। দ্বিতীয় ম্যাচটি ছিল ইরানেরই অপর ক্লাব ইস্টে ঘালালের সঙ্গে কুয়েত এসসির ম্যাচ। সেই নোটিশে ম্যাচদুটি নিরপেক্ষ ভেন্য আমিরশাহীতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কারণ হিসাবে দেখানো হয়েছিল নিরাপত্তা জনিত সমস্যা। সেবারও ইরানে যাওয়ার বিষয়ে বেশ কিছু দেশের মানুষের সরকারিভাবে সমস্যা ছিল বলে উল্লেখ রয়েছে সেই পোস্টটিতে।
শুধু শুভাশিসই নন, এই একই প্রশ্ন তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন মোহনবাগানের আরেক ভারতীয় ফুটবলার সাহাল আব্দুল সামাদও। সবুজ-মেরুনের অজি বিদেশি ফুটবলার জেমি ম্যাকলারেনও তুলে ধরেন গুগুল সার্চে ছড়িয়ে থাকা অজিদের ইরানে গেলে কী হতে পারে তা উল্লেখ করে। এদিন ম্যাকলারেন গুগুল সার্চ অপশনে লেখেন “অজিরা ইরান গেল……।” তার সার্চিংয়ের ফলে যে পেজগুলো আসে। তারই ছবি স্ক্রিনশট তুলে দেন নিজের স্যোশাল মিডিয়ায়। সেখানে দেখা যায়, এই অজি ফুটবলারের সার্চের ফলে যে উত্তরটি এসেছে, তাতে লেখা আছে, সরকারের পরামর্শ অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়ানরা এই মুহূর্তে ইরানে যাওয়া উচিত নয়। বরং এখনি ওই দেশত্যাগ করা উচিত তাদের। অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তেহরানে। একই রকম পোস্ট করেন দিমিত্রি পেত্রাতোসও।
মোহনবাগান পুরো বিষয়টি নিয়ে কোর্ট অব অর্বিট্রেশনের ফর স্পোর্টসের দ্বারস্থ হয়েছে। ক্যাসের কাছে তারা ছয়টি বিষয় তুলে ধরছেন স্পষ্টভাবে। সেখান বলা হয়েছ, একাধিকবার তেহরানে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসকে মোহনবাগানের এই সমস্যার কথা চিঠি লিখে জানালেও সেখান থেকে কোনও রকম নিরাপত্তার আশ্বাস পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয়ত এএফসি ও ফেডারেশনকেও একই বিষয়ে ই-মেল করা হয়েছে। সেখান থেকেও কোনওরকম আশ্বাস আসেনি। আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে ইরানে মেডিক্যাল বিমার কভারেজ পাওয়া যায় না। প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ম্যাচ খেলতে গিয়ে যদি কোনও ঘটনা ঘটে তার দায় কে নেবে? এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ফুটবলারদের সঙ্গে যে দীর্ঘ বৈঠক করেন মোহনবাগান কর্তারা তাও উল্লেখ করা হয়েছে ক্যাসের কাছে।