সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একটা সময় ভারতের রান ছিল ৩ উইকেটে ৪৩০। নিশ্চিতভাবেই আরও বড় রান করার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছিল টিম ইন্ডিয়া। কিন্তু এটাই টেস্ট ক্রিকেট। সামান্য ঢিলেমিই সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে অচিরে। ভারতীয় দলের অবস্থা কি অনেকটা তেমন?
না না, অতটা গুরুতর কিছু না হলেও সমস্যাটা কিন্তু সমস্যাই। নাহলে ৪৭১ রানে গুটিয়ে যাবে কেন ভারতের ইনিংস? এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই অতি আগ্রাসন। যা দেখাতে গিয়ে মাত্র ৪১ রানে বাকি ৭ উইকেট খোয়াতে হয়েছে টিম ইন্ডিয়াকে। যেটা এই পর্যায়ের ক্রিকেটে কখনওই কাঙ্ক্ষিত নয়। শুভমান আর পন্থ ফেরার পর রবীন্দ্র জাদেজা (১১) ছাড়া কোনও ভারতীয় ব্যাটারই দুই অঙ্কের রানে পৌঁছতে পারেননি।
অথচ প্রথম দিন যেখানে শেষ করেছিলেন, ঠিক সেখান থেকেই শুরু করেন শুভমান গিল এবং ঋষভ পন্থ। রক্ষণ সামলে দু’জনেই আক্রমণকেই বেছে নেন। ইংরেজ বোলারদের রীতিমতো শাসন করে সেঞ্চুরি হাঁকালেন টিম ইন্ডিয়ার এই উইকেটরক্ষক। শোয়েব বশিরের বলে এক হাতে বিরাট একটা ছক্কা মেরে ১৪৬ বলে শতরান পেরলেন ২৭ বছরের পন্থ। তারপর ভল্ট খেয়ে সেলিব্রেশনে মেতে ওঠেন তিনি। আইপিএলের শেষ ম্যাচে আরসিবি’র বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করেও একইভাবে উল্লাসে মেতে উঠেছিলেন পন্থ। এদিন যেন তারই ‘রিপিট টেলিকাস্ট’ দেখল ক্রিকেটবিশ্ব।
সেঞ্চুরির পর নিজের ব্যাটিং গিয়ার বদল করেন পন্থ। একেবারে তুরীয় মেজাজে অবতীর্ণ হন তিনি। বিশেষ করে শোয়েব বশিরের উপর নির্দয় ছিলেন তিনি। যদিও এর মধ্যেই ব্যক্তিগত দেড়শোর মাইলফলক স্পর্শের ৩ রান আগেই আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন গিল। পন্থের সঙ্গে ২০৯ রানের ‘ম্যামথ’ পার্টনারশিপের সমাপতন এভাবেই হয়।
তবে, ৮ বছর পর টেস্ট ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন ঘটানো করুণ নায়ারের কাছে দিনটা সুখকর হল না। অযথা তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে বেন স্টোকসের বলে আউট হন তিনি। তবে এক্ষেত্রে বলতেই হয়, অলি পপের কথা। অনবদ্য ক্যাচ নেন তিনি। এরপর ১৩৪ রানের মাথায় আউট হন পন্থও। এরপর তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে আউট হন শার্দূল ঠাকুরও। বুমরাহ, সিরাজ, কৃষ্ণ কেউই রান পাননি।
বল হাতে শুরুটা ভালো করেছিল ভারত। প্রথম ওভারের শেষ বলে ইংল্যান্ড ওপেনার জ্যাক ক্রলিকে ফেরান জশপ্রীত বুমরাহ। তবে শুরুর অ্যাডভান্টেজ নিতে পারেনি ভারত। প্রথমে বেন ডাকেটের সহজ ক্যাচ ছাড়েন রবীন্দ্র জাদেজা। সেই ডাকেট গুরুত্বপূর্ণ ৬২ রানে বোল্ড হন বুমরাহের বলে। ক্যাচ ছাড়েন যশস্বী জয়সওয়ালও। এক্ষেত্রে জীবনদান পান অলি পোপ। সেই পোপ এদিন সেঞ্চুরি হাঁকালেন মাত্র ১২৫ বলে। উইকেটের অন্য প্রান্তে যখন মনে হচ্ছিল জো রুট থিতু হয়ে গিয়েছেন, তখনই তিনি ব্যক্তিগত ২৮ রানে আউট হন সেই বুমরাহের বলেই। তিনি ছাড়া আর আর কোনও ভারতীয় বোলারই সেভাগে দাগ কাটতে পারেননি। তবে দিনের শেষ ওভারে বুমরাহের বাউন্সার পুল করতে গিয়ে আউট হন হ্যারি ব্রুক। ঘটনাচক্রে সেটা নো বল ছিল। দ্বিতীয় দিনের শেষে ইংল্যান্ড ৩ উইকেটে ২০৯। পোপের সঙ্গে ক্রিজে রয়েছেন ব্রুক। ইংল্যান্ডকে রুখতে তৃতীয় দিন বাকি বোলারদেরও ছন্দে ফিরতেই হবে।