দুলাল দে: বুধবার ডুরান্ডের সেমিফাইনালে ইস্টবেঙ্গলের প্রধান প্রতিপক্ষ ডায়মন্ডহারবার না কি খোদ ইস্টবেঙ্গল?
কাগজে কলমে প্রতিপক্ষ হয়তো ডায়মন্ডহারবার। কিন্তু ইতিহাস বলছে, অতীতে এরকম বহুবার হয়েছে, ডার্বিতে প্রতিপক্ষ মোহনবাগানকে উড়িয়ে দিয়ে ঠিক পরের ম্যাচেই ভাঙা শামুকে পা কেটেছে লাল-হলুদের। বুধবার যুবভারতীতে প্রতিপক্ষ ডায়মন্ডহারবার সে অর্থে কিছুতেই পচা শামুক নয়। তবে ধারে-ভারে ইস্টবেঙ্গলের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে, এটা তো মানতেই হবে। কিন্তু ডার্বিতে যেভাবে অস্কার ব্রুজোর ছেলেরা প্রথম মিনিট থেকে যেভাবে সব কিছু উজাড় করে দিয়ে ঝাঁপিয়েছে, তাতে মাঝের দু’দিন বাদ দিয়ে ফের সেই একই পর্যায়ের পারফরম্যান্স ডায়মন্ডহারবারের বিরুদ্ধে তুলে ধরা কি সম্ভব? মানসিক ভাবে যে আগ্রাসন মোহনবাগানের বিরুদ্ধে দেখিয়েছেন মিগুয়েলরা, সেই একই আগ্রাসন কি ডায়মন্ডহারবারের বিরুদ্ধেও দেখানো সম্ভব?
সেমিফাইনাল ম্যাচের আগে লাল-হলুদ শিবিরে এখন এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। ম্যাচের ফলে হার-জিত থাকতেই পারে। কিন্তু প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানের বিরুদ্ধে যেভাবে আক্রমণের রোলার চালানো সম্ভব হয়েছে, তাতে অপেক্ষাকৃত দুর্বল ডায়মন্ডহারবারের বিরুদ্ধে ফুটবলররা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের শিকার হবেন না তো?
এই নিয়ে পর পর দু’বছর ইস্টবেঙ্গল কোচের পদে আসীন অস্কার ব্রুজো। ফলে ইস্টবেঙ্গলের অতীত ইতিহাস সম্পর্কে কিছু তো জেনেছেন। আর সেই ধারণা থেকেই এদিন সকালে সাংবাদিক সম্মেলনে বললেন, “এটা তো ঠিক, ডার্বির পর ফুটবলাররা শুধুই শারীরিকভাবে ক্লান্ত নয়। মানসিকভাবেও ক্লান্ত। সেদিন সব কিছু উজাড় করে দিয়েছে ফুটলাররা। ডার্বির পরের দিন তাই ফুটবলারদের পুরোপুরি বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবারও একদম হাল্কা প্র্যাকটিস। ফুটবলারদের বলেছি, যতটা সম্ভব মানসিকভাবে রিল্যাক্স থাকতে। কারণ, ডায়মন্ডহারবার ম্যাচের আগে শারীরিক এবং মানসিকভাবে আবার আগের জায়গায় দ্রুত চলে আসতে হবে।”
খেলার ফল অন্যরকম হতেই পারে। কিন্তু ডার্বির দিন যেভাবে ফুটবলাররা জেতার উদগ্র বাসনা নিয়ে লড়াই করেছে, ফুটবলারদের এই আচরণটাই ভাল লেগেছে অস্কার ব্রুজোর। আর সেই কারণেই এদিন বললেন, “ফুটবলারদের যে জেতার খিদে, সেটাই সবচেয়ে ভাল দিক। ডার্বির দিন জেতার সেই খিদেটা ছিল। আবার ডায়মন্ডহারবার ম্যাচের আগে সেই খিদেটা তৈরি করতে হবে। ডার্বি জেতায় যদি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস জেতার খিদে নষ্ট করে দেয়, তাহলে মুশকিল। সেই কারণেই ফুটবলারদের রিল্যাক্সে রাখা হয়েছে, যাতে ফের খিদে তৈরি হয়।”
সোমবার প্র্যাকটিসে এসেছিলেন হামিদ। যদিও চোট থাকার জন্য অনুশীলন করেননি। তবে অস্কারের চিন্তা রয়েছে অন্য জায়গায়। দুই উইংব্যাক, মিগুয়েল, দিয়ামান্তাকোস সহ দলের ৬ জন হলুদ কার্ড দেখে বসে আছেন। এদের মধ্যে কেউ ফের কার্ড দেখলে ফাইনাল খেলার সুযোগ পাবেন না। এক্ষেত্রে ইস্টবেঙ্গল কোচের যুক্তি হল, “এখন সেরাটা দিয়ে আগে সেমিফাইনালে ডায়মন্ডহারবারকে হারাতে হবে। তারপর ফাইনালে উঠলে দেখা যাবে।”
তবে অস্কার ব্রুজো বাস্তবকে অস্বীকার করলেন না। বলেন, “এটা তো ঠিক যে, ম্যাচের আগে আমরা ফেভারিট। তাই পুরো চাপটা আমাদের উপরেই বেশি থাকবে। ওরাও ভাল দল মানছি। আমরাও ভাল দল না হলে এই জায়গায় আসতাম না। তবে ডায়মন্ডহারবারের কোচ খুবই অভিজ্ঞ। ফলে ম্যাচটা কিন্তু আমাদের জন্য খুব সহজ হবে না।”