সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকার মার মুখ বুঝে সহ্য করবে না ইরান। তিন পরমাণু কেন্দ্রে মার্কিন হামলার পর স্পষ্ট ভাষায় সে কথা জানিয়ে দিলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনেই-এর এক উপদেষ্টা। তাঁর বার্তা, ‘এবার আমাদের পালা। আমেরিকার নৌবাহরে পালটা হামলা চালাবে ইরান।’ শুধু তাই নয়, বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেল সরবরাহের প্রধান রুট হরমুজ প্রণালী বন্ধ করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে ইরানের তরফে।
আয়াতুল্লা খামেনেই-এর উপদেষ্টা তথা ইরানের কায়হান পত্রিকার সম্পাদক হোসেন শরিয়ত মাদানি বলেন, “আমেরিকার হামলার পর আমাদের তরফে পালটা প্রত্যাঘাত দেওয়া হবে। বাহারিনে আমেরিকার নৌবাহিনীর উপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হবে। শুধু তাই নয়, আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানি ও ফ্রান্সের জাহাজ চলাচলের জন্য যে হরমুজ প্রণালী ব্যবহার করা হয় তা বন্ধ করে দেওয়া হবে।” ইরানের এই হুঁশিয়ারিতে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগে বিশ্ব। ভারতের জন্যও এটি অন্যতম চিন্তার। গোটা বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের বাণিজ্য হয় এই পথ থেকে।
ভারত সরাসরি ইরান থেকে খুব বেশি তেল আমদানি না করলেও, ভারতকে নিজের চাহিদার ৮৫ শতাংশের বেশি তেল বাইরে থেকে কিনতে হয়। এই আমদানির প্রায় ৫০ শতাংশ হরমুজ প্রণালী (বাণিজ্য পথ) দিয়ে আসে। বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের প্রায় ২০ শতাংশ বাণিজ্য এই পথ দিয়ে হয়। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা এই যুদ্ধের জেরে ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করলে ভারতের বাণিজ্য বিরাট বাধার সম্মুখীন হবে। ইরাক, সৌদি আরব, আরব আমিরশাহী থেকে আসা তেলের সাপ্লাই বাধাপ্রাপ্ত হবে। যার প্রভাব সরাসরি পড়বে দেশের অর্থনীতিতে।
উল্লেখ্য, ২ সপ্তাহ সময় নিলেও, তার আগেই ইজরায়েলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ইরানে হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। এই হামলার মাধ্যমে সরাসরি ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধে যোগ দিয়েছে আমেরিকা। ভারতীয় সময় অনুযায়ী, রবিবার ভোররাতে ইরানের ফোরদো, নাতানজ ও ইসফাহান পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায় মার্কিন বোমারু বিমান বি-২। মাটির নিচে অবস্থিত এই স্থাপনাগুলি ধ্বংসে ব্যবহৃত হয়েছে আমেরিকার বিধ্বংসী বাঙ্কার ব্লাস্টার বোমা। এই হামলার পালটা ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি জানান, এই হামলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে আমেরিকা। নিজেদের সার্বভৌমত্ব ও দেশের জনগণকে রক্ষা করার জন্য সমস্ত ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকার ইরানের রয়েছে।