সৌরাশিস লাহিড়ী: আইপিএল তার অন্তিম পর্বে ঢুকে পড়ল। আর চারটে খেলা বাকি। তারপর অষ্টাদশ আইপিএল শেষ। আজ, বৃহস্পতিবার পাঞ্জাব কিংস বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু-র প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচ দিয়ে আইপিএলের শেষ পর্ব শুরু হয়ে যাচ্ছে। এবং কোথাও গিয়ে আজকের ম্যাচে সামান্য হলেও আমি শ্রেয়স আইয়ারের পাঞ্জাবকে এগিয়ে রাখছি।
জানি, গত মঙ্গলবার জিতেশ শর্মা-ময়ঙ্ক আগরওয়াল-বিরাট কোহলির দুর্ধর্ষ ব্যাটিংয়ে লখনউ সুপার জায়ান্টসকে অবিশ্বাস্যভাবে হারিয়ে প্লে অফে প্রথম দুইয়ে জায়গা করে নিয়েছে আরসিবি। নিঃসন্দেহে সেটা ওদের বাড়তি আত্মবিশ্বাস দেবে। তা ছাড়া, প্লে অফ থেকে ওরা জশ হ্যাজেলউডকেও পেয়ে যাবে। আরসিবির দিক থেকে দেখলে, হ্যাজেলউডের যোগদানের গুরুত্ব অপরিসীম। এবার আরসিবি-র বোলিংকে যে এত ভালো দেখিয়েছে, তার সবচেয়ে বড় কারণ হ্যাজেলউড। গোটা বোলিংকে বলতে গেলে, নেতৃত্ব দিয়ে গিয়েছে ও।
সঙ্গে লিখতে হবে, আরসিবি ব্যাটিংয়ের কথাও। একমাত্র বিরাট কোহলিকে বাদ দিলে, আর কোনও তথাকথিত মহাতারকা নেই আরসিবি ব্যাটিংয়ে এবার। বরং অসম্ভব এফেক্টিভ কিছু ক্রিকেটার রয়েছে। যেমন ফিল সল্ট। যেমন অধিনায়ক রজত পাতিদার। যেমন জিতেশ শর্মা। যেমন শেফান রাদারফোর্ড-ক্রুণাল পাণ্ডিয়া। কিন্তু ওদের দু’একটা অস্বস্তির জায়গাও থাকবে। জানি না, টিম ডেভিডকে প্লে অফে আরসিবি পাবে কি না? না পেলে কিন্তু ঝঞ্ঝাট আছে। কারণ, ডেভিড লোয়ার মিডল অর্ডারে নেমে যে খেলাটা খেলে, তা চট করে সবার পক্ষে সম্ভব নয়। তা ছাড়া আরসিবি-র বাঁ হাতি পেসার যশ দয়ালের ফর্মও বিশেষ ভালো যাচ্ছে না।
এটা ঘটনা যে, পাঞ্জাবও প্লে অফে মার্কো জানসেনকে পাবে না। দক্ষিণ আফ্রিকা অলরাউন্ডার ফিরে যাবে দেশে। যুজবেন্দ্র চাহালের চোটের কী অবস্থা, সেটাও জানি না। কিন্তু তার পরেও বলব, পাঞ্জাব প্রথম থেকে এবার একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে চলছে। ট্রফি জয়ের টার্গেট নিয়ে। তাই আমি নিশ্চিত, ওদের রিজার্ভে যারা থাকবে, তারাও একই চাঁদমারি টার্গেট করে ছুটবে। এবার পাঞ্জাবের অসামান্য ক্রিকেট সফরের নেপথ্যে সবচেয়ে বড় অবদান অবশ্যই অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ারের। আইপিএল ট্রফি জেতানোর পরেও কেন যে শ্রেয়সকে ছেড়ে দিল, বলতে পারব না। তখন এটাও দেখেছিলাম শ্রেয়সের প্রাপ্য কৃতিত্ব এমন একজন নিয়ে চলে যাচ্ছে, যে অধিনায়ক কিংবা কোচ, কিছুই নয়।
অধিনায়ক হিসেবে শ্রেয়স কতটা ভালো, ওর টিমে থাকায় কতটা তফাত হয়ে যায়, সেটা এবার পাঞ্জাব আর কেকেআরের পার্থক্য দেখলেই বোঝা যাবে। পাঞ্জাব এবার প্রিয়াংশ আর্যর মতো তরুণ ব্যাটিং প্রতিভাকে তুলে এনেছে। প্রভসিমরণ সিংয়ের সঙ্গে যার জুটি ওপেনিংয়ে তোলপাড় ফেলে দিচ্ছে। এরপর জশ ইংলিস আছে। শ্রেয়স নিজে রয়েছে। টিমের কোচ রিকি পন্টিংয়ের কথাও বলতে হবে এখানে। যে নিজে সামনে সে ভাবে আসে না। প্রচারে থাকে না। কিন্তু যা করার, ঠিক করে যায়। তাই বলছি, আজ কিছুটা হলেও শ্রেয়সের পাঞ্জাব এগিয়ে। তবে যে-ই হারবে, তার সামনে একটা সুযোগ আরও থাকবে ফাইনাল খেলার। প্লে অফের প্রথম দুইয়ে শেষ করার সুবিধে তো এটাই।