সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৬ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। ইরান-ইজরায়েল সংঘর্ষে পুড়ছে মধ্য়প্রাচ্য। রাজধানী তেহরান-সহ ইসলামিক দেশটির নানা প্রান্তে ভয়ংকর হামলা চালাচ্ছে ইহুদি সেনা। গতকাল রাতভর দফায় দফায় আছড়ে পড়েছে ক্ষেপণাস্ত্র। যার পালটা দিতে ইজরায়েলে ফতেহ হাইপারসনিক মিসাইল ছুড়েছে ইরানি সেনা। তেল আভিভের টার্গেটে থাকা ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতোল্লা আলি খামেনেই হুঙ্কার দিয়েছেন, কোনও ক্ষমা, দয়া কিচ্ছু নয়। গোটা ইজরায়েলে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। শত্রুকে জবাব দিতে তাঁর অন্যতম হাতিয়ার এই অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র।
এই সংঘাতে ইজরায়েলের পাশে রয়েছে আমেরিকা। গতকাল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ইরান যদি নিঃশর্তে আত্মসমর্পণ না করে তাহলে ফল ভুগতে হবে খামেনেইকেই। কিন্তু তাতেও পিছিয়ে আসছে না তেহরান। ইজরায়েলি সেনার প্রতিটা হামলার বদলা নিতে ‘অনেস্ট প্রমিস ৩’ অপারেশন শুরু করেছে ইরানের রেভোলিউশনারি গার্ডস কর্পস। এই অভিযানে ব্যবহৃত করা হচ্ছে এক্স হ্যান্ডেলে ফতেহ ১ হাইপারসনিক মিসাইল ব্যবহার করা হচ্ছে। এনিয়ে খামেনেই এক্স হ্যান্ডেলে খামেনেই বলেন, ‘ঈশ্বরের নামে বলছি, যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে। সন্ত্রাসী ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থাকে আমরা উচিত শিক্ষা দেব। আমরা ইহুদিবাদীদের প্রতি কোনও দয়া দেখাব না।”
কতটা শক্তিশালী এই ফতেহ ১ হাইপারসনিক মিসাইল? এই প্রথম ইজরায়েলের বিরুদ্ধে এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রয়োগ করেনি ইরান। দু’দেশের মধ্যে এই সংঘাত বহুদিনের। ২০২৩ সালে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই আগুনে আরও ঘি পড়ে। ইরানের বিরুদ্ধে হামাসকে অস্ত্র দেওয়ার অভিযোগ এনেছে ইজরায়েল। যা নিয়ে গত বছরের এপ্রিল মাসেও কার্যত যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল দু’দেশের মধ্য়ে। সেই সংঘাতও চলেছিল বেশ কয়েকদিন। গত বছরের ১ অক্টোবর এই হাতিয়ার ব্যবহার করেছিল ইরানি সেনা। ‘হাইপারসোনিক’ শব্দটি প্রায়শই হাইপারসোনিক গ্লাইড যানবাহন কিংবা হাইপারসোনিক ক্রুজ মিসাইল বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
এগুলো অত্যন্ত উন্নতমান ও প্রযুক্তির অস্ত্র। হাইপারসোনিক মিসাইলগুলো ম্যাক ৫ বেগে বা শব্দের থেকেও পাঁচ গুণ (প্রতি ঘন্টায় প্রায় ৩,৮০০ মাইল, প্রতি ঘন্টায় ৬,১০০ কিলোমিটার) বেশি গতিতে ছুটে যায়। ফলে এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে রোখা প্রায় অসম্ভব। এই ফতেহ ১ মিসাইলে ধ্বংস হয়েছিল ইজরায়েলের লৌহবর্ম বা আয়রন ডোম। ফতেহ ১ হাইপারসনিক মিসাইল ২০২৩ সালে প্রথম প্রকাশ্যে আসে। নামকরণ করেছিলেন খামেনেই। ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস এটিকে ‘ইসরায়েল-স্ট্রাইকার’ হিসাবে বর্ণনা করে। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ১২ মিটার লম্বা এবং এর পাল্লা ১,৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত। এমনকী ২০০ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক বহন করতে পারে।