অভিরূপ দাস: ২৩ বছরের প্রাণচঞ্চল যুবক। মোটরবাইক দুর্ঘটনায় মাথায় ভয়াবহ চোট পেয়েছিলেন। ভর্তি করতে হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। চিকিৎসকদের হাজারও চেষ্টা সত্ত্বেও লাভ হয়নি। প্রাণশক্তি খুইয়ে কোমায় চলে যায় তরতাজা যুবক। ডাক্তারবাবুরা জানিয়েছেন, সবরকম চিকিৎসার পরেও কোনও উন্নতি হয়নি। অচেতন হয়ে আর জ্ঞান ফেরেনি তার। গত ৩০ মে গভীর রাতে এসএসকেএম হাসপাতালে ব্রেন ডেথ ঘোষণা করা হয় যুবকের। পরিবারের তরতাজা এক প্রাণ হারানোর এই বিষন্নতার মাঝেও সামাজিক কর্তব্যবোধের অনন্য নজির গড়লেন হাওড়ার পুষ্কর পালের পরিবার।
মরণোত্তর অঙ্গদানের জন্য সম্মতি দেন তারা। ওই যুবকের দান করা অঙ্গে নবজীবন পেলেন তিন জন রোগী। যুবকের পরিবারের এমন সিদ্ধান্তে কুর্ণিশ জানিয়েছে ওই তিন পরিবার। গত ২৯ মে ভয়াবহ মোটরবাইক দুর্ঘটনার মুখে পড়ে পুষ্কর। রাতে মোটরবাইকে করে দুই বন্ধুকে বাড়িতে পৌঁছতে যাচ্ছিলেন ওই যুবক। হাওড়ার আমতা (দুই) এলাকার নারিতগাজিপুর এলাকায় একটি লরিকে সাইড দিতে গিয়ে আচমকাই পিছলে যায় মোটরবাইকের চাকা। মাথায় ভয়াবহ চোট পান পুষ্কর।
পুষ্করের বন্ধু স্বদেশ পাল জানিয়েছেন, “খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছই। প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় আমতা গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখান থেকে এসএসকেএম। ৩০ তারিখ গভীর রাতে এসএসকেএমেই ব্রেন ডেথ।” পুষ্করের একটি কিডনি কমান্ড হাসপাতালে ৫২ বছরের এক মহিলার দেহে প্রতিস্থাপিত হয়েছে। অন্য কিডনিটি এসএসকেএম হাসপাতালে ৩৫ বছরের এক মহিলার দেহে প্রতিস্থাপিত হয়েছে। অন্যদিকে পুষ্করের লিভার পেয়েছেন ৪৭ বছরের এক মহিলা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, সফল প্রতিস্থাপনের পর আপাতত স্থিতিশীল রয়েছেন তিন গ্রহীতা।