নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: সংঘাত, তিক্ততা, অভিমান অতীত! বিজেপির ‘বাংলা বিরোধী’ নীতির বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়াইয়ে মহুয়া মৈত্র ও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়! দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের দলপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনেই ‘দিল্লি দরবারে’র বিরুদ্ধে একযোগে ময়দানে নেমেছেন কৃষ্ণনগর ও শ্রীরামপুরের সাংসদ। সোমবার পার্লামেন্টের বাইরে একসারিতে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা যায় দু’জনকে।
কয়েকদিনে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষীদের উপর একের পর অত্যাচার হয়েছে বলে অভিযোগ তুলছে তৃণমূল। যা নিয়ে আজ সোমবার সংসদের বাইরে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখান দলের সাংসদরা। ছিলেন শতাব্দী রায়, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, সাগরিক ঘোষ-সহ একাধিক তৃণমূল সাংসদ। সেখানেই কার্যত পাশাপাশি দাঁড়িয়ে বাংলার ‘অপমানে’র বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে দেখা গেল কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মহুয়া মৈত্রকে। বুঝিয়ে দিলেন, ব্যক্তিগত সংঘাত যতই থাকুক না কেন, দলের স্বার্থে একজোট হয়েই লড়াইয়ে দুই সাংসদ।
বলে রাখা প্রয়োজন, একাধিক ইস্যুতে শ্রীরামপুরের তৃণমূলের সাংসদ কল্যাণ বন্দোপাধ্যায় এবং কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদকে মহুয়া মৈত্রের মধ্যে সংঘাত। তা নিয়ে উত্তাল হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। কখনও সোশ্যাল মিডিয়ায় তো আবার কখনও মহুয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি তোপ দেগেছেন কল্যাণ। এমনকী, মহুয়াও ‘নারী বিদ্বেষ’ নিয়ে নাম না করে শ্রীরামপুরের সাংসদকে ঠেস দিতে ছাড়েননি। অনেক সময় শালীনতার সীমা ছাড়িয়েছে তরজা। সম্প্রতি সংসদে মুখ্য সচেতক বা চিফ হুইপ পদে ইস্তফা দেন কল্যাণ। সেদিনও প্রকাশ্যে মহুয়াকে কটাক্ষ করেন।
দু’জনের মধ্যে সংঘাত যেভাবে অন্যদিকে মোড় নেয়, তা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজর এড়িয়ে যায়নি। যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত। এমনকী বৈঠক হয় ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। শেষে কিছুটা ‘অনুতপ্ত’ শ্রীরামপুরের চার বারের সাংসদ। এরপরেই বাংলা-বাংলাভাষা ইস্যুতে এদিন সংসদের বাইরে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মহুয়া মৈত্রকে একসঙ্গেই সরব হতে দেখা গেল। ইতিমধ্যে সেই ছবি সামনে এসেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, কল্যাণ এবং মহুয়া ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুপাশে দাঁড়িয়ে আছেন। দুজনের হাতেই রয়েছে প্ল্যাকার্ড। যেখানে লেখা, ‘বাংলার অপমান মানছি না, মানব না।’