বাবুল হক, মালদহ: ভিনরাজ্যে কাজের খোঁজে গিয়ে খুন হলেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিক। এবার বাংলা ভাষায় কথা বলার মাসুল দিলেন, ওল্ড মালদহের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের খাইরুল জামাল। তাঁর বাড়ি দিলালপুর গ্রামে। কংগ্রেস শাসিত কর্নাটকে কাজের খোঁজে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই দুষ্কৃতীরা তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে বলে অভিযোগ।
বুধবার সন্ধ্যার ওই ঘটনা ঘটে। রাতেই নিহত পরিযায়ী শ্রমিকের বাড়িতে ফোন করে ঘটনার কথা জানায় কর্নাটক পুলিশ। ঘটনার খবর পেয়েই শোকের ছায়া নেমে আসে পরিবারে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ছ’মাস আগে কর্নাটকের মাইসুরুতে নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে কাজ করতে যান তিনি। মৃতের আত্মীয় আকরামুল আলি বলেন, “ভিনরাজ্যে গিয়ে বাংলা ভাষায় কথা বললেই এই ভাবেই অত্যাচারের শিকার হতে হচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকদের। ওখানে মোবাইল চুরি করে স্থানীয় এক যুবক। সেই চোরকে ধরে ফেলে খাইরুল। লোকজন জড়ো হয়ে ওই মোবাইল চোরকে মারলেও তার বাড়ির লোক ওই যুবককে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। পরে ওই মোবাইল চোরের দল এসে খাইরুলকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করে।” পরিবারের আরও দাবি, দুষ্কৃতীরা মারার সময় বলে ‘বাঙালি হয়ে আবার দাদাগিরি? বাঙালিকে মেরে শেষ করে দে’। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ভিনরাজ্যে বাংলাভাষায় কথা বলার কারণেই খাইরুল জামালকে হত্যা করা হয়েছে।
মৃত খাইরুলের বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী তাজকেরা বিবি এবং দুই মেয়ে। বড় মেয়ে শিউলি বিবাহিত। ছোটো মেয়ে বর্তমানে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। এছাড়াও খাইরুলের পরিবারে রয়েছেন তাঁর বাবা নুরুল ইসলাম রয়েছেন। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন খাইরুল। তাঁর মৃত্যুতে অসহায় অবস্থা পরিবারের সদস্যদের। ঘটনার খবর পেয়ে মৃত শ্রমিকের বাড়িতে ছুটে যান তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের মালদহ জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ হালদার-সহ অন্যান্যরা। মৃত শ্রমিকের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন তাঁরা। পাশপাশি, এই ঘটনার কড়া নিন্দা করেন তাঁরা। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে পরিবার।