সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকার সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়ে ডামাডোলের মাঝেই ইরানে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। এই ঘটনার জন্য এবার ইরানকেই দায়ী করলেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প। কার্যত বুঝিয়ে দিলেন, আমেরিকার দাবি না মানার জন্যই এমন হামলার মুখে পড়তে হয়েছে তেহরানকে। শুরু তাই নয়, আগামী দিনে ইরানের মাটিতে আরও বড় হামলা হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প।
এই হামলার পর সোশাল মিডিয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্প লেখেন, ‘এরই মধ্যে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে, বহু মানুষ মারা গিয়েছেন। তবে এই হত্যা ও হামলা রোখার সময় এখনও রয়েছে ইরানের হাতে। সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়ার আগে এবং একসময় পরিচিত ইরান সাম্রাজ্যকে টিকিয়ে রাখতে ইরানকে অবশ্যই চুক্তি করতে হবে।’ শুধু তাই নয় ট্রাম্প আগেই জানিয়েছিলেন, ইজরায়েল যে ইরানে হামলা চালাবে সে তথ্য আগে থেকেই ছিল তাদের কাছে। সেই সূত্র ধরেই সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘আমার মনে হয় অসাধারণ হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। আমরা ইরানকে অনেক সুযোগ দিয়েছিলাম, কিন্তু ওরা কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। এরপর যেটা হওয়ার সেটাই হয়েছে। তবে এটা কেবল শুরু, আরও অনেক কিছু হতে বাকি।’ তবে হামলায় যে আমেরিকার কোনও যোগ নেই সে কথাও স্পষ্ট করে দেন ট্রাম্প।
উল্লেখ্য, ইরান পরমাণু শক্তিধর হোক, তা কোনওভাবেই চায় না পশ্চিমী বিশ্ব। আপত্তিকে ফুঁৎকারে উড়িয়ে ইরানের পরমাণু হওয়ার প্রচেষ্টার জেরে একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল ক্ষুব্ধ আমেরিকা। এই পরিস্থিতিতে ২০১৫ সালে একটি পরমাণু চুক্তি করে ইরান। ওই চুক্তি অনুযায়ী ইরান নিজেদের পরমাণু প্রকল্প সীমিত করবে। এর বিনিময়ে তেহরানের ওপর থেকে তুলে নেওয়া হবে নিষেধাজ্ঞা। ২০১৯ সালে ক্ষমতায় আসার পরই সেই চুক্তি থেকে আমেরিকাকে সরিয়ে নেন ট্রাম্প। গত জানুয়ারিতে ক্ষমতায় বসার পর তেহরানের সঙ্গে এ–সংক্রান্ত চুক্তি নতুন করে করতে আবার তৎপর হয়েছেন তিনি। তবে নয়া চুক্তিতে একাধিক মার্কিন শর্তে আপত্তি জানিয়েছে ইরান। যার জেরেই ক্ষুব্দ হয় হোয়াইট হাউস।
এই পরিস্থিতির মাঝেই শুক্রবার সকালে অপারেশন রাইজিং লায়ন শুরু করে তেল আভিভ। ইরানের সামরিক ঘাঁটি এবং পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার লক্ষ্য করে আকাশপথে হামলা চালানো হয়। তার জেরে মৃত্যু হয়েছে ইরান সেনার চিফ অফ স্টাফ মহম্মদ বাঘেরি, রেভোলিউশনারি গার্ডসের কমান্ডার হোসেন সালামি এবং ইরানের এমার্জেন্সি কমান্ডের কমান্ডারের। প্রাণ হারিয়েছেন ইরানের প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আলি শামখানিরও। এছাড়াও পারমাণবিক গবেষণাকারী অন্তত ৬ জন বিজ্ঞানীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরান। বহু সেনাকর্মী এবং আধিকারিকেরও মৃত্যু হয়েছে ইজরায়েলি হামলায়।