সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বদলের বাংলাদেশে বদলার রাজনীতি করছেন মহম্মদ ইউনুস! বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-সহ শয়ে শয়ে নেতার মুক্তিযুদ্ধের সনদ বাতিলের প্রস্তাব দিয়েছে তাঁর সরকার। মুক্তিযোদ্ধা কারা, সেই সংজ্ঞাই বদলে ফেলা হচ্ছে। এর মাঝেই এবার ‘নতুন’ বাংলাদেশে স্কুল-কলেজ পড়ুয়াদের শপথও পরিবর্তন করে দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নতুন শপথে বাদ পড়েছে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিসংগ্রামের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা। বাদ পড়েছে ‘অসাম্প্রদায়িক চেতনায়’ দেশ গড়ার প্রত্যয়ও।
আগেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিদিনের সমাবেশে (অ্যাসেম্বলি) শিক্ষার্থীদের শপথ পরিবর্তন করা হয়েছিল। এবার এবার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল-কলেজের শপথে পরিবর্তন এনেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আজ বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে শপথ পরিবর্তনের ঘোষণা করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, নতুন শপথটি হল,‘আমি শপথ করিতেছি যে, মানুষের সেবায় সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রাখিব। দেশের প্রতি অনুগত থাকিব। দেশের একতা ও সংহতি বজায় রাখিবার জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকিব। অন্যায় ও দুর্নীতি করিব না এবং অন্যায় ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিব না। হে মহান আল্লাহ/মহান সৃষ্টিকর্তা আমাকে শক্তি দিন, আমি যেন বাংলাদেশের সেবা করিতে পারি এবং বাংলাদেশকে একটি আদর্শ, বৈষম্যহীন ও শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে গড়িয়া তুলিতে পারি। আ-মি-ন।’
২০২২ সালের আগে এই শপথই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠ করা হত। ২০১৩ সালের আগে ‘অন্যায় ও দুর্নীতি করিব না এবং অন্যায় ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিব না’ অংশটি বাদে বাকি শপথবাক্যটি পাঠ করা হত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সমাবেশে। দুদকের (দুর্নীতি দমন কমিশন) সুপারিশে ২০১৩ সালের ১১ এপ্রিল শপথে ‘অন্যায় ও দুর্নীতি করিব না এবং অন্যায় ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিব না’ অংশটি যুক্ত হয়। সর্বশেষ ২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর তৎকালীন আওয়ামি লিগ নেতৃত্বাধীন সরকার প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শপথ পরিবর্তন করে। এর আগে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ‘অভ্যুত্থানে’ ক্ষমতার পালাবদলের পর ২০ আগস্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শপথ পরিবর্তন করা হয়।
এভাবেই বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া বাংলাদেশে তাঁরই সমস্ত স্মৃতি মুছে দিতে তৎপর ইউনুস সরকার। কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের নামই পরিবর্তনের দাবি তুলেছিল ইসলামি আন্দোলনের প্রতিনিধিরা। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে বাংলাদেশের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব দেয় দলটি। বর্তমান নাম ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ বদলে দিয়ে ‘পিপলস ওয়েলফেয়ার স্টেট অফ বাংলাদেশ’ নাম দেওয়ার ‘আবদার’ জানায় তারা। এর আগে ঢাকা-সহ বিভিন্ন জায়গার হাসপাতালে বঙ্গবন্ধু, হাসিনা ও অন্যান্য সদস্যদের নাম বদলে ফেলা হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে সরেছিল মুজিবের ছবি।