নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের বীভৎসতা ইংরেজের নিষ্ঠুর শোষক চেহারাকে সকলের সামনে উদোম করে দেয়। আর এই বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রথম যিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কিন্তু সেই মানুষটিরই কোনও মূর্তি নেই জালিয়ানওয়ালাবাগে। ভবিষ্যতে বসানোর পরিকল্পনাও নেই। তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নের জবাবে বৃহস্পতিবার জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। এরপরই সংসদ ভবনের বাইরে নিজের ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। জানালেন, বিজেপি কত বাংলাবিরোধী সেটাই আবারও স্পষ্ট হয়ে গেল।
এদিন সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালের সঙ্গে কথা বলার সময় ঋতব্রত বলেন, ”আমরা তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রকের কাছে জানতে চেয়েছিলাম জালিয়ানওয়ালাবাগের যে স্মৃতিসৌধ রয়েছে সেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোনও মূর্তি আছে কিনা। এবং না থাকলে সেই মূর্তি বসানোর কোনও পরিকল্পনা আছে কিনা। ওরা জানিয়ে দিয়েছে নেই। এই উত্তরে আমরা একেবারেই সন্তুষ্ট নই।”
পরে তিনি বলেন, ”১৯১৫ সালে রবীন্দ্রনাথকে নাইটহুড দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের পর তিনি এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করেননি। ওই বর্বরোচিত আক্রমণের বিরুদ্ধে তিনি সরব হয়েছিলেন। একটি চিঠি লিখেছিলেন। পৃথিবীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই চিঠি পড়ানো হয়। অত্যন্ত হৃদয়স্পর্শী ভাষায় লেখা সেই পত্রে তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন কেন নাইটহুড ত্যাগ করতে চাইছেন।” একথা স্মরণ করিয়ে ঋতব্রতর দাবি, ”জালিয়ানওয়ালাবাগে অবিলম্বে রবীন্দ্রনাথের মূর্তি রাখা উচিত। এবং যে চিঠি লিখে তিনি নাইটহুড ত্যাগ করেছিলেন সেটি প্রদর্শিত করা উচিত।”
তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে এই দাবি তোলার পাশাপাশি কেন্দ্রের মোদি সরকারকে কাঠগড়ায় তোলেন তিনি। বলেন, ”আসলে বিজেপি একটা বাংলাবিরোধী, বাঙালিবিরোধী শক্তি। দেশে বাংলা ভাষাভাষী মানুষের উপরে আক্রমণ চলছে। আমরা দেখেছি উত্তরপ্রদেশের পাঠ্যক্রম থেকে যোগী আদিত্যনাথরা রবীন্দ্রনাথকে বাদ দিয়েছেন। এর মধ্যেই জালিয়ানওয়ালাবাগে রবীন্দ্রনাথের মূর্তি বসানো নিয়ে যেভাবে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে তা বিজেপি কত বাংলা বিরোধী সেটাই আবারও স্পষ্ট করে দিল।”