সানরাইজার্স হায়দরাবাদ: ২৩১/৬ (ইশাণ ৯৪*, অভিষেক ৩৪, রোমারিও ১৪/৩)
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু: ১৮৯/১০ (সল্ট ৬২, কোহলি ৪৩, কামিন্স ২৮/৩)
৪২ রানে জয়ী সানরাইজার্স।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে জিতলেই আইপিএলের শীর্ষে উঠে যেত আরসিবি। গুজরাটের সঙ্গে শীর্ষস্থানের লড়াইয়ে এগিয়ে থাকতে পারত। ঈশাণ কিষানের ঝড় সামলে সেই লড়াইও দিয়েছিল বেঙ্গালুরু। কিন্তু প্লে অফের আগে ‘পুনর্মুষিক’ অবস্থা তাদের। কোহলিদের ব্যাট চললে, আরসিবি চলবে। আর নাহলে ধারাবাহিক পতন। ভালো জায়গা থেকেও কার্যত জেতা ম্যাচ মাঠে ফেলে এলেন পাতিদার। শেষবেলায় মরণকামড়ে হায়দরাবাদ জিতল ৪২ রানে।
এদিন লখনউয়ের একানা স্টেডিয়ামের ‘ঘরের মাঠে’ টসে জেতে আরসিবি। বিরতির আইপিএলের সূচিতে যে পরিবর্তন এসেছে, তার মধ্যে এটাও একটি। চিন্নাস্বামী থেকে এই ম্যাচ সরে এসেছে লখনউয়ে। আর সেখানে আরসিবি’র হয়ে টস করতে এলেন জিতেশ শর্মা। অধিনায়ক রজত পাতিদার পুরো ফিট নন। তাই এই সিদ্ধান্ত।
সেখানে শুরু থেকেই ঝড় তুললেন হায়দরাবাদের ব্যাটাররা। আইপিএলের শেষের দিকে বরং রানের খোঁজ পাচ্ছেন তাঁরা। অভিষেকের ১৭ বলে ৩৪-এই বোঝা গিয়েছিল, বড় রানের পথে এগোবে হায়দরাবাদ। কোভিড কাটিয়ে সুস্থ হয়ে ফেরা ট্র্যাভিস হেড অবশ্য এদিনও রান পেলেন না। কিন্তু ঈশাণের ঝড়ে লখনউয়ের ‘ঈশাণ কোণে ঝড়’ উঠল। সেই আইপিএলের শুরুতে সেঞ্চুরি করেছিলেন। এদিন সেঞ্চুরি থেকে থামলেন মাত্র ৬ রান দূরে। মারলেন ৭টি ছক্কা, পাঁচটি ছক্কা। তাঁকে ভালোমতোই সঙ্গ দিলেন হেনরিখ ক্লাসেন (১৩ বলে ২৪), অনিকেত বর্মা (৯ বলে ২৬)। মূলত ঈশাণের কাঁধে ভর করেই ২৩১ রান করে সানরাইজার্স। রোমারিও শেফার্ডের ২ উইকেট ছাড়া আরসিবি’র বাকি বোলারদের পারফরম্যান্স আলাদা করে বলার মতো নয়।
কিন্তু বিপরীতে যে বিরাট কোহলি উপস্থিত আছেন, সেটা ভুললেই বা চলে কী করে! এই কিছুদিন আগেই টেস্ট থেকে অবসর নিয়েছেন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ছেড়েছেন প্রায় বছর খানেক হতে চলল। এখন মনে হচ্ছে, বড্ড তাড়াহুড়ো করে ফেললেন বোধহয়। ওপেনিংয়ে ফিল সল্টকে ফিরে পেয়ে চলল বিরাট রাজ। সবই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু আচমকাই হর্ষ দুবের বলে একটা বাজে শটে উইকেট ছুড়ে দিয়ে এলেন। তারপরও রানের গতি বজায় রেখেছিলেন ফিল সল্ট। চোট নিয়েও আরসিবিকে জয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ৩২ বলে ৬২ রান করেন ইংরেজ ব্যাটার। মনে হচ্ছিল, জয় থেকে খুব বেশি দূরে নেই আরসিবি। কিন্তু প্যাট কামিন্সের স্লোয়ারে ফিরলেন।
কার্যত ড্রেসিংরুমে ফিরল বেঙ্গালুরুর জয়ের স্বপ্নও। পরিবর্ত ক্রিকেটার ময়ঙ্ক আগরওয়াল (১১) সেরা ফর্ম থেকে অনেক দূরে। দেবদত্ত পাড়িক্কলের বিস্ফোরক উপস্থিতির অভাব চোখে পড়ল। ইমপ্যাক্ট হিসেবে নামা রজত পাতিদার (১৮) ইমপ্যাক্ট রাখতে পারলেন। এদিনের অধিনায়ক জিতেশ শর্মাও ফিরলেন মাত্র ২৪ রান। তারপরই শুধু যাওয়া-আসা। এদিনের মতো আরসিবি’র শীর্ষে ওঠার স্বপ্ন স্রোতে ভেসে গেল। মাত্র ১৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৮৯ রানে থামল আরসিবি’র ইনিংস। রোমারিও, ক্রুণাল কিংবা খোঁড়াতে থাকা টিম ডেভিড, সবাই ব্যর্থ। অন্যদিকে ব্যাটিংয়ের মতোই ঠিকঠাক বোলিং বিভাগ অনেক দেরিতে খুঁজে পেয়েছে হায়দরাবাদ। ঠিক ঠিক সময়ে জ্বলে ৩ উইকেট নিলেন প্যাট কামিন্স। প্রশংসা করতে হবে হায়দরাবাদের বোলার এষান মালিঙ্গারও। আগের ম্যাচের মতো এদিনও তিনি মোড় ঘোরালেন। শেষ পর্যন্ত ৪২ রানে হারল আরসিবি। প্লে অফে উঠে গেলেও রেখে গেল অনেক প্রশ্ন।