ফোর্ট উইলিয়ামের সেই ‘নেতাজি সেল’, এখনও জনপ্রিয় সুভাষচন্দ্রের শেষ বন্দিশালা

ফোর্ট উইলিয়ামের সেই ‘নেতাজি সেল’, এখনও জনপ্রিয় সুভাষচন্দ্রের শেষ বন্দিশালা

ইন্ডিয়া খবর/INDIA
Spread the love


অর্ণব আইচ: সেলটি বড্ড ছোট। একজন মানুষ সেখানে কোনওমতে থাকতে পারেন। নড়াচড়া করাও মুশকিল। ১৯৪০ সালের ডিসেম্বর মাস। ফোর্ট উইলিয়ামে কড়া সেনা পাহারায় এই সেলেই রাখা হয়েছিল নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে (Netaji Subhas Chandra Bose)। আর দেখতে গেলে এটাই শেষ কারাগার, যেখানে নেতাজিকে বন্দি করে রাখতে পেরেছিল ব্রিটিশ সরকার। তার পরই ভবানীপুরের বাড়ি থেকে নেতাজির অন্তর্ধান হয়। তাই ইতিহাসের দিকে থেকেও অত‌্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফোর্ট উইলিয়ামের এই ‘নেতাজি সেল’ (Netaji Cell)। নেতাজির জন্মদিনে এই সেল ঘিরে সেভাবে কোনও অনুষ্ঠান পালন করা না হলেও সেনাকর্মী ও আধিকারিকদের অনেকেই দেখে আসেন সেলটিকে। ফোর্ট উইলিয়ামে যাঁরা ভ্রমণ করেন, তাঁদের কাছেও এই সেলটি খুবই জনপ্রিয়। ফোর্ট উইলিয়াম (Fort William) তথা ডালহৌসি বারাকের অনেক কিছুর পরিবর্তন হলেও নেতাজিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর ওই সেলটি অপরিবর্তিত রেখেছে সেনাবাহিনী।

সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলে বন্দি থাকা অবস্থায়ও নেতাজির জনপ্রিয়তা ক্রমে বেড়েই চলছিল। প্রায় সারাদিনই তাঁকে ঘিরে থাকতেন ব্রিটিশ সরকারের হাতে বন্দি ভারতীয় বিপ্লবীরা। তৎকালীন সরকার বিভিন্ন কৌশল করেও নেতাজির জনপ্রিয়তা সামান‌্যও কমাতে পারেনি। তাই ব্রিটিশ সরকার নেতাজিকে এমন একটি জায়গায় রাখার পরিকল্পনা করে, যেখানে শুধু বিপ্লবীরা কেন, কেউই চাইলে তাঁর ধারেকাছে যেতে পারবেন না। উদ্দেশ‌্য, সবার কাছ থেকে তাঁকে একেবারে আলাদা করে দেওয়া (Isolation) ও তাঁর কার্যকলাপের উপর কড়া নজরদারি। তাই নেতাজিকে আলাদা করতে অন‌্য যে কোনও জেলের থেকে ব্রিটিশ সরকার সিদ্ধান্ত নেয় ফোর্ট উইলিয়ামে নিয়ে আসার।

ফোর্ট উইলিয়ামে রয়েছে ডালহৌসি বারাক, যা সেনাদের মধ্যে ‘গ‌্যারিসন ব‌্যাটালিয়ন’ বারাক নামেই পরিচত। এই বারাক আয়তনে এতটাই বড় যে, একটি ব‌্যাটালিয়ন তার ভিতর অনায়াসেই অস্ত্রশস্ত্র-সহ থাকে। এখানে কয়েকটি সেলও রয়েছে, যেগুলি মিলিটারি পুলিশ পরিচালনা করে। কিন্তু এই ডালহৌসি বারাকের একতলায় ‘নেতাজি সেল’টি সম্পূর্ণ আলাদা। ১৯৪০ সালের ডিসেম্বর মাসে পরিকল্পনা করেই নেতাজিকে ব্রিটিশ সরকার নিয়ে আসে এই বারাকে। সেলটিতে থাকতে হয় তাঁকে। কিন্তু সেল এতটাই ছোট যে, কোনওমতে থাকতে পারতেন তিনি। হাঁটাচলা করতে দেওয়া হত না তাঁকে। ওই সেলের ভিতর নড়াচড়া করাই সমস‌্যা ছিল। কেউ যাতে ওই সেলের ধারেকাছেও যেতে না পারে, তার জন‌্য ছিল সেনাবাহিনীর কড়া পাহারা।

নেতাজি তার প্রতিবাদ করেন। জানা গিয়েছে, ফোর্ট উইলিয়ামে তিনি অনশন শুরু করেন। তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকে। তাই ফোর্ট উইলিয়ামে নেতাজিকে বেশিদিন বন্দি থাকতে হয়নি। ঠিক কতদিনের জন‌্য নেতাজি বন্দি ছিলেন, তা নিয়ে এখনও ধন্দে সেনা কর্তারা। তবে স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই নেতাজিকে গৃহবন্দি করা হয়। দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরের এলগিন রোডের বাড়িতে গৃহবন্দি ছিলেন তিনি। যদিও বেশিদিনের জন‌্য নয়। এর পরের মাসেই অর্থাৎ জানুয়ারিতে এলগিন রোডের বাড়ি থেকে নেতাজির অন্তর্ধান হয়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ






Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *