সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেঙ্গালুরু পদপিষ্ট কাণ্ডে আরসিবি সমর্থকদের মৃত্যুর নেপথ্যে ক্রমশ প্রকট হচ্ছে প্রশাসনের গোঁয়ার্তুমি এবং ফ্র্যাঞ্চাইজির নির্বুদ্ধিতার তত্ত্ব। বুধবারের ওই সেলিব্রেশনের ক্ষেত্রে একাধিক সমস্যা তুলে ধরে কর্নাটক সরকারকে সতর্ক করেছিল বেঙ্গালুরু পুলিশ। কিন্তু সেই সতর্কতাকে পাত্তাই দেয়নি সরকার। আর সেটারই অবধারিত ফলাফল পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা।
সম্প্রতি একাধিক সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, আরসিবির ইভেন্টের অনুমতি দেওয়ার আগে সরকারকে একটি চিঠি লেখেন বেঙ্গালুরুর ডিসিপি এম এন কে গৌড়া। তিনি সাফ জানান, “দেশজুড়ে আরসিবি জনপ্রিয়। বিধান সৌধে কোনও অনুষ্ঠান হলে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড় জমতে পারে। সেই লক্ষ মানুষের ভিড় সামাল দেওয়াটা যা কর্মীর সংখ্যায় সেটা সামাল দেওয়া কঠিন হবে।” তাছাড়া বিধান সৌধ হেরিটেজ বিল্ডিং হওয়ায় সেটার ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বেশি। সেই সতর্কবার্তা অবশ্য সরকার শুনেছিল। বিধানসৌধে সমর্থকদের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়। যদিও আরসিবি টিম সেখানে যায়।
চিন্নাস্বামীর মূল অনুষ্ঠানের আগে পুলিশের তরফে একাধিক পরামর্শ দেওয়া হয়। ডিসিপি গৌড়ার চিঠিতে বলা হয়, এই ধরনের অনুষ্ঠান করতে গেলে সবরকম টিকিট বিক্রি বন্ধ করা হবে। দরকারে বিকালের দিকে বেঙ্গালুরুতে অর্ধদিনের ছুটি ঘোষণা করা যেতে পারে। সোশাল মিডিয়াতেও ইভেন্টের প্রচার বন্ধের পরামর্শ দেয় পুলিশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনও পরামর্শই শোনেনি সরকার বা ফ্র্যাঞ্চাইজি। যার জেরে একটা সময়ের পর ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। যার ফলশ্রুতি ওই পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা।
ডেকান হেরাল্ডের এক রিপোর্ট বলছে, আরসিবি শুরুতে সেলিব্রেশনটি করতে চেয়েছিল কর্নাটকের বিধান সৌধের সামনে। কিন্তু আইনসভার মতো স্পর্শকাতর জায়গায় সেটার অনুমতি পুলিশ দিতে চায়নি। পরে আরসিবি ঠিক করে বিধানসভায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে সেখান থেকে চিন্নাস্বামী পর্যন্ত হুডখোলা গাড়িতে রোড শো করে যাবেন বিরাটরা। তারপর সেখানে হবে মূল অনুষ্ঠান। যার আয়োজক কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থা। পুলিশের এক আধিকারিকের দাবি, ওই অনুষ্ঠানেও তাঁরা অনুমতি দিতে চাননি। পুলিশ কর্তারা রাজ্য প্রশাসন এবং আরসিবিকে জানায়, সদ্য আইপিএল জয়ের পরদিনই ওই অনুষ্ঠান করলে আবেগের বশবর্তী হয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিড় জমাতে পারে, কাজের দিনে যা সামাল দেওয়া কঠিন হবে। তাই ওই সেলিব্রেশন রবিবার পর্যন্ত স্থগিত করা হোক। ততদিনে আবেগ খানিকটা থিতিয়ে পড়বে। তাছাড়া ছুটির দিনে ভিড় সামাল দিতেও কিছুটা সুবিধা হবে। কিন্তু আরসিবি জানায়, সেটা করা সম্ভব নয়। কারণ এমনিই আইপিএল নির্ধারিত সূচির দু’সপ্তাহ পর আইপিএল শেষ হয়েছে। এরপর রবিবার পর্যন্ত ক্রিকেটারদের আটকে রাখা সম্ভব নয়। বুধবার সন্ধের পরই বিদেশি ক্রিকেটারদের ছেড়ে দিতে হবে। পুলিশকর্তার দাবি, ফ্র্যাঞ্চাইজির অনড় মনোভাবে অনিচ্ছা সত্ত্বেও চিন্নাস্বামীর অনুষ্ঠানের অনুমতি দেয় পুলিশ। কিন্তু রোড শো বাতিল করা হয়।