অর্ণব আইচ: তখন আগুনের লেলিহান শিখার গ্রাসে হোটেলটি। গলগল করে বেরচ্ছে দমবন্ধ করা কালো ধোঁয়া। ছড়িয়ে পড়েছে গোটা হোটেলে। বাইরে তখন হুলস্থূল । ততক্ষণে প্রাণ বাঁচাতে ঝাঁপ মেরে মারা গিয়েছেন একজন। এদিকে হোটেলের একটি ঘরে তখন তা কিছু বুঝতে পারেনি দুই শিশু ও তাদের দাদু। বাবা-মা গিয়েছিলেন বাইরে খাবার কিনতে। শেষে যখন তিনজনকে উদ্ধার করা হল, দেহে প্রাণ নেই।
তামিলনাড়ু থেকে রাজ্যে বেড়াতে এসেছিলেন এস.প্রভু ও টি.মধুমিতা। সঙ্গে ছিলেন মধুমিতার বাবা এস.মথুকৃষ্ণন ও দম্পতির দুই সন্তান। এক ছেলে ও মেয়ে। দার্জিলিঙ ঘুরে শহরে এসেছিলেন তাঁরা। উঠেছিলেন মেছুয়া বাজারের ছ’তলার ঋতুরাজ হোটেলে। রাতেই হাওড়া থেকে ট্রেন ধরে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হোটেলটিতে আগুন লাগার আগে বাইরে বেরন দম্পতি। খাবার ও কিছু জিনিস কেনার জন্য বেরিয়েছিলেন তাঁরা। সেটাই হল কাল! কে জানত ওত পেতে রয়েছে মৃত্যু। যা কেড়ে নেবে দুই সন্তান-সহ তাদের দাদুর প্রাণ।
খবর পেয়ে যখন দম্পতি ছুটে আসেন, তখন আর কিছু করার নেই। নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ হোটেলের ধারে কাছে ঘেষঁতে দেয়নি। তাও ফাঁক গলে ওঠার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু আগুন ও ধোঁয়ায় বেশি দূর এগতে পারেননি। সামনে দাঁড়িয়ে তাঁদের আত্মনার্দ মিশে গিয়েছে কালো ধোঁয়ার গভীরে। হোটেলের রুম থেকে দুই সন্তান-সহ তাঁদের দাদুর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অনুমান শ্বাস আটকে মৃত্যু হয়েছে তাদের।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৮টা নাগাদ জোড়াসাঁকোর মদনমোহন বর্মন স্ট্রিটের ৬ নম্বর লেনের একটি ৬ তলা হোটেলে আগুন লাগে। লেলিহান শিখা দ্রুত অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় গোটা এলাকা। আগুনের গ্রাসে চলে যায় হোটেলটি। সেই ঘটনায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। দিঘা থেকে খোঁজ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আহতদের পরিবার পিছু দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা।