বিদেশ থেকে পড়ুয়া আনার বিশেষ অধিকার হারাতে চলেছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়?
ট্রাম্পের এই অপচেষ্টা সফল হবে কি?
সম্প্রতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সচিব ক্রিস্টি নোয়েম এক্স হ্যান্ডলে জানিয়েছেন– হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ইহুদি-বিদ্বেষ এবং চিনা কমিউনিস্ট পার্টির আধিপত্য বাড়াবাড়ির জায়গায় পৌঁছেছে। এর নেপথ্যে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষর প্রচ্ছন্ন সমর্থন স্পষ্ট। চড়া মাইনে নিয়ে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় বিদেশ থেকে পড়ুয়া নিয়ে আসছে। সাধারণভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিন্তু এইভাবে ছাত্র নিয়ে আসার অধিকার নেই। এই বিশেষ অধিকার হার্ভার্ডকে দেওয়া হয়েছে। এবং তারই প্রেক্ষিতে হার্ভার্ডকে বলা হয়েছিল, ক্যাম্পাসের
পরিবেশ সংশোধন ও পরিবর্তন করতে। হার্ভার্ড সেই নির্দেশ অমান্য করে এই বিশেষ অধিকারের সুযোগ হারাল।
এবং তার ফলে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় হারাতে চলেছে বিদেশি পড়ুয়া এবং এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিদেশি গবেষকদের নিয়ে আসার শংসাপত্র। এতটা লেখার পরেও ক্রিস্টি নোয়েম মনে করলেন না যথেষ্ট বলা হয়েছে। তিনি আরও পা বাড়িয়ে হাঁকিয়ে খেলেছেন এই ভাষায়: আমেরিকার অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যেন হার্ভার্ডের উপরে এই নিষেধাজ্ঞাকে তাদের প্রতিও একটি সতর্কবার্তা বলে গ্রহণ করে।
এই বার্তা এবং অশনিসংকেতের আপাত দাতা নোয়েম তো নিমিত্ত মাত্র। এই বার্তার পিছনে যাঁর কণ্ঠস্বর ও পরাক্রম বিরাজ করছে, তিনি যে স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, এ-কথা জেনেও কিন্তু কেঁপে ওঠেনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাব ও প্রতিপত্তি। মুহূর্তে প্রতিবাদ করেছেন হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান এম. গার্বার প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে তাল ঠুকে ‘বেআইনি’ এবং ‘অপ্রয়োজনীয়’ বলে। গার্বার স্পষ্ট জানিয়েছেন, তঁারা আদালতে অভিযোগ করেছেন। এবং আদালত প্রথম পদক্ষেপেই প্রশাসনের এই নিষেধাজ্ঞার উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে।
এই বার্তার সঙ্গে গার্বার কিছু এমন কথা যুক্ত করেছেন, যা বিশেষ অনুধাবনযোগ্য। তিনি বলেছেন, এ-বছর ১৪০টি দেশ থেকে পড়ুয়ারা এসেছেন। এই বিদেশি পড়ুয়াদের বাদ দিলে হার্ভার্ড হার্ভার্ড-ই নয়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের কলমের একটি খেঁাচায় হার্ভার্ড হারাতে বাধ্য হবে তার হার্ভার্ডত্ত্ব, তা তো হতে পারে না। হার্ভার্ড থাকবে হার্ভার্ডেই। গার্বারের এই প্রতিবাদ ও আশ্বাসবাণীর সঙ্গে-সঙ্গেই প্রায় ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার উপর ম্যাসাচুসেট্স প্রাদেশিক আদালতের বিচারপতি অ্যালিসন বারোজ-ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই নিষেধাজ্ঞার উপর স্থগিতাদেশ জারি করেন।
ট্রাম্প প্রশাসন যতই চেষ্টা চালাক, গণতন্ত্রবিরোধী নিষেধাজ্ঞা আনতে পারবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের পাশে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ সবসময় থাকবে, পরিস্থিতি যাই হোক না কেন। সম্ভবত বিচারপতিরাও থাকবেন এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গেই।