নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: ১০ বছরে ১২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি ঋণ মকুব করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি। তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের লিখিত প্রশ্নের জবাবে জানাল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক।
তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ অর্থমন্ত্রকের কাছে জানতে চান, গত ১০ বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি কত ঋণ মকুব করেছে। এবং এই ধরনের ঋণ মকুব কেন করা হয়েছে? জবাবে অর্থমন্ত্রক জানায়, ২০১৫-১৬ থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষ পর্যন্ত বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক সম্মিলিতভাবে ১২ লক্ষ ৮ হাজার ৮২৮ কোটি টাকার ঋণ মকুব করেছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দেওয়া এবং মন্ত্রীর জবাবের সাথে সংযুক্ত তথ্য অনুসারে, গত পাঁচ আর্থিক বছরে ঋণখেলাপির পরিমাণ ২.৯ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। যদিও সরকার তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে এই ঋণখেলাপির অর্থ ঋণগ্রহীতার দায় মকুব নয়।
মন্ত্রীর দেওয়া পরিসংখ্যান থেকে দেখা গিয়েছে, সবচেয়ে বেশি ঋণ মকুব করেছে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। তারা গত পাঁচ বছরে ১.১৪ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি ঋণ মকুব করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ২৪-২৫ অর্থবছরে (অস্থায়ী) ২০,৩০৯ কোটি টাকা। অন্যান্য বৃহৎ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক যেমন পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক (৮১,২৪৩ কোটি টাকা), ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (৮৫,৫৪০ কোটি টাকা) এবং ব্যাঙ্ক অফ বরোদাও (৭০,০৬১ কোটি টাকা) এই তালিকায় উল্লেখযোগ্যভাবে স্থান পেয়েছে। ক্যানারা ব্যাঙ্ক ঋণের ক্রমবর্ধমান ঋণ পরিশোধের জন্য আলাদা, যা ২০২১-২২ অর্থবছরের ৮,৪২২ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ২৪-২৫ অর্থবছরে ১৪,৩৫০ কোটি টাকা হয়েছে।
দেশের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সংকটের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই মোদি সরকারের ভ্রান্ত নীতিকে কাঠগড়ায় তুলে আসছে বিরোধীরা। অভিযোগ, সাধারণ মানুষ বা অর্থনীতির সংকটের কথা না ভেবে প্রধানমন্ত্রীর পুঁজিপতি বন্ধুদের ঋণ মকুবে বাধ্য করা হয় ব্যাঙ্কগুলিকে। সেই অভিযোগ যে মিথ্যা নয়, সেটা আরও একবার প্রমাণ হল কেন্দ্রেরই দেওয়া পরিসংখ্যানে। তাছাড়া প্রশ্ন উঠছে, বাংলার প্রাপ্য বকেয়া না মিটিয়ে এই ‘খয়রাতি’ কেন? ১০০ দিনের কাজ, কেন্দ্রীয় আবাস যোজনা-সহ একাধিক যৌথ প্রকল্পের টাকা আটকে রয়েছে। এ নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য চাপানউতোর জারি রয়েছে এখনও। সেই টাকা মেটাকে কেন্দ্র রাজি নয়।