‘কাঁটা’ বেনজির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, তিনবারের বৈঠকেও উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটি গঠন বিশ বাঁও জলে!

‘কাঁটা’ বেনজির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, তিনবারের বৈঠকেও উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটি গঠন বিশ বাঁও জলে!

বৈশিষ্ট্যযুক্ত/FEATURED
Spread the love


অর্ণব দাস, বারাসত: গোষ্ঠী কোন্দলে রীতিমতো নজির গড়ল উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সিপিএম নেতৃত্ব। বিদায়ী সম্পাদকের বিরোধিতা-সহ সম্পাদকের দাবিদার নিয়ে জেলা সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে প্রতিনিধিরা কার্যত তিনভাগে বিভক্ত হয়েছিলেন। শেষদিন, রবিবার জেলা কমিটির সদস্য হওয়া নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছল। সমস্যা মেটাতে তিনবার সম্পাদকমণ্ডলী বৈঠক করার পাশাপাশি তিনবার জেলা কমিটির বৈঠক বসলেও মিলল না রফাসূত্র। তাই গতবারের সম্মেলনের মত এবারও উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটি গঠন নিয়ে দ্বন্দ্ব মেটাতে নাজেহাল হতে হল আলিমুদ্দিনকে। আর এত সবের মধ্যে সম্মেলনে কাঁটা হয়ে রইল সাসপেন্ডেড তন্ময় ভট্টাচার্যর বইমেলায় বিজেপির বুকস্টলে যাওয়ার বিতর্ক।

শুক্রবার বারাসতের রবীন্দ্র ভবনে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের ২৬তম সম্মেলন শুরু হয়েছিল বিতর্ককে সঙ্গী করে। শুরুর দিন থেকেই সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তীকে বদল করা নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন অধিকাংশ প্রতিনিধিরা। বিদায়ী সম্পাদকের নিষ্ক্রিয়তা, জেলার অভ্যন্তরে সংগ্রাম আন্দোলনের তাঁর দূরদর্শিতার অভাব-সহ সিদ্ধান্তহীনতা নিয়ে প্ৰশ্ন উঠেছিল। প্রাক্তন জেলা সম্পাদক গৌতম দেব হুইল চেয়ারে এসেও সম্মেলন কক্ষের বেলাগাম সুর আটকাতে পারেননি। বরং রাজ্য নেতৃত্বদের সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে শুনতে হয়েছিল লোকসভা নির্বাচনে বারাকপুর থেকে তারকা প্রার্থী করায় দিনের বেলায় তাঁর প্রচারে অনীহা, একেবারে শেষে জোট ঘোষণা হওয়ায় প্রচারের পিছিয়ে থাকা-সহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে আইএসএফ এবং উপনির্বাচনে নৈহাটি থেকে লিবারেশনের প্রার্থী করা নিয়ে সমালোচনা। একইসঙ্গে সম্পাদক হিসাবে উঠে এসেছিল পলাশ দাস, সোমনাথ ভট্টাচার্য, সন্দীপ মিত্রের নাম।

এই বিতর্ক সামলাতে শনিবার মধ্যরাত পর্যন্ত হয়েছিল জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক। তখনই জট পাকে এরিয়া কমিটিগুলি থেকে কারা জেলা কমিটিতে ঢুকবে সেই নাম নিয়ে। কোন ৬৫ জন জেলা কমিটির সদস্য হবেন, তা নিয়ে ফের সম্পাদকমণ্ডলী বসেছিল এদিন দুপুরে। কিন্তু সমাধান মেলেনি। তারপর থেকে রাত পর্যন্ত তিনবার জেলা কমিটি এবং ফের একবার বৈঠক করেছে সম্পাদকমণ্ডলী। তবু কোনও সমাধান সূত্রেই পৌঁছনো যায়নি। এদিকে আবার সম্মেলনের শেষ দিনে উপস্থিত রাজ্য নেতৃত্ব মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তী, শ্রীদীপ ভট্টাচার্যরা বিদায়ী জেলা কমিটিকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কমিটি ও সম্পাদক নিয়ে কিছুতেই ভোটাভুটি করা যাবে না। সিদ্ধান্ত নিতে হবে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে।

এত ফাঁপরের মধ্যেই একদিকে যেমন তরুণী সাংবাদিকের সঙ্গে অবাঞ্ছিত ব্যবহার করার অভিযোগে তন্ময় ভট্টাচার্যকে সাসপেন্ড করা নিয়ে একাধিক প্রতিনিধির বক্তব্য ছিল, হয় তাঁকে বহিষ্কার করুক, নয় দলে ফিরিয়ে আনুক। এই সিদ্ধান্তহীনতার কারণে মানুষের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তেমনই বইমেলায় তন্ময় ভট্টাচার্য দলের প্রতীক লাগানো লাল টুপি পরে বিজেপির স্টলে হাজির হওয়া নিয়েও শেষদিনে সোচ্চার হয়েছেন প্রতিনিধিরা। সবমিলিয়ে কারা জেলা কমিটিতে ঢুকছেন, কে সম্পাদক হচ্ছেন, তা নিয়ে শেষদিন রাত পর্যন্ত সমাধান না মেলায় এখন পার্টির মুখ বাঁচাতে ভোটাভুটি আটকানোই একমাত্র লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে আলিমুদ্দিনের।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *