নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: অবসরের পর বিচারপতিদের সরকারি পদপ্রাপ্তি এবং রাজনীতি যোগ নিয়ে দিন কয়েক আগে উদ্বেগপ্রকাশ করেছিলেন খোদ প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই। এবার সংসদীয় কমিটিতেও বিচারপতিদের অবসরকালীন সুবিধা নিয়ে প্রশ্ন উঠল। সংসদের আইন বিষয়ক স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তৃণমূল দাবি তুলল, প্রয়োজনে কেন্দ্র বিল এনে এমন আইন তৈরি করুক যাতে অবসরের পর পাঁচ বছর কোনও সরকারি পদে না বসতে পারেন বিচারপতিরা।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার কমিটির বৈঠকে তৃণমূলের লোকসভার মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় দাবি তোলেন, অবসরের পর বিচারপতিদের অন্তত পাঁচ বছরের জন্য ‘কুলিং অফে’ পাঠানো হোক। ওই পাঁচ বছরে ওই পাঁচ বিচারপতি কোনওরকম পদ গ্রহণ করতে পারবেন না। বা রাজনীতিতে যোগ দিতে পারবেন না। এমনকি রাষ্ট্রপতি মনোনীত সদস্য হিসেবে সাংসদ হওয়ার ক্ষেত্রেও পাঁচ বছরের ‘কুলিং পিরিয়ড’ বাধ্যতামূলক করার দাবিতে জোরাল সওয়াল করেন কল্যাণ। এক্ষেত্রে তিনি কারও নাম না নিলেও, এই কমিটিরই সদস্য সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-কে নিশানা করেছেন বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও এদিনের বৈঠকে গগৈ হাজির ছিলেন না।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের তোলা এই দাবিকে দলমত নির্বিশেষে প্রায় সব রাজনৈতিক দলই সমর্থন করেছে বলে সূত্রের খবর। সূত্র মারফত আরও জানা গিয়েছে যে, এজলাসে বিচারপতিদের আচরণ আরও সংযত হওয়া দরকার বলে দাবি করেছেন ডিএমকে সাংসদ উইলসন। তাঁর যুক্তি, অনেক সময় আদালতে বিচারপতিরা নানান প্রগলভ মন্তব্য করে থাকেন। যা একেবারেই কাম্য নয়। কারণ বর্তমানে আদালত কক্ষের সরাসরি সম্প্রচার, লাইভ স্ট্রিমিং ব্যবস্থা চালু হওয়ার পরে সারা বিশ্বের যে কোনও জায়গা থেকেই বহু মানুষ তা দেখেন।
কেন্দ্রের মোদি জমানায় বিচারপতিদের অবসরের পর বিভিন্ন ধরনের পদ পাওয়া নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে। বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি রঙ্গনাথন মিশ্রা রাজ্যসভার সদস্য হয়েছেন। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তো বিচারপতির আসন থেকে অবসর নেওয়ার কয়েকদিন বাদেই বিজেপিতে যোগ দেন। পরে লোকসভার সাংসদ হন। অবশ্য শুধু মোদি জমানায় নয়, আগেও বহু বিচারপতি অবসরের পর বহু পদ পেয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন বিচারপতি এ এম থিপসে, বিচারপতি বিজয় বহুগুণা, বিচারপতি এম রামা জোয়েস, বিচারপতি রাজিন্দর সাচার, বিচারপতি বাহারুল ইসলাম প্রমুখরা। এবার সে সব রুখতে সচেষ্ট তৃণমূল।