সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পহেলগাঁও হামলার জবাব দিতে ৬ মে রাত ১টা থেকে দেড়টার মধ্যে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ন’টি জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় ভারত। ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযানে চুরমার হয়ে যায় একাধিক জেহাদি তৈরির কারখানা। কিন্তু ওই অভিযানের পর প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশের কৌতুহল ছিল, প্রমাণ সংগ্রহের জন্য ছবি তুলতে সমস্যা হবে জেনেও কেন মধ্যরাতে অভিযান করল ভারত? এই ধরনের অভিযানের ‘আদর্শ সময়’ ভোর ৫টা থেকে ৬ টা। ওই সময়কে কেন অভিযানের জন্য বাছা হল না? অবশেষে এ প্রশ্নের জবাব দিলেন সেনা সর্বাধিনায়ক অনিল চৌহান।
বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লির রাজভবনে এক আলাপচারিতায় সেনা সর্বাধিনায়ক বলেন, মধ্যরাতে অভিযান করার নেপথ্যে ছিল দু’টি কারণ। প্রথমত ভারত আত্মবিশ্বাসী ছিল, যে আধুনিক প্রযুক্তিতে মধ্যরাতে ছবি তোলার ক্ষমতা ভারতীয় সেনার রয়েছে। দুই, সাধারণ নাগরিকদের ক্ষতি এড়ানোই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সেনা সর্বাধিনায়কের কথায়, ভোর সাড়ে ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে অভিযান চালানোর ক্ষেত্রে উপযুক্ত সময় ছিল। তারপরও বেছে নেওয়া হয় মধ্যরাতকেই। কেন ভোররাতে অভিযান করা হয়নি? অনিল চৌহান বলছেন, “ওটা নমাজের সময়। অনেক সাধারণ মানুষ জড়ো হন ওই সময়ে। তাই ভেবেচিন্তেয় ওই সময় অভিযান করা হয়নি।”
আসলে ভারতের উদ্দেশ্য ছিল স্পষ্ট, পাক জঙ্গিরা ভারতের নিরীহ পর্যটকদের নিশানা করলেও ভারত কোনওভাবেই সাধারণ নাগরিকদের নিশানা করবে না। ভারতের টার্গেট ছিল শুধুই জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করা। পাকিস্তান শত্রু দেশ হলেও সাধারণ নাগরিকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটাও নিশ্চিত করতে চেয়েছিল নয়াদিল্লি।
প্রসঙ্গত, ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে ২৬ নিরস্ত্রকে হত্যা করে লস্করের সঙ্গী সংগঠন টিআরএফের চার জঙ্গি। তাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যায় কাশ্মীরের স্থানীয় এক জঙ্গি। এই হামলার জবাবে ৭ মে ভোর-রাতে অপারেশন চালায় ভারত। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় পাকিস্তান ও পিওকে-র নয়টি জঙ্গিঘাঁটি। এরপর ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলির জনবহুল এলাকা এবং সেনাঘাঁটিকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় পাকিস্তান। সেই হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি প্রত্যাঘাত করে ভারত। তাতেই তছনছ হয়ে গিয়েছে পাকিস্তানের অন্তত ১১টি একধিক বায়ু সেনাঘাঁটি। জানা গিয়েছে, পর্যন্ত ভারতীয় সেনার অভিযানে নিহত হয়েছে ১০০ জনের বেশি জঙ্গি ও ৩৫-৪০ জন পাক সেনা। শেষ পর্যন্ত ইসলামাবাদের মিনতিতে সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয় নয়াদিল্লি। তবে এরপরও সন্ত্রাসে মদত দেওয়া বন্ধ করেনি পাকিস্তান।