নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা: ঘরে নিত্য অশান্তি, বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি, সেইসঙ্গে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ। শ্বশুরের লাগাতার অত্যাচারে ক্ষিপ্ত হয়ে ভয়ংকর ঘটনা ঘটিয়ে ফেললেন যুবতী। শোওয়ার ঘরে টেনে নিয়ে গিয়ে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করতেই শ্বশুরের গোপনাঙ্গে ব্লেডের কোপ বসিয়ে দিলেন তিনি! যদিও কোনওক্রমে প্রাণে বেঁচেছেন শ্বশুর। আপাতত বাংলাদেশের দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। শনিবার রাতে উপজেলার ৩ নং সিংড়া ইউনিয়নের বিরাহীমপুর গুচ্ছ গ্রামের ঘটনায় পুলিশ ওই যুবতীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আটক করে নিয়ে গিয়েছে।
ঘটনা সম্পর্কে যৌনাঙ্গে আঘাত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শাহজামালের বড় ছেলে মনির প্রামাণিকের স্ত্রী, অভিযুক্ত ফতেমা বেগম জানান, প্রায় ১৫ বছরে আগে মনিরের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। সেই থেকে একই ইউনিয়নের বারোপাইকার গড় এলাকায় স্বামীর বাড়িতে ছিলেন তাঁরা। মনির পেশায় একজন শ্রমিক। পরে তাঁর দু-তিন লক্ষ টাকা ঋণ হয়। দুমাস আগে মনির নিজের বাড়ি বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করেন। পরে শাহজামাল ছেলে, বউমাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং রান্নাঘরের একপাশে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। সেসময় স্বামী মনির তিন সন্তান-সহ স্ত্রী ফতেমাকে বাড়িতে রেখে কাজের জন্য অন্য জেলায় চলে যান।
এরপর থেকেই শাশুড়ি ও শ্বশুরের সঙ্গে থাকার জায়গা নিয়ে অশান্তি শুরু হয় ফতেমার। তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হত তীব্র। অভিযোগ, কখনও কখনও ফতেমাকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বলতেন তাঁরা। এছাড়া শ্বশুর প্রায়ই তার কাছে গিয়ে জোর করে নিজের যৌন লালসা মেটাতেন। শনিবার রাতে বাড়িতে কেউ ছিলেন না। এসময় শ্বশুর শাহজামাল অকথ্য ভাষায় ফতেমাকে গালিগালাজ করতে থাকেন। তাঁর অভিযোগ অনুযায়ী, এরপর তাঁকে টেনে শোওয়ার ঘরে নিয়ে যান এবং যৌন নির্যাতন শুরু করেন। সেসময় আগে থেকে নিজের কাছে রাখা ব্লেড দিয়ে শ্বশুরের পুরুষাঙ্গ কেটে দেন তিনি! পরে শাহজামালের চিৎকারে লোকজন ওই ঘরে গিয়ে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
এবিষয়ে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আহসান হাবিব বলেন, ”শনিবার রাত পৌনে ১০টায় আহত শাহজামাল প্রামাণিককে তার পরিবারের লোকজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসেছেন। তার পুরুষাঙ্গের গোড়ার দিকের প্রায় ৪ সেন্টিমিটার অংশ কেটে গেছে। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। পুরুষাঙ্গে আটটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। তিনি এখন পর্যবেক্ষণে আছেন।” ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, শাহ জামাল প্রামাণিকের পুরুষাঙ্গ কেটে দেওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আহত ব্যক্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।