গোবিন্দ রায়: শূন্যপদ থাকলেও নিয়োগপত্র দেওয়া হচ্ছে না কেন? এই প্রশ্নে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করল কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের এজলাসে একটি মামলার শুনানিতে এসএসসি-র কাছে জানতে চায় আদালত।
মৌসুমী মণ্ডল, ২০১৬ সালের নবম-দশম শ্রেণির কর্মশিক্ষা ও শারীরিক শিক্ষা এবং উচ্চ প্রাথমিকে উভয় নিয়োগ প্রক্রিয়াতেই সফল হয়েছিলেন। নবম-দশমের নিয়োগ আগেই হওয়ায় সেই পদেই শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি। কিন্তু ২০২২ সালে কর্মশিক্ষা ও শারীরিক শিক্ষার জন্য তৈরি হওয়া সুপার নিউমেরারি পদের জন্যও তাঁকে ডাকা হয়। যেহেতু তিনি তখন কর্মরত, তাই সেই পদে যোগ দেননি। বর্তমানে সুপারনিউমারারি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলাটি বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে বিচারাধীন। যদিও ওই নিয়োগের বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ছাড়পত্র দিয়েছে, তবু নিয়োগ কার্যত আটকে আইনি জটে। এর মধ্যেই, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মৌসুমীর নবম-দশমের চাকরি চলে যায়। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অনিয়মের অভিযোগ না থাকায়, আপার প্রাইমারিতে তাঁকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য এসএসসি-র কাছে আবেদন করেন মৌসুমী। দীর্ঘদিন কোনও উত্তর না পেয়ে অবশেষে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি।
বিচারপতি ভট্টাচার্যের এজলাসে, মৌসুমীর আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরী জানান, “এসএসসি-র গাফিলতির জন্যই তাঁর মক্কেলের চাকরি চলে গিয়েছে। ফলে আপার প্রাইমারিতে কর্মশিক্ষার শূন্যপদে তাঁকে নিয়োগ করাই যুক্তিসঙ্গত। তাঁর দাবির পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের একটি পর্যবেক্ষণের (প্যারা ৪৭) কথাও তুলে ধরেন তিনি।”
এসএসসি আইনজীবী জানান, মামলার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ রয়েছে এবং প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২০ সালেই। তখনই বিচারপতি জানতে চান, “প্যানেল ২০২০ সালে শেষ হয়ে গেলে ২০২২ সালের নভেম্বরে কাউন্সেলিং হল কী করে?” এই প্রেক্ষিতে, আগামী ১৪ জুলাইয়ের মধ্যে হলফনামা দিয়ে কমিশনকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। তাঁর প্রশ্ন, নিয়োগ প্রক্রিয়া যদি এখনও চলতে থাকে এবং শূন্যপদ থাকে, তা হলে মৌসুমী মণ্ডলকে নিয়োগপত্র না দেওয়ার কারণ কী?