নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: নাম ছিল ‘স্নো ভিউ’। রামগড়ের পাহাড়ের সেই ছোট্ট বাংলোকে ‘হৈমন্তী’ নাম দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কবির নিভৃতবাসের সাক্ষী উত্তরাখণ্ডের নৈনিতালের এই বাড়িতেই লেখা হয়েছিল ‘গীতাঞ্জলি’র একটি অংশ। এছাড়াও বহু স্মৃতির সাক্ষী বাংলোটি। কিন্তু এহেন ঐতিহাসিক বাংলোই আজ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ভগ্নপ্রায়। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল আর্জি জানালেন একে ‘হেরিটেজ’ তকমা দিয়ে এর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হোক।
জানা যাচ্ছে, ১৯০৩ সাল নাগাদ রামগড়ের ওই বাংলো কেনেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নাম দেন ‘হৈমন্তী’। প্রসঙ্গত, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের খনি রামগড়ের হৈমন্তী নামের এই বাংলোর কথা রয়েছে রথীন্দ্রনাথের ‘পিতৃস্মৃতি’ গ্রন্থেও। সেখানে রয়েছে, মনে পড়ে অতুলপ্রসাদ একদিন বাবাকে অনুরোধ করলেন— ‘আপনি কাল যে সুরটি গুনগুন করছিলেন আপনার ঘরে, আমার বড়ো ভালো লাগছিল শুনতে, গান বাঁধা নিশ্চয়ই হয়ে গেছে, ওই গানটি আমাদের শুনিয়ে দিন।’ এর রবীন্দ্রনাথ গেয়েছিলেন ‘এই লভিনু সঙ্গ তব, সুন্দর হে সুন্দর…’
এমনই নানা স্মৃতির অনুষঙ্গ রয়েছে এই বাংলোর। এদিন জিরো আওয়ারে সেকথা উল্লেখ করে জয়নগরের সাংসদ লেখেন, রবীন্দ্রনাথ তাঁর কন্যাকে এখানেই হারান। যক্ষ্মায় তার মৃত্যুর পরও অবশ্য পরবর্তী সময়ে এখানে এসে থেকেছেন ১৯১৪, ১৯২৭ এবং ১৯৩৭ সালে। কবির পুত্র রথীন্দ্রনাথ, ভাইপো দিনেন্দ্রনাথ এবং অতুলপ্রসাদ সেন এখানে এসে থেকেছেন রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে। এরপরই তিনি লেখেন, ‘হৈমন্তী আজ পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে রয়েছে। কেন্দ্রকে ও সংস্কৃতি মন্ত্রককে আমার একান্ত অনুরোধ ওই বাড়িটিকে হেরিটেজ তকমা দেওয়া হোক এবং দ্রুত এর মেরামতির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হোক দ্রুত।’