ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: দেশের একাধিক ক্ষেত্রের স্বনামধন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিকে সম্মান দিয়ে লোকসভায় সাংসদ করে এনেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। তাঁদের অনেকেই আবার পুরনো বিজেপিতে বিরক্ত হয়ে সেই দল ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। তৃণমূল তাঁদের সম্মান দিয়ে নিয়ে এসেছে। তাতেই ‘ঈর্ষায় জ্বলে’ রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে কুৎসা শুরু করেছে বিজেপি। বলতে শুরু করেছে বাংলার এই জনপ্রতিনিধিরা বহিরাগত। তারই কড়া জবাব দিল তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের স্পষ্ট বক্তব্য, রাজনৈতিকভাবে লড়াইয়ে না পেরে কুৎসা অপপ্রচারের রাস্তায় গিয়েছে বিজেপি।
তৃণমূলনেত্রী তাঁর দলে, প্রশাসনে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষকে জায়গা দিয়েছেন। যা অন্য কোনও দল কোনও দেশে করে দেখাতে পারেনি। ক্রিকেটার থেকে গায়ক, সমাজসেবক থেকে অভিনেতা, ফুটবলার থেকে স্বনামধন্য শিল্পী, শিক্ষক, অধ্যাপক, চিন্তাবিদ কে নেই সেখানে! এমনকী মহিলাদেরও সামনের সারিতে আনার ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশে বাকি রাজনৈতিক দলগুলির কাছে পথপ্রদর্শক। এই অবস্থায় বিজেপি ইউসুফ পাঠানের মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ক্রিকেটার, কীর্তি আজাদের মতো বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার, শত্রুঘ্ন সিনহার মতো জাতীয় স্তরের জনপ্রিয় অভিনেতা, সুস্মিতা দেবের মতো সমাজকর্মীদের নিয়ে নজিরবিহীন কুৎসা চালিয়ে যাচ্ছে। এঁদের ক্রমাগত ‘বহিরাগত’ বলে আসছে। আদপে তারা যে কতটা ঈর্ষাকাতর সেটাই প্রমাণ করছে বিজেপি।
এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ কড়া জবাব দিয়েছেন। বলেছেন, “বিজেপির সবটাই ঈর্ষা। নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্যসভা এবং লোকসভায় যে-কেউ দেশের যে-কোনও প্রান্ত থেকেই দাঁড়াতে পারেন। বিজেপির সর্বোচ্চ নেতা দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যেমন। তিনি গুজরাটের মানুষ হয়েও বারাণসী থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচনে লড়েছেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং পাঞ্জাবের মানুষ হয়ে আবার অসম থেকে রাজ্যসভায় গিয়েছিলেন। এরকম ভূরি ভূরি উদাহরণ রয়েছে এ দেশে। বিজেপি কতটা বাস্তববুদ্ধিরোহিত হলে তাদের দলের সর্বোচ্চ নেতার সম্পর্কে না জেনেই অন্য দল বিশেষ করে তৃণমূলকে নিয়ে প্রশ্ন তোলে!” কুণালের কথায়, “ইউসুফ পাঠান আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ক্রিকেটার, কীর্তি আজাদ বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার, শত্রুঘ্ন সিনহা একজন জনপ্রিয় স্টার। এঁদের স্বীকৃতি দিয়ে দলে এনে জনপ্রতিনিধি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী মোদি যদি বারাণসীতে বহিরাগত না হয়ে থাকেন তবে, কোন অঙ্কে ইউসুফ পাঠান, কীর্তি আজাদেরা বাংলা থেকে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সংসদে গিয়ে বহিরাগত হবেন? সুস্মিতা দেব বাংলা থেকে রাজ্যসভায় গিয়েছেন। তাহলে কি তিনিও বহিরাগত? তিনি অসমের বাসিন্দা বলে?”
তৃণমূলের সাফ বক্তব্য, কিছু হাস্যকর এবং ছেঁদো যুক্তি এবং সংবিধান ও রাজনীতির অ-আ-ক-খ না জানা বিজেপি নির্লজ্জের মতো তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কুৎসা চালিয়ে যাচ্ছে। তার একমাত্র কারণ বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে বিজেপি পরপর নির্বাচন হেরেছে।