ট্রাম্পের রোষেও অনড়! চাপের মুখে মেরুদণ্ড সোজা রেখে দৃষ্টান্ত গড়ল হার্ভার্ড

ট্রাম্পের রোষেও অনড়! চাপের মুখে মেরুদণ্ড সোজা রেখে দৃষ্টান্ত গড়ল হার্ভার্ড

ইন্ডিয়া খবর/INDIA
Spread the love


ট্রাম্প সরকারের রোষে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়! মার্কিন প্রশাসনের জারি করা দশ দফা নির্দেশনামা মানতে অগ্রাহ্য করায় বন্ধ হয়েছে অনুদান।

প্যালেস্টাইনে হামলার প্রতিবাদে আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইজরায়েল-বিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়– সহ্য হয়নি ইজরায়েল-বান্ধব ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ইহুদি বিদ্বেষের অভিযোগ তুলে প্রশাসন বেশ কিছু কঠোর নির্দেশ জারি করে। একই সঙ্গে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে দশ দফা নির্দেশনামা পাঠানো হয়। যা পত্রপাঠ খারিজ করেছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এই ধরনের সরকারি হস্তক্ষেপ তারা মানতে নারাজ।

ব্যস, আর যায় কোথায়! বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০ কোটির অনুদান বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। শুধু তা-ই নয়, শিক্ষা দপ্তরের তরফে নোটিস দিয়ে বহু বিজ্ঞানী ও গবেষককে প্রকল্পের কাজ বন্ধ করতে বলা হয়েছে। এতে নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প যেমন থমকে যাবে, একই সঙ্গে বহু গবেষক, শিক্ষাকর্মী ও বৃত্তি-পাওয়া-পড়ুয়া আর্থিক সমস্যায় পড়বেন। মার্কিন নিয়মে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে ‘কর ছাড়’ দেওয়া হয়। মূলত জনস্বার্থে কাজ করা প্রতিষ্ঠানই এই বিশেষ তকমা পায়। এই প্রতিষ্ঠানগুলিকে আয়কর দিতে হয় না। এবার হার্ভার্ডের ক্ষেত্রে তা বন্ধও করা হতে পারে। সেই সঙ্গে ঐতিহ্যশালী বিশ্ববিদ্যালয়কে স্রেফ রাজনৈতিক সংগঠন বলে বিবেচনা করে হার্ভার্ডের উপর নতুন করে কর বসানো হতে পারে। একই সঙ্গে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করার অনুমতি হারাতে পারে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে। অনেক পড়ুয়াকে দেশছাড়া করাও হয়েছে। কিন্তু তাতেও দমতে নারাজ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়।

এর আগে ট্রাম্প প্রশাসনের চাপের কাছে নতিস্বীকার করে কিছু শর্ত মেনে নিয়েছিল কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি, কর্নেল ইউনিভার্সিটি, নর্থ-ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি অনুদান আটকে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। প্রায় সমস্ত প্রধান উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানই তাদের নজরে রয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ-কেউ হয়তো প্রশাসনের নির্দেশ মেনেও নেবে।

কিন্তু এখানেই অনন্য হার্ভার্ড। তাদের অবস্থান, যে-দলই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কী পড়ানো হবে, কাকে ভর্তি নেওয়া হবে, কাকে নিয়োগ করা হবে, কী-কী বিষয় থাকবে, তা কোনও সরকার ঠিক করে দিতে পারে না। এখানেই চাপের মুখে মেরুদণ্ড সোজা রেখে দৃঢ় কণ্ঠে প্রতিবাদের দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে হার্ভার্ড।

যা অন্যান্য উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ‘আদর্শ’ হওয়া উচিত। শিক্ষাক্ষেত্রে স্বাধীনতা-হরণের সরকারি উদ্যোগ এভাবেই প্রতিহত করা উচিত। শিক্ষার্থীরা যাতে বৌদ্ধিক অনুসন্ধান, তীক্ষ্ণ বিতর্ক ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার পরিবেশ থেকে উপকৃত হতে পারে তা-ও নিশ্চিত করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তব্য। তাহলেই ‘প্রকৃত’ নাগরিক সত্তা তৈরি হবে, প্রশ্ন করার সাহস আসবে। ক্ষমতার ভরকেন্দ্রে থাকা মানুষের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারবে যুবসমাজ। যা গণতন্ত্রের পক্ষেও অত্যন্ত জরুরি।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *