সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ট্রাম্প-জেলেনস্কি কাজিয়ার পর ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ এখন বড় প্রশ্নের মুখে। হোয়াইট হাউসে দুই রাষ্ট্রনেতার বেনজির বাগবিতণ্ডার পর ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমেরিকা। এবার কিয়েভকে আর কোনও গোয়েন্দা তথ্য জানাবে না ওয়াশিংটন! ফলে এতে আরও চাপ বাড়ল ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপর। গত কয়েকদিন ধরেই ট্রাম্পের রুশ-নীতি নিয়ে নানা চর্চা হচ্ছে। কিয়েভের বিরুদ্ধে তিনি যেভাবে একের পর এক পদক্ষেপ করছেন তাতে স্বাভাবিকভাবেই যুদ্ধের ময়দানে বাড়তি অক্সিজেন পাচ্ছে মস্কো। সমস্ত কিছু দেখে মুচকি হাসছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রয়টার্স সূত্রে খবর, হোয়াইট হাউসের একটি সূত্র বুধবার জানিয়েছে, আপাতত ইউক্রেনকে আর কোনও ধরনের গোয়েন্দা তথ্য জানাবে না ট্রাম্প প্রশাসন। এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদি জেলেনস্কি নমনীয় মনোভাব দেখান ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের কথা শোনেন তাহলে এই সিদ্ধান্ত বদলের জন্য বিবেচনা করা হতে পারে। এতদিন আমেরিকার গোয়েন্দা মারফৎ নানা তথ্য পেত কিয়েভ। রণক্ষেত্রে রুশ ফৌজ কী ধরনের হাতিয়ার ব্যবহার করবে, নতুন কোন মিসাইলের পরীক্ষা চালাচ্ছে এই সমস্ত খবর যেত জেলেনস্কির কাছে। কিন্তু এবার থেকে আর তা হবে না। এমনটিতেই তিন বছর ধরে লড়াই চালিয়ে যাওয়ায় অস্ত্রভাণ্ডারে টান পড়েছে ইউক্রেনের। দুর্বল হয়ে পড়েছে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। যে কারণে রুশ হামলা প্রতিহত করতে বেগ পেতে হচ্ছে জেলেনস্কি বাহিনীকে। এবার আরও বিপাকে পড়ল তারা। আর এতে লাভ হল মস্কোর।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনে বদলে গিয়েছে মার্কিন রাজনীতি। রাশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ককে উন্নত করে তুলতে আগ্রহী আমেরিকা। যা বিপদে ফেলেছে ইউক্রেনকে। যা নিয়ে সেদেশের সংসদীয় বিদেশ বিষয়ক কমিটির প্রধান ওলেকসান্দ্র মেরেজকো বলেছেন, ”সাহায্য পাঠানো বন্ধ করার অর্থই হল পুতিনকে সাহায্য করা। এই পরিস্থিতিতে এটা পরিষ্কার উনি চাইছেন আমাদের আত্মসমর্পণের দিকেই ঠেলে দিতে অর্থাৎ রাশিয়ার দাবি মেনে নিতে।” সেই সঙ্গেই তাঁর মতে, ”এই পদক্ষেপের সবচেয়ে বড় দিক হল মানসিক আঘাত। ইউক্রেনের উপরে রাজনৈতিক ধাক্কা।”
প্রসঙ্গত, তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকেই জেলেনস্কিদের পাশে ছিল আমেরিকা। দেশে আর্থিক সমস্যা সত্ত্বেও একাধিকবার ইউক্রেনের জন্য নানারকম সাহায্যের ঘোষণা করেছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এই সহায়তা নিয়ে ওয়াশিংটনের অন্দরেই চরম অসন্তোষ তৈরি হয়। ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর একাধিক দেশে মার্কিন অনুদান বন্ধ করে দেন। কিন্তু ইউক্রেনের প্রতি সাহায্য বহাল ছিল। এবার ইউক্রেন-আমেরিকার খনিজ চুক্তির সম্ভাবনা নাকচ হয়ে যেতেই ট্রাম্প কিয়েভের প্রতি সম্পূর্ণ খড়গহস্ত হয়ে উঠেছেন। তবে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মতে, এখনও জেলেনস্কি সুর নরম করলে হয়তো পরিস্থিতি বদলাতে পারে।