নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: ভুটানের জল ঢুকে বাংলা এবং অসমের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে প্লাবনের পরিস্থিতি। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভুটান থেকে বিভিন্ন নদীর জল এসে। অথচ কেন্দ্র জানিয়ে দিল, ইন্দো-ভুটান রিভার কমিশন গঠন করার কোনও পরিকল্পনা এখনও নেই। তাতে স্বভাবতই ক্ষুব্ধ তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক প্রশ্নের জবাবে জলশক্তি মন্ত্রকের তরফে লিখিতভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে- ইন্দো-ভুটান রিভার কমিশন গঠন করার কোনও পরিকল্পনা নেই। কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী সিআর পাতিল এই জবাব দিয়েছেন।
কেন্দ্রের জবাবে সন্তুষ্ট হননি তৃণমূল সাংসদ। মঙ্গলবার সংসদ চত্বরেই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে ঋতব্রত বলেছেন, “যে সব জায়গার জন্য রাজ্য সরকার ইন্দো-ভুটান রিভার কমিশন তৈরি করতে বলেছেন, সেখানে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা বেশি। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এখন ‘ডিনায়েল মুডে’ রয়েছে। বাংলা ডুবে গেলে ওদের কিছু আসে-যায় না। রিভার কমিশন তৈরি না হলে রায়ঢাক, সঙ্কোশ, তোর্সা নদীর জলে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারের জায়গাগুলি ডুবে যাবে। তাই আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনে বাংলার মানুষ বিজেপিকেও ডুবিয়ে দেবেন।’’
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি-কে চিঠি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কমিশন গঠনের অনুরোধ করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, কমিশনে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এক জন প্রতিনিধি রাখা হোক, যাতে নদী সংক্রান্ত সমস্যাগুলির দ্রুত সমাধান করা যায়। রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিকে ওই কমিশনে রাখার বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী তাঁর চিঠিতেও উল্লেখ করেছিলেন।
অথচ জলশক্তি মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, আপাতত কমিশন গঠনের বদলে ভুটানের বৃষ্টির জল এবং নদীর জল বেড়ে পশ্চিমবঙ্গ ও অসমের সীমানায় ঢুকে পড়ায় দু’দেশের মধ্যে যে সমস্যা তৈরি হচ্ছে, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হচ্ছে। সেই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য তিনটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই তিনটি কমিটির নামও জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, দু’দেশের মধ্যে সীমান্তবর্তী এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ‘জয়েন্ট গ্রুপ অফ এক্সপার্ট’ (জেজিই), ‘জয়েন্ট টেকনিক্যাল টিম’ (জেটিটি) এবং ‘জয়েন্ট এক্সপার্ট টিম (জেইটি)’- এই কমিটিগুলি বৈঠক করে বন্যা এবং নদীর বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করবে।