অর্ক দে, বর্ধমান: আবাস যোজনার ঘর পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা তোলার অভিযোগ উঠল বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের বিজেপির মণ্ডল সভাপতি প্রধানচন্দ্র পালের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার এই বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন অভিযুক্ত ওই মণ্ডল সভাপতি।
জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত মাস পাঁচেক আগে। আবাস যোজনায় ঘর পাইয়ে দেওয়ার নামে গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দার কাছে টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, প্রত্যেক পরিবার পিছু দেড় থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন প্রধানচন্দ্র পাল। সরকারি দপ্তরে প্রভাব রয়েছে বলে তিনি দাবি করেছিলেন। বাসিন্দাদের থেকে টাকা আদায় করেছিলেন বলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন বাসিন্দারা।
গ্রামের বাসিন্দা সোনালি তরফদার, শর্মিলা মণ্ডল, মমতা বিশ্বাসদের অভিযোগ, সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে পরিচয় রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন প্রধান পাল। সেই সুবাদে সরকারি প্রকল্পে ঘর পাইয়ে দেবেন তিনি। তবে তার বদলে আগাম টাকা দিতে হবে। সেই কথা জানিয়েছিলেন তিনি। এই গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দাদের মাটির ঘর। তাই তাদের বাংলার বাড়ি প্রকল্পে ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, এজন্য বাসিন্দাদের কাছে পরিবার পিছু ২ হাজার টাকা করে নিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, বাসিন্দাদের কাছ থেকে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, ব্যাঙ্কের বই সংক্রান্ত নথি জমা নিয়েছিলেন তিনি। পরে সরকারি তালিকায় ওইসব পরিবারের নাম ওঠেনি। বাসিন্দারা টাকা ফেরত চাইলে ওই বিজেপি নেতা বিষয়টি অস্বীকার করছেন বলে অভিযোগ। এরপরেই সাধারণ মানুষরা জেলা পুলিশ সুপারের কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন।
এই বিষয়ে মণ্ডল সভাপতি প্রধানচন্দ্র পাল দলীয় কর্মীদের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন। সরকারি প্রকল্পের বাড়ি তৈরির জন্য বিরোধীদলের কোনও পদাধিকারী বাসিন্দারা টাকা দেবেন কেন? সেই প্রশ্ন তিনি তুলেছেন। তাঁর আরও দাবি, “বিজেপি দলে অনেকে রয়েছেন, যারা অন্যদল থেকে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সদ্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁরাই ষড়যন্ত্র করে এই কাজ করেছেন।” জামালপুর ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি মেহেমুদ খান বলেন, “এটা থেকেই বিজেপির চরিত্র বোঝা যায়। বাংলা আবাস যোজনা গরিব মানুষের পাকা বাড়ির তৈরির জন্য প্রকল্প। সেখানেই মানুষকে ভুল বুঝিয়ে টাকা আদায় করছে বিজেপি।”