সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্ষমতায় ফিরে রুশ নীতি বদলে ফেলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বেনজির ‘ধুন্ধুমার’দেখে স্তম্ভিত বিশ্ব। যেভাবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দিকে ঝুঁকেছেন ট্রাম্প তাতে শঙ্কায় ইউরোপ। বড় প্রশ্নের মুখে ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ। দুই রাষ্ট্রনেতার এই ‘অভিসারে’র আবহে এবার মস্কোয় পা রাখতে চলেছেন ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি। ইউক্রেন যুদ্ধের অঙ্কের উত্তর কি খুঁজে পাবেন তিনি।
রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক বরাবরই ভালো। একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন পুতিন। ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তির পথে ফিরতে ‘বন্ধু’ মোদির পরামর্শ চেয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, জেলেনস্কির কাছেও নমো ছিলেন ‘শান্তির দূত’। একাধিকবার দুদেশকে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পথ খোঁজার পরামর্শ দিয়েছে দিল্লি। কিন্তু এখন ট্রাম্প আসরে নামায় বদলে গিয়েছে সমস্ত সমীকরণ। হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কির সঙ্গে তুমুল ঝামেলার পর ইউক্রেনের সামরিক সাহায্য বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। যা দেখে এখন পর্দার আড়ালে মুচকি হাসছেন পুতিন। সূত্রের খবর, এই জটিল পরিস্থিতিতে আগামী ৭ মার্চ অর্থাৎ শুক্রবার রাশিয়া সফরে যাবেন বিক্রম মিসরি।
জানা গিয়েছে, দুদেশের বন্ধুত্ব ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ঝালিয়ে নিতে মস্কোয় পা রাখবেন বিদেশ সচিব। এছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্য, আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন তিনি। রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ও প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গেও বৈঠকে বসার সম্ভাবনা রয়েছে তাঁর। মনে করা হচ্ছে, এই সফরে ইউক্রেন নিয়েও আলোচনা করতে পারেন বিক্রম মিসরি।
বিশ্লেষকদের মতে, দ্বিতীয়বার মসনদে ফেরা ট্রাম্প যেন আরও বেশি ‘খামখেয়ালি’ও! যেভাবে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করলেন তিনি, মেজাজ হারালেন, তাতে কার্যতই অবাক অনেকে। হঠাৎই যেন রাশিয়ার দিকে সরে গিয়েছে আমেরিকা! এভাবে বদলে যাওয়া সমীকরণের মধ্যে ট্রাম্প ভারত-চিনের মধ্যে আচমকাই বেজিংকে বেছে নিয়ে বৈঠক করতে বসলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আর তাই ট্রাম্পের সমান্তরালে আরও একটি ‘ব্লক’ তৈরি করে রাখতে চাইছে নয়াদিল্লি।
এদিকে, চিনের সঙ্গে আবার সম্পর্ক রাশিয়ারও। তাই ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী ভারত। তাদের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও কৌশলগত সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে আমেরিকার উপরে অতিরিক্ত নির্ভরতা কমানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। পাশাপাশি রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ না করেও ইউক্রেনের বিষয়েও সাবধানে পা ফেলতে চাইছে কেন্দ্র। অর্থাৎ সবদিক বজায় রেখে বর্তমান পরিস্থিতিতে এগনোই লক্ষ্য দিল্লির।