স্টাফ রিপোর্টার: বুথস্তরে সাংগঠনিক দুর্বলতাই সবচেয়ে বড় চিন্তার কারণ বঙ্গ বিজেপির। তাই ছাব্বিশের ভোটের আগে নিচুতলায় দুর্বলতা এবং নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব যতটা সম্ভব দ্রুত কাটিয়ে উঠতে হবে। বঙ্গ বিজেপির নির্বাচনী পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব নেওয়ার পর শুক্রবার দলের প্রথম বৈঠকে রাজ্য নেতৃত্বকে এমনই বার্তা দিয়েছেন ভূপেন্দ্র যাদব। বঙ্গ বিজেপিতে এই মুহূর্তে আদি-নব্য দ্বন্দ্ব সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতাদের। রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনশলও বলেছিলেন সমস্ত স্তরের কমিটিতে ৫০ শতাংশ পুরনোদেরও রাখতে হবে। এদিনের বৈঠকেও ছিলেন বনশল। এছাড়াও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার, রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য, কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য ছাড়াও সতীশ ধন্দ-সহ চারজন সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন।
সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে এসে দলে নতুন ও পুরনোদের মধ্যে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে দলের সকলকে সক্রিয় করে তুলে নির্বাচনী কাজে নামানোর নির্দেশ দিয়েছেন ভূপেন্দ্র যাদব। পাশাপাশি বুথ কমিটির কাজ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি জানতে চান, বাকি থাকা বুথগুলিতে কবে কমিটি তৈরি হবে। এলাকাভিত্তিক বিজেপির সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য নিয়েছেন ভূপেন্দ্র-বিপ্লবরা। পাশাপাশি চলতি মাসের শেষের দিক থেকেই রাজ্যজুড়ে একাধিক কর্মসূচি নিয়ে পথে নামার সিদ্ধান্ত হয়েছে এদিনের বৈঠকে। জেলায় জেলায় বড় কর্মসূচির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সূত্রের খবর, কালীপুজোর আগেই অবশ্য নতুন রাজ্য কমিটিও ঘোষণা হয়ে যাবে। সাংগঠনিক রদবদল বা নতুন কমিটির কোনও নেতিবাচক প্রভাব যাতে দলের নির্বাচনী ক্ষেত্রে না পড়ে সেটাও নজরে রাখা হচ্ছে। নির্বাচনকে মাথায় রেখেই সাংগঠনিক রদবদল করা হবে।
বছর ঘুরলেই বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। বঙ্গ বিজেপির নির্বাচনী পর্যবেক্ষক করা হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদবকে। সহকারী নির্বাচনী পর্যবেক্ষক করা হয়েছে ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেবকে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর তাঁদের নাম ঘোষণা করা হয়। নাম ঘোষণার পর শুক্রবারই প্রথম কলকাতায় এসে বৈঠক করেন ভূপেন্দ্র এবং বিপ্লব দেব। এদিন কলকাতা বিমানবন্দরে তাঁদের স্বাগত জানান রাজ্য বিজেপির সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক, পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, রাজ্যনেতা উমাশংকর ঘোষদস্তিদার।
দুর্গাপুজো মিটতেই ছাব্বিশের ভোটের রণকৌশল নিয়েই মূলত শুক্রবার বৈঠক হয়েছে। কোন কোন ইস্যুতে কী কর্মসূচি নেওয়া হবে তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে এই বৈঠকে। এসআইআর নিয়ে দল কী পন্থা অবলম্বন করবে তা নিয়েও নির্দিষ্ট কিছু গাইড লাইন দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। পাশাপাশি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা, নির্বাচন কমিশনের উপর এ রাজ্যের শাসকদলের কতটা প্রভাব তা নিয়েও বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়েছেন পর্যবেক্ষকরা। এদিন শমীক ভট্টাচার্যর সঙ্গেও আলাদা করে কথা বলেছেন ভূপেন্দ্র যাদব।