কবিতা – Uttarbanga Sambad

কবিতা – Uttarbanga Sambad

ব্লগ/BLOG
Spread the love


বিশেষ অবিচার

নীহার জয়ধর

মঙ্গল, যে চক্করে ঘুরে আসছে সবচেয়ে কাছে

পূর্ণগ্রহণে সূর্য সেদিন চোখের কাজলে মোছা

প্রাকৃত, যা কিছু সভ্য নিয়মের প্রতিযোগী

রম্য, পরপুরুষে ঝলমল সে হীরক অঙ্গুরী

এড়িয়ে গেছি ঠান্ডা বিছানায় শুয়ে পা গরমের চেষ্টা

ক্ষণ এর গায়ে নরমে গরমে তোমার সঙ্গ রেশ-টা

মধ্যমগ্রাম টিশানে চায়ের কাপে ছায়া উড়োজাহাজি

জানলা দেখা যায়, মানুষ, গুছিয়ে ক্লান্ত খুশির খাবি

পা পিছলানো বিলাসিতা আর হাত থেকে কাচের গ্লাস

প্রেমে ঔচিত্য নিষেধ, যাদের অতিথি আসার পূর্বাভাস

শয্যা সঙ্গিনীর ফুটন্ত ভাতের হাঁড়ির অসভ্য শব্দ ইশারা

সাত পুরুষের জমির টিকিটে সীমান্ত ডিঙানো দিশা যা

বড় ছায়া সরে, অস্বাভাবিক শব্দে, গিলি আয়ের অধিক রেস্ত

বিপাক গড়-এ কুষ্ঠী বেহাল, মঙ্গল আউলানো কক্ষে শশব্যস্ত

 

ভাষাবাদ

শৃন্বন্তী

না  বলা কথার  রেশ

বেজে চলে মনে নির্নিমেষ,

কিছু  ভয়-দ্বন্দ্বের খেলায়

হার মানতে চায় শব্দেরা,

তবু থাকে স্থির চির বিশ্বাস।

অপেক্ষমাণ বর্ণের ভেসে আসার পথরেখা

আলোহীন, ভীরুতার প্রতিরূপ।

এরা চায় দ্বিধাহীন সাহসী পদক্ষেপ,

প্রতিবাদের ভাষা হতে চায়।

 

নিজের  কাছে  ফেরা 

পাঞ্চালী  দে  চক্রবর্তী

প্রতীক্ষার  প্রহর  গুনতে গুনতে  পেরিয়ে গেছে  কত  সময়।

অবাধ্য  মন  শাসন  মানে না।

জানে না  স্বার্থপরতার  সংজ্ঞা।

তবুও  অবহেলা  মেনে নিতে  হয়।

দুঃখ  পেতে  পেতে  এ মন  হয়েছে  আজ  বজ্রকঠিন।

অপমান, অবজ্ঞাকে  সে  অতি  সহজেই  বুড়ো  আঙুল  দেখাতে  শিখে  গেছে।

যা  তার  স্বভাব   বিরুদ্ধ, তাকে  বলতে  শিখেছে  ‘ইটস  ওকে।’

তারপর  হাসিমুখে  সে  নিজের  কাছেই  ফিরে   এসেছে।

আর  নিজের  কাছে  আত্মসমর্পণ  করে  বলেছে

‘আমি  তোমাকেই  ভালোবেসে  যেতে  চাই  বারংবার।’

 

অনিশ্চিত

বিশ্বজিৎ মণ্ডল

 

প্রতি রাতে আমার ঘুমের মধ্যে জেগে ওঠে

একদল লোমশ সরীসৃপ

ঘরের নীলচে অন্ধকারে খেলা করে, ওদের অদৃশ্য

ফণা

আমি চাতুর্য জানি না, নীরবতায় খুঁজিনি

আত্মগোপনের গোপন খোলস

কেবল আহত হতে হতে ঘুমিয়ে পড়ি

ভগ্ন অবয়বের ভেতর

অজ্ঞাত ইচ্ছার দ্বার প্রান্তে দাঁড়িয়ে কখনো খুঁজিনি

উড্ডয়নের অপরূপ ডানা

আমি তো চেরা আলজিভের দু-টুকরো নলিপথ

গন্তব্য ভুলে মিশে গেছি, জান্নাত কিংবা

জাহান্নামের চোরারাস্তায় বিন্দুবৎ

 

 

উড়াল পাখি

সুকান্ত মণ্ডল 

 

কত যে আগুন ছিল সে নদীর বুকে

জন্ম পার করা সাঁকো বোঝেনি তো তাকে

শ্বাসমূলে বেঁধে রেখে জীবনের গান

আমরাই নড়িচড়ি আলোদ্যুতি মান

কাগজের ভাঁজে রেখে দুঃখ শোক গুলি

মুখোমুখি তুমি আমি জুঁই ফুল তুলি

নৌকাটি দুলে আর দুলে মৃত্যু ভয়

মুখের ভাষা এসে আটকে যায় ঠোঁটের কিনারায়

শ্রী বিশ্বাস, এসো বসো ক্ষান্ত করো মন

আমরা উড়াল পাখি ফেলে যাই আশ্বিনের চুম্বন।

 

ডুয়ার্স কথা 

উত্তম দেবনাথ 

 

ডুয়ার্সের নদী হয়ে

বুকে শত সহস্র যন্ত্রণা লুকিয়ে

সবুজে ঘেরা ঘর থেকে বেরিয়ে এলাম

জীবনে আর কোনওদিন হয়তো ফিরব না বলে।

 

হাট পথ জনপদ অরণ্য

পাণ্ডুলিপির মতো হৃদয়ে লিখে চলে রোজনামচা

যদি একদিন মহাকালের উপন্যাস হয়ে উঠতে পারে।

 

ডুয়ার্সের নীরব পাহাড়ের পাদদেশে

দিগন্ত জুড়ে সবুজ চা বাগানের কাছে এলে

জীবনের ওঠা-নামা ভুলে একান্তই মনে পড়ে নিজের কথা।

 

বুকে আমার নকশী কাঁথার মাঠ

অনিতা সূত্রধর

 

বুকে আমার আছে একটি

নকশী কাঁথার মাঠ,

রূপাই সাজুর প্রেম বিরহের

হাজারো অভিঘাত।

 

এক নয়নে রূপাই আমার

বাঁশিতে সুর ধরে,

আর নয়নে সাজুর ব্যথা

অশ্রু হয়ে ঝরে।

 

বেবুঝ বাঁশির হাজারো সুর

হরেক কথা বলে,

বুকের মাঝে অশ্রুধারা

নদী হয়ে চলে।

 

রূপাই সাজুর করুণ ব্যথা

ভাসায় অশ্রুজলে,

আমার বুকে নদীর ধারা

নিত্য বয়ে চলে।

The put up কবিতা appeared first on Uttarbanga Sambad.



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *