সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একদিকে দ্রুত নগরায়ন। অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তন। আর তারই ফলশ্রুতি হিসাবে অদূর ভবিষ্যতে বিশ্বের প্রথম আধুনিক শহর হিসাবে ‘জলশূন্য নগরী’ হতে চলেছে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল। মার্সি কর্প অরগানাইজেশন নামে একটি সংস্থার রিপোর্টে এমন চাঞ্চল্যকর দাবি করা হয়েছে।
সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, কাবুলে ভূগর্ভস্থ জল গত এক দশকে নেমে গিয়েছে ৩০ মিটার। অর্ধেকের বেশি কুয়োয় জলের ছিটেফোঁটাও নেই। অথচ সেখানকার জলের প্রধান উৎসই কিন্তু কুয়ো। ফলে স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে। একে একটি গুরুতর ‘প্রাকৃতিক বিপর্যয়’ বলে মনে করছেন প্রকৃতিবিদরা। এখানেই শেষ নয়। কাবুলের ভূগর্ভস্থ জলের ৮০ শতাংশই আর ব্যবহারোপযোগী নয়। পরিস্থিতি যদি এমনই থাকে, তা হলে ২০৩০ সালের মধ্যেই ভূগর্ভস্থ জল একেবারেই শূন্য হয়ে যাবে। আর এতেই ‘সিঁদুরে মেঘ’ দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
মার্সি কর্প অরগানাইজেশনের আফগানিস্তারের ডিরেক্টর ড্যানি কারি জানাচ্ছেন, কোনও জনপদ জলশূন্য হয়ে পড়ার অর্থই হল সেখান থেকে মানুষ চলে যাবেন। অর্থাৎ ফের অভিবাসনের পরিস্থিতি তৈরি হওয়া। আর এই পরিস্থিতিতে দীর্ঘকালীন বিনিয়োগ দরকার কাবুলে। যাতে পরিস্থিতি শোধরানো যায় এবং অবশিষ্ট ভূগর্ভস্থ জলটুকু রক্ষা করার পাশাপাশি জলস্তরের উন্নতি ঘটানো যায়। স্বল্প মেয়াদি উদ্যোগ এর জন্য যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প। যদিও আফগানিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তা কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, কাবুলের জনসংখ্যা ৭০ লক্ষ। প্রতি বছর তাঁদের ব্যবহারের জলের পরিমাণ ৪.৪ কোটি কিউবিক মিটার। আফগানিস্তানের জল ও শক্তি মন্ত্রক চাইছে পঞ্জশিরের জল কাবুলে আনতে। যার ফলে একটা বাজেটও নির্ধারিত করা হয়েছে। কিন্তু সেজন্য ৩০০ থেকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। ফলে সেই অর্থের জোগান নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।