সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: নিজের জন্মদিনের কেক কেনার জন্য সৎ ভাইকে নিজে বেরিয়েছিল দাদা। কিন্তু কেক কেনা তো হলই না। বরং গঙ্গার জলে ভাইকে ফেলে দেওয়া হল। পাঁচ বছরের শিশুর দেহ উদ্ধারের জন্য তল্লাশি চলছে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার নবদ্বীপের স্বরূপগঞ্জ ঘাট এলাকায়। পুলিশ অভিযুক্ত তরুণের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে। আক্রোশ থেকেই কি এই ঘটনা? সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে।
জানা গিয়েছে, নবদ্বীপের বাসিন্দা জয়দেব বিশ্বাসের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল ওই মহিলার। তাঁদের ১৯ বছরের সন্তান সুব্রত বিশ্বাস। জয়দেব বিশ্বাস মারা যাওয়ার পর ওই মহিলা আবার বিয়ে করেন। স্বরূপগঞ্জ এলাকাতেই তাঁদের বাড়ি। তাঁর পাঁচ বছরের একটি ছেলে আছে। এদিকে কাজের সূত্রে প্রথম পক্ষের সন্তান সুব্রত বিশ্বাস বাইরে থাকে। গতকাল নবদ্বীপের বাড়িতে মা-ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল সে। গতকাল তার জন্মদিনও ছিল।
জন্মদিনের কেক কিনতে যাওয়ার জন্য ভাইকে নিয়ে বেরোয় সুব্রত। কিন্তু কেক না কিনে গঙ্গার ঘাটে চলে যায়। রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ভাইকে নিয়ে সে নৌকায় ওঠে। ফেরিঘাট এলাকার কাছেই গঙ্গায় ওই শিশুকে ফেলে দেওয়া হয়। ঘাটে উপস্থিত কিছু লোকজনের বিষয়টি নজরে আসে। তাঁরা ওই তরুণকে ধরার জন্য ছুটে যান। কিন্তু ততক্ষণে অভিযুক্ত নৌকো থেকে লাফ মেরে পালিয়ে যায়। তার মুখে মাস্ক থাকায়, ভিড়ের মধ্যে অন্ধকারে মিশে যায়। ফলে তাকে আর ধরতে পারা যায়নি।
শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য গঙ্গায় রাতেই তল্লাশি শুরু হয়। কিন্তু শিশুটি ততক্ষণে জলে ভেসে গিয়েছে। পুলিশও খবর পেয়ে রাতে ঘটনাস্থলে যায়। এদিকে রাত হলেও দুই ছেলে না ফেরায় দুশ্চিন্তা বাড়ে ওই পরিবারে। সুব্রতকে ফোন করলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। রাতে পরিবারের কাছে ওই দুঃসংবাদ আসে। পরিবারে শোকের ছায়া নামে। কিন্তু কেন এমন করল সে? সৎ ভাইয়ের উপর কি আগে থেকে আক্রোশ জমা হয়েছিল? সেজন্যই কি ভাইকে ‘সরাতে’ বাড়ি এসেছিল সে?
রবিবারও শিশুটির খোঁজে তল্লাশি চলছে। জলের তোড়ে শিশুটি ভেসে গিয়েছে। সেই অনুমান করা হচ্ছে। অভিযুক্তের খোঁজেও বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চলছে। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে ওই এলাকায়।