চা শ্রমিকদের বোনাস নিষ্পত্তিতে নজর রাজ্যের, মালিক-শ্রম দপ্তর বৈঠক

চা শ্রমিকদের বোনাস নিষ্পত্তিতে নজর রাজ্যের, মালিক-শ্রম দপ্তর বৈঠক

শিক্ষা
Spread the love


শুভজিৎ দত্ত, নাগরাকাটা: গত বছর ১৬ শতাংশ হারে পুজো বোনাস নিয়ে শ্রমিক আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়েছিল উত্তরবঙ্গের চা বলয়। বছর শেষে বিধানসভা ভোট থাকায় ঝুঁকি নিতে নারাজ রাজ্য বোনাস নিষ্পত্তি করতে চাইছে দ্রুত। যে কারণে মালিকদের ৫টি সংগঠনের সঙ্গে বসতে বৈঠক ডাকল শ্রম দপ্তর। শুক্রবার কলকাতায় নিউ সেক্রেটারিয়েট ভবনের কনফারেন্স হলে বৈঠকটি হওয়ার কথা। উপস্থিত থাকবেন খোদ শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। বোনাস নিয়ে শ্রমিক-মালিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আগে রাজ্য সরকারের এমন ‘হস্তক্ষেপ’ যে নজিরবিহীন, মানছে সব মহলই।

মালিকপক্ষের যৌথ মঞ্চ কনসালটেটিভ কমিটি অফ প্ল্যান্টেশন অ্যাসোসিয়েশন (সিসিপিএ)-এর তরফে ডাকা দ্বিপাক্ষিক বোনাস বৈঠক হওয়ার কথা ২৮ অগাস্ট। বৈঠকটি ভার্চুয়ালি হওয়ার কথা। পরবর্তীতে ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর কলকাতায় মুখোমুখি বসবে দুই পক্ষ। তার আগে রাজ্যের তরফে ডাকা বৈঠকের উদ্দেশ্য মালিকদের ওপর মনস্তাত্ত্বিক চাপ তৈরির কৌশল বলে মনে করছেন অনেকে। চা বণিকসভাগুলি মনে করছে, বোনাস ফয়সালা নিয়ে যাতে গত বছরের মতো দীর্ঘসূত্রিতা ও টালবাহানা না হয়, সেই সংক্রান্ত নির্দেশ দিতে পারে রাজ্য। প্রয়োজনে যে শ্রম দপ্তর অ্যাডভাইজারি জারি করে দেবে, সেই বার্তা দেওয়া হতে পারে। সম্প্রতি জিটিএ চিফ অনীত থাপা বোনাস নিয়ে শ্রমমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। ২০ শতাংশ বোনাসের দাবি যে পাহাড়ে উঠেছে, তা শ্রমমন্ত্রীর কাছে স্পষ্ট করেন তিনি। ২০ শতাংশ বোনাসের দাবিতে সরব তরাই ও ডুয়ার্সের শ্রমিক সংগঠনগুলিও।

উত্তরবঙ্গের অতিরিক্ত শ্রম কমিশনার পার্থ বিশ্বাসের চিঠি অনুযায়ী, শুক্রবারের বৈঠকে থাকার কথা ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন, টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া, টেরাই ইন্ডিয়ান প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, ইন্ডিয়ান টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশন ও দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশনের। সিসিপিএ’র উত্তরবঙ্গের আহ্বায়ক অমিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেলে বৈঠকের চিঠি পেয়েছি। দেখা যাক কী হয়।’ টিপা-র চেয়ারম্যান মহেন্দ্র বনসল বলছেন, ‘রাজ্য যখন বৈঠক ডেকেছে, তখন কম সময়ের নোটিশেও যেতে হবে। তবে এখন চা শিল্পের পরিস্থিতি খারাপ। সবকিছু বিবেচনা করে শ্রম দপ্তর আলোচনা করবে, সেই বিশ্বাস রাখতে চাই।’ তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান নকুল সোনার বলেন, ‘রাজ্যের হস্তক্ষেপকে স্বাগত জানাই। আমাদের দাবি, অবশ্যই সর্বোচ্চ হারের বোনাস।’ বিজেপি প্রভাবিত ভারতীয় টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনোজ টিগ্গা বলছেন, ‘২০ শতাংশ হারে বোনাসের কথা তো ইতিমধ্যে বলে দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৪ তারিখ পরবর্তী রণকৌশল ঠিক করতে বীরপাড়ায় বৈঠক ডাকা হয়েছে।’ চা শ্রমিকদের যৌথ মঞ্চ জয়েন্ট ফোরামের অন্যতম নেতা ও সিটুর রাজ্য সম্পাদক জিয়াউল আলম বলেন, ‘২০ শতাংশের এক পয়সাও কম বোনাস নয়। স্থায়ী ও অস্থায়ী, সমস্ত ধরনের শ্রমিকদেরই তা দিতে হবে। চলতি মাসের শেষেই যাতে বোনাসের টাকা শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে ঢুকে যায়, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *