কবিতা

কবিতা

শিক্ষা
Spread the love


তুমি কোথায়

অনুপ দত্ত

এক ঝাঁক অন্ধকার নামার আগে তোমার আসার কথা ছিল

চারিদিকে সন্ধ্যারতির মাঝে ছেলে ভোলানোর গল্প শোনাচ্ছেন আলোছায়াদি

তুমি কোথায়?

বনগাঁ লোকাল এক্ষুনি বেরিয়ে যাবে তমসুকদের বাড়ির পথে

ভিড়ের মাঝে ঝুঁকে থাকা মানুষগুলি খুঁজে বেড়াচ্ছে বিশ্রম্ভের গন্ধ!

মায়ার পোস্ট মর্টেম হয়েছে একটু আগে

ডাহুককাকুর মুঠোয় এখন বিলম্বিত লয়ে বাজছে রংবদলের রিপোর্ট

হুক্কাহুয়া ডাকে ঘুম ভেঙেছে জ্যোতিবাবুর…

সে যে এক রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের মহড়া

সাতপাকে বাঁধা পড়েছে মায়ালুবস্তির রিনা

অকালমৌসুমি বাতাসে নিরুদ্দেশ হয়েছেন শান্তি মুন্ডারা…

বাঘনখের চিহ্ন হাতে হ্যাপিভ্যালি থেকে থানায় হাজির হয়েছেন শ্রাবণীর মা

পাণ্ডুলিপির মতো জেগে থাকা তারার মাঝে শোনা যাচ্ছে আজানের সুর…

এক ঝাঁক অন্ধকার নামার আগে তোমার আসার কথা ছিল

তুমি কোথায়…

স্বপ্নলোকের চাবি

সুব্রতা ঘোষ রায়

 

আখের হল গুছিয়ে নেওয়া…

নিজের নিজের জমি,

আখের হল খোলসে বীজ-

ধূসর ঊষর ভূমি!

আখের হল কলা মুলো…

আখের ফুটেজ পাওয়া,

আখের হল প্রচার বিলাস!

ইস্যু ঘেঁটে যাওয়া,

আখের কিছু গুছিয়ে থাকে,

হিসেব থাকে কিছু…

ঘোলা জলে মাছ ধরা কেউ

থাকেন পিছু পিছু!

আখের নিতে কেউ বা ভাসেন…

ডোবে আসল দাবি!

শান্তিকামী মানুষ হারান

স্বপ্নলোকের চাবি

কপাল

রাজীব চক্রবর্তী

 

আমার কপাল সুন্দর স্বপ্ন দেখার পর

জেগে উঠে দেখে

দুঃস্বপ্ন ;

ব্যাগ ভর্তি দরকারি জিনিস নিয়ে

দোরে দোরে ঘোরে –

একটা দরজাও খোলে না ;

বিপদ যখন ধাওয়া করে

দৌড়াতে পারে না ;

ভুল ঠিকানা সংগ্রহ করে

সবসময় ঝামেলায় জড়ায় ;

গোলাপের পাপড়ির মতো বাঁকা বলে

অনন্ত উপবৃত্তে পাক খেতে থাকে ;

জোয়ারের বিপরীতে সাঁতার কাটতে কাটতে

নিঃসঙ্গ তীরে এসে ওঠে।

 

আর এক ভারতবর্ষ

মৌ চট্টোপাধ্যায়

 

নিকানো উঠোন

আর পড়ে ছিল শুধু কিছু কথামালা—

ঘামে ভেজা শরীর থেকে ঘ্রাণ আসছিল

ভালোবাসার পীতাম্বরী চরিতের।

 

ওরা কাঁসার থালায় সাজানো ভাত দেখিনি

দেখেছে পান্তাভাত, নুন লংকা,

তার সাথে তারায় ভরা আকাশ—

গল্পের কথাসাগরে রাত্রিবাস শেষে,

শুরু হয় আর এক ভারতবর্ষের উপকথা।।

 

একুশেই বাঁচুক মাধবীলতা

আজিজুল হক

তোর আকাশে এক ফালি চাঁদ,
আমার গর্ব একুশ…!
তোর বিশ্বাস বিশ্বাসঘাতকতায়,
আমার বিশ্বাস মাধবীলতায়…
তোর গর্ব মইদুল নিধনে,
আমার আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকার,
তোর স্বপ্ন চতুরতায়, আমার আকাশ বাতাস ছড়ায় প্রাণচঞ্চলতায়,
তাই, তোর বাকা হাসিতেও খুঁজি আমি
এক ফালি চাঁদ আর কাস্তে …
শত্রুর চোখের হাজারো নির্মমতায় তাই
বিপ্লব স্পন্দিত হৃদয় দুঃসাহসের ঘোড়া ছোটায় তেপান্তরের মাঠে…
বেঁচে থাকুক একুশ
বিপ্লব স্পন্দিত বুকে।
মইদুল কিংবা জব্বার-রা রক্তবীজের বংশধর হয়েই বাঁচুক হাজার প্রেমিকের চেতনায়…
মাধবীলতা বিপ্লব হয়ে উঠুক লাশকাটা ঘরে
নীলাঞ্জনার বুকে…!

কোজাগরি

জয়ন্ত সরকার

 

জ্যোৎস্নার প্রাকারের শীর্ষে

চঞ্চল তার দু’পায়ের নিক্বণ

বন্দনায় প্রসারিত হাত

আরও প্রাণময় শিশিরের পদছাপে

 

ব্রতকথা, পাঁচালির পর

উৎসর্গে মেলে ধরি নিজেকে

পদ্ম পাতায়, উলুধ্বনির অন্তঃপুরে

 

আগামী বছর ঠিক বর্ষা হবে,

ধানফুল মুছে দেবে

সমস্ত বেদনা…

মোমবাতি

সুপ্তি ভট্টাচার্য

 

নীরবে শৃঙ্খলিত মিছিল এগিয়ে চলেছে,

সকলের হাতে জ্বলন্ত মোমবাতি,

যে মৃত্যু লজ্জার, যে মৃত্যু অপমানের –

এরা স্মরণ করছে তারই স্মৃতি।

পথচারী নতশিরে থমকে দাঁড়ায়,

হয়তো শ্রদ্ধায় কিংবা যানজটের আশঙ্কায়,

সে-ও হয়তো পা মিলিয়েছে মিছিলে –

যে সাক্ষী দিলে খুনি যায় জেলে।

এমনই অনেক হয়তো, কিংবা বন্যায়,

জ্বলন্ত মোমবাতি নিভে উত্তাপ হারায়

যার প্রিয়জন সেই শুধু কাঁদে,

অন্যরা সবাই সব ভুলে যায়।

The submit কবিতা appeared first on Uttarbanga Sambad.



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *