সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবার বাংলাদেশে পাসপোর্ট করতে আর লাগবে না পুলিশ ভেরিফিকেশন। এমনটাই ঘোষণা করেছেন অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। একইসঙ্গে সরকারের এই ধরনের সিদ্ধান্তগুলো জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে জেলাশাসকদের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তাঁর এই নির্দেশে পর স্বাভাবিকভাবেই নানা উঠছে। জাল পাসপোর্ট বা নথি তৈরি করা এখন খুব সহজ হয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে যদি আবেদনকারীর তথ্য পুলিশ যাচাই না করে তাহলে সহজেই যেকোনও অপরাধী কিংবা জঙ্গি বাংলাদেশের পাসপোর্ট হাতে পেয়ে যাবে। আর ওই পাসপোর্ট নিয়ে ভারতেও ঢুকে পড়বে সন্ত্রাসীরা।
জানা গিয়েছে গতকাল রবিবার ‘জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০২৫’- এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস। সেখানে বক্তব্য রাখার সময় পাসপোর্ট নিয়ে ইউনুস বলেন, “পাসপোর্ট তো আমার নাগরিক অধিকার। পাসপোর্ট একটি নাগরিক পরিচয়পত্র। এখন আইন করে দিয়েছি পাসপোর্ট করতে পুলিশের ভেরিফিকেশন লাগবে না। এগুলো লাগে না। এগুলো হয়রানি। এই হয়রানির ভূমিকা উলটে দিতে হবে।”
ইউনুসের এই নতুন আইনের কথা প্রকাশ্যে আসতেই আশঙ্কা দানা বেঁধেছে বিশেষজ্ঞদের মনে। কারণ পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের সময় আবেদনকারীর সমস্ত তথ্য যাচাই করে দেখে পুলিশ। তখনই জানা যায় আবেদনকারীর বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি মামলা আছে কি না। ওই ব্যক্তির আসল পরিচয়, ঠিকানা, কর্মক্ষেত্র, আধারকার্ড, ভোটার-প্যান কার্ডের নথিও থাকে পুলিশের কাছে। কিন্তু এবার পুলিশ যদি এইসব খতিয়ে না দেখে তাহলে জাল পাসপোর্ট তৈরি করা জলভাত হয়ে যাবে অপরাধীদের কাছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এবার জঙ্গিদের হবে বাংলাদেশ। পদ্মাপাড়ে অপরাধ ঘটিয়ে অপরাধীরা পাসপোর্ট নিয়েই সহজে পালিয়ে আসতে ভারতে।
এছাড়া এদিন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের উপরই এখন সরকারের সফলতা-ব্যর্থতা নির্ভর করছে বলে মন্তব্য করেন ইউনুস। তিনি বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নারী, শিশু ও সংখ্যালঘুদের রক্ষা সরকারের গুরুদায়িত্ব। পুরো দেশকে একটি টিম হিসেবে বিবেচনা করে কাজ করতে হবে। এমন কিছু করা যাবে না যাতে পুরো টিমের সাফল্য ব্যাহত হয়।” অন্যের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে নিজ বিবেচনায় কাজ করতে জেলাশাসকদের প্রতি আহ্বান জানান। ইউনুস বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে এই সুযোগটি পূর্ণ মাত্রায় আছে।