সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইরানের মাটিতে ইজরায়েলের হামলায় পশ্চিম এশিয়ার ফের বেজে উঠেছে যুদ্ধের দামামা। যার জেরে সিঁদুরে মেঘ দেখছে ভারত। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এর জেরে বিশ্ববাজারে ব্যাপকভাবে বাড়তে পারে জ্বালানি তেলের দাম। যুদ্ধের জেরে বিশ্বের বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম শনিবার ৬ ডলার বেড়ে পৌঁছে গিয়েছে ৭৮ ডলার প্রতি ব্যারেল। এই যুদ্ধ আগামী দিনে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে বাণিজ্য। যার প্রভাব সরাসরি পড়বে ভারতের উপর।
বিশেষজ্ঞদের দাবি অনুযায়ী, ভারত সরাসরি ইরান থেকে খুব বেশি তেল আমদানি না করলেও, ভারতকে নিজের চাহিদার ৮০ শতাংশ তেল বাইরে থেকে কিনতে হয়। এই আমদানির প্রায় ৫০ শতাংশ হরমুজ প্রণালী (বাণিজ্য পথ) দিয়ে আসে। বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের প্রায় ২০ শতাংশ বাণিজ্য এই পথ দিয়ে হয়। এই যুদ্ধের প্রভাব যদি কোনওভাবে হরমুজ প্রণালীর উপর পড়ে সেক্ষেত্রে ভারতের বাণিজ্য বিরাট বাধার সম্মুখীন হবে। ইরাক, সৌদি আরব, আরব আমিরশাহী থেকে আসা তেলের সাপ্লাই বাধাপ্রাপ্ত হবে। ইরান আগেই এই বাণিজ্যপথ বন্ধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। যদি তেমনটা হয় সেক্ষেত্রে পেট্রোল, ডিজেল-সহ অন্যান্য জ্বালানি তেলের দাম মারাত্মকভাবে বাড়বে। সরাসরি এর প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতিতে।
এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞদের দাবি, গোটা বিষয়টি নির্ভর করছে ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে চলতে থাকা এই সংঘাত কত দিন পর্যন্ত চলবে তার উপর। গাজা ও ইজরায়েলের মধ্যে সংঘাত চলাকালীন এর আগেও একদফা সংঘাত হয়েছিল ইরান ও ইজরায়েলের। যদিও অল্প সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাওয়ায় সেভাবে বিশ্ববাজার বা ভারতে তেমন কোনও সমস্যা দেখা যায়নি। নতুন করে এই সংঘাত চিন্তা বাড়ালেও ওয়াকিবহাল মহলের মতে, হরমুজ প্রণালী যদি ইরান বন্ধ না করে সেক্ষেত্রে ভারতের জন্য বিরাট ক্ষতির সম্ভাবনা কম। তবে দাম বাড়তে পারে অপরিশোধিত তেলের।
এ প্রসঙ্গে আমেরিকার বিখ্যাত আর্থিক প্রতিষ্ঠান জেপি মরগান দাবি করেছে, এই দাম আরও ৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ব্যারেল প্রতি ১২০ ডলারে পৌঁছতে পারে। সেই অনুযায়ী যদি পেট্রলের দামও বেড়ে যায়, তাহলে দিল্লিতে ৯৪ টাকা প্রতি লিটার দরে যে পেট্রল এখন পাওয়া যাচ্ছে তা প্রতি লিটারে ১২৩ টাকায় পৌঁছতে পারে। অর্থাৎ যুদ্ধের মূল্য চোকাতে হবে দেশের সাধারণ নাগরিককে।