সম্যক খান, মেদিনীপুর: টানা দু’দিনের বৃষ্টিতে প্লাবন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শুক্রবার জেলার বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইঞা। তাঁর নেতৃত্বে রাজ্য সরকারের এক উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল গড়বেতা, গোয়ালতোড়, চন্দ্রকোনা ও ঘাটালের প্লাবিত এলাকা ঘুরে দেখেন। দুর্গতদের হাতে তুলে হয় ত্রাণ। আসলে এসব এলাকায় ফি বছর বন্যা-যন্ত্রণা কাটাতেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান তৈরি হচ্ছে। এবারের বৃষ্টিতে সেই কাজের কোনও ক্ষতি হল কি না, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন জনতার। তবে এদিন এলাকা পরিদর্শন করে সেচমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, তার কোনও ক্ষতি হয়নি।

এই মুহূর্তে বন্যার জল অনেকটাই নেমে গিয়েছে। কিন্তু মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। সর্বস্বান্ত হয়েছেন চাষিরা। জলবন্দি এখনও জেলার প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ। রাস্তাঘাটের অংশ ভেসে যাওয়ায় বহু জায়গাতে যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। চন্দ্রকোনায় পলাশচাবড়ীতে রাস্তার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া জলের স্রোতে তলিয়ে গিয়েছেন এক সাইকেল আরোহী। পরিস্থিতি দেখে মানস ভুঁইঞা বলেছেন, ”প্রকৃতিকে কেউ চেন দিয়ে বেঁধে রাখতে পারবে না। দুর্যোগ আসবেই। কিন্তু সেই দুর্যোগ মোকাবিলা করা ও দুর্গতদের পাশে মুখ্যমন্ত্রী আছেন ও থাকবেন। জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতিটি কর্তাব্যক্তি যেভাবে ময়দানে নেমে পদক্ষেপ করেছেন, তাতে ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই কমানো গিয়েছে।” বিপদের আগেই উদ্ধার করা হয়েছে দুর্গত এলাকার মানুষজনকে। মানসবাবু এও জানিয়ে দেন, ”হঠাৎ করে এই বন্যা ক্ষতি করতে পারেনি ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজকে। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে লকগেট, সেতু থেকে শুরু করে পরিকাঠামো উন্নয়নের যে কাজ চলছে সেখানে কোনও ব্যাঘাত ঘটেনি।”
ফি বছর বর্ষার মরশুমে পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। জলযন্ত্রণা যেন সঙ্গী হয়ে উঠেছে এখানকার মানুষজনের। কেন্দ্রের কাছে বারবার দরবার করেও লাভ না হওয়ায় এবার রাজ্য সরকার নিজের অর্থে সেই প্ল্যান বাস্তবায়নের কাজে হাত দিয়েছে। ১৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সেই কাজ এগোচ্ছে। আগামী কয়েক বছর লাগবে এই কাজ সম্পূর্ণ হতে। তবে একবার তা হয়ে গেলে প্রতি বছর বন্যায় আর ভুগতে হবে না ঘাটাল ও সংলগ্ন এলাকার মানুষকে। এবারের বর্ষণ সেই কাজের ক্ষতি করতে পারেনি বলেই দাবি সেচমন্ত্রীর।