নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: অষ্টমীর দিনের শুরুটা করেছিলেন নিজের এক্স হ্যান্ডেলে আশা ভোঁসলের গাওয়া দুর্গা দুর্গা দুর্গতিনাশিনী গান দিয়ে। সন্ধ্যায় দিল্লির ‘মিনি কলকাতা’ চিত্তরঞ্জন পার্কে মা দুর্গার আরতি করে দুর্গোৎসবে শামিল হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই প্রথমবার তিনি দুর্গাপুজোর সময়ে চিত্তরঞ্জন পার্কে হাজির থাকলেন। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি ভোটের বছর বলেই হঠাৎ দুর্গা শরণে গেলেন প্রধানমন্ত্রী?
এদিন সন্ধ্যায় পদ্মফুল হাতে নিয়ে দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কের পুজোয় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তাও। চিত্তরঞ্জন পার্কের কালীবাড়িতে মা কালীকেও এদিন আরতি করেন তিনি। সেখানেই দুর্গাপুজোর মণ্ডপে পৌঁছলে ঢাক বাজিয়ে, মহিলারা উলুধ্বনি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। দুর্গাপুজোর এইভাবে প্রধানমন্ত্রীর সামিল হওয়া তাৎপর্যপূর্ণ।থেকে এবারে যে দুর্গাপুজোকে তারা প্রাধান্য দেবে তা আগেই ঠিক করা হয়েছিল। তবে তাতে যে খোদ প্রধানমন্ত্রীও সামিল হবেন সেকথা আগে ঘুণাক্ষরেও কেউ টের পায়নি।
শেষলগ্নে দুর্গাপুজো নিয়ে মোদি-র মাঠে নামা আগামী বছরের বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখেই বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তাদের মতে ভোট বড় বালাই। দুর্গোপুজেরা সঙ্গে বাঙালির যে আবেগ জড়িয়ে রয়েছে, তাতে সুড়সুড়ি দিতেই আগে কোনওদিন না গেলেও এবারের দুর্গাপুজেরা চিত্তরঞ্জন পার্কে গিয়েছেন মোদি। বিজেপির পক্ষ থেকে অবশ্য যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, এতদিন পর্যন্ত দিল্লি বিজেপির দখলে ছিল না। তাই ইচ্ছা থাকলেও প্রধানমন্ত্রী সেখানে যেতে পারেননি। তাছাড়া দুর্গাপুজোয় প্রধানমন্ত্রী বাংলায় গিয়েছেন বলেও ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। যদিও বিজেপির দেওয়া যুক্তি মানতে নারাজ সমালোচকরা।
২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসার পর থেকে কেন সি আর পার্কের দুর্গাপুজোর আসতে মোদি-র ২০২৫ সাল পর্যন্ত সময় লাগল? সেই প্রশ্ন উঠছেই। আসলে শমীক ভট্টাচার্য রাজ্য সভাপতি হওয়ার পর বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে তিনি বুঝিয়েছেন, বাংলা দখল করতে হলে বাঙালির ধর্মাচরণ এবং সংস্কৃতির সঙ্গে একাত্ম হতে হবে। বিজেপি গোবলয়ের দল এই ধারণা ভেঙে চুরমার করে দিতে হবে। সেই লক্ষ্যেই সম্ভবত প্রধানমন্ত্রীর দেবী শরণ।