অর্ণব দাস, বারাসত: বাংলায় এসআইআর নিয়ে তুঙ্গে জল্পনা। বিজেপির দাবি, শাসকদল তৃণমূল নিজেদের ভোটের স্বার্থে অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে। তৃণমূল বারবার দাবি করেছে, অনুপ্রবেশ রোখার দায়িত্ব বিএসএফের যা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে। এই আবহে বারাসতের এক বিজেপি কর্মীই অকপটে স্বীকার করলেন তিনি ছেলেবেলায় পায়ে হেঁটে চোরাপথে ভারতে প্রবেশ করেছেন। এখন তাঁর ভারতীয় ভোটার, আঁধার কার্ড সবই আছে। এরপরই শোরগোল হতেই ওই বিজেপি কর্মীর অভিযোগ তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে।
বারাসত ১ নম্বর ব্লকের কদম্বগাছি পঞ্চায়েতের হেমন্ত বসুনগরের বাসিন্দা সুব্রত মণ্ডল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় বিজেপি কর্মী বলেই পরিচিত সুব্রত আদপে বাংলাদেশের পিরোজপুর জেলার বাসিন্দা। ২০০০ সালে এদেশে এসে প্রথমে মামাবাড়ি, পরবর্তীতে ভাড়া বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে বসাবাস শুরু করেন। এরপর ২০১১ সালের কদম্বগাছি হেমন্ত বসুনগরে বাড়ি তৈরি করেন তাঁরা।
সূত্রের খবর, তাঁর বাবার নাম সুভাষ মণ্ডল। কিন্তু এদেশের ভোটার কার্ডে প্রথমে তাঁর বাবার নাম ছিল ফণী মণ্ডল। পরবর্তীতে এফিডেভিট করে ভোটার কার্ডে বাবার নামের পরিবর্তন করেন। কেন প্রথমদিকে শংসাপত্রে ভুল হয়েছে এই প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি সুব্রত। অভিযোগ উঠছে অসাধু পন্থা অবলম্বন করে নথি বানিয়েছেন সুব্রত। ঘটনা নিয়ে শোরগোল শুরু হতেই আজব যুক্তি খাঁড়া করেছেন সুব্রত। বিজেপি করেন বলে তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবি তুলে সুব্রত বলেন, “২০০০সালে এদেশে এসেছি। তখন আমি ছোট। চোরাপথে হেঁটে হেঁটেই চলে আসি। পড়াশোনার সুবাদে আমার এদেশের সমস্ত নথি আধার, ভোটার, রেশন কার্ড সবই আছে। বিজেপি করি বলেই রাজনৈতিক কারণে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। বাংলাদেশে অত্যাচারের শিকার হয়ে এদেশে এসেছি। তাই ওই দেশে আর ফিরব না।”
এনিয়ে বিজেপির রাজ্য নেতা তাপস মিত্র জানিয়েছেন, “বিজেপি করে কি না, খোঁজ নিতে হবে। তবে, ২০০০সালে যখন এসেছে, তখন সিএএ আবেদন করতে পারে।” গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা স্থানীয় জেলা পরিষদের সদস্য আরশাদ উদ জামান জানিয়েছেন, “কে বিজেপি করে, কে তৃণমূল করে সেটা বড় কথা নয়। একটি পরিবার অত্যাচারিত হয়ে এদেশে এসেছে। ছেলেটি এদেশে পড়াশোনা করে জীবিকা নির্বাহ করছে। তাঁর নাম বাদ যাবে না। মানবিক মুখ্যমন্ত্রী বহুবার বলেছেন, কারোর নাম বাদ যাবে না।” এনিয়ে বারাসত জেলা পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খরিয়া বলেছেন, “লোকাল থানাকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলা হবে। কীভাবে নথি তৈরি হয়েছে সেটাও যাচাই করা হবে।”