হেমন্ত মৈথিল, মহাকুম্ভ নগর: ১৪৪ বছরের মহাকুম্ভ যোগে প্রয়াগরাজে মেলা শুরু হয়েছে গত ১৩ জানুয়ারি। ইতিমধ্যে মোক্ষলাভের আশায় ত্রিবেণী সঙ্গমে ডুব দিয়েছে গোটা ভারত! সাধু-সন্ত থেকে আমজনতা। বুধবার সেই পবিত্র জলে ডুব দিয়ে একতার বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন বৈদিক আচার মেনে মন্ত্রপাঠ সেরে গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতীর মিলনস্থলে পুণ্যস্নান করেন মোদি। স্নানের পরে গঙ্গা পূজা ও আরতিও করেন তিনি।
বুধবার ভোরে প্রয়াগরাজে মোদিকে স্বাগত জানান উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। সঙ্গমে ডুব দেওয়ার আগে বৈদিক রীতি মেনে মন্ত্রপাঠ করেন তিনি। কোমর জলে দাঁড়িয়ে সূর্যপ্রণাম এবং তর্পণ করেন। স্নানের পরেও পূজা-অর্চনা করেন। এদিন প্রধানমন্ত্রীর পরনে ছিল কালো কুর্তা। মাথায় ছিল হিমাচলি টুপি। স্নানের সময় অবশ্য লাল রঙের পোশাক ছিল পরনে। গলায় ও হাতে জড়ানো ছিল রুদ্রাক্ষের মালা। বুধবার দিন মোদির স্নানের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী গুপ্ত নবরাত্রি চলছে। এছাড়াও বুধবার বিষমঅষ্টমী। এই তিথিতে পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণ করার রীতি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকেও এদিন তর্পণ করতে দেখা গিয়েছে।
বুধবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে সঙ্গে নিয়ে নৌকাবিহারও করেন প্রধানমন্ত্রী। কুম্ভমেলার সমস্ত ব্যবস্থাপনা খুঁটিয়ে দেখেন। তারপরই পবিত্র গঙ্গায় ডুব দিয়ে স্নান সারেন মোদি। তাঁর এই প্রয়াগরাজ সফরের আগেই এদিন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে এক্স হ্যান্ডেলে লেখা হয়, ‘ভারতের আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রচার ও সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাই তীর্থস্থানগুলোতে পরিকাঠামো উন্নয়ন ও সুযোগ-সুবিধা উন্নত করার জন্য ধারাবাহিকভাবে পদক্ষেপ করছেন তিনি।’ মহাকুম্ভে সাধু-সন্তদের সঙ্গেও দেখা করার কথা রয়েছে নমো।
প্রথম দিন থেকেই লক্ষ মানুষের ভিড় হচ্ছে মহাকুম্ভে। ইতিমধ্যে কয়েক কোটি মানুষ মহাকুম্ভে এসেছেন বলে জানা গিয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানব সমাবেশ দিনের মতোই রাতেও জাগ্রত। গোটা মেলায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করেছে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসন। ব্যবস্থা দেখে বিদেশি অতিথিরাও আপ্লুত। এর মধ্যেই অবশ্য ‘শাহি স্নানে’র সময় হুড়োহুড়িতে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছিল। যদিও ধীরে ধীরে সেই দুঃস্বপ্ন কাটিয়ে উঠছে প্রয়াগরাজ। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি মঙ্গলবার কুম্ভে স্নান করেছেন ভুটানের রাজা।