অনুমতি ছাড়াই কিডনি দান! পাচারের শিকড় লুকিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে? তদন্তে অশোকনগরে পুলিশ

অনুমতি ছাড়াই কিডনি দান! পাচারের শিকড় লুকিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে? তদন্তে অশোকনগরে পুলিশ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত/FEATURED
Spread the love


অর্ণব দাস, বারাসত: অবিশ্বাস্য চড়া সুদের চাপে কিডনি পাচারের অভিযোগে বিকাশ ঘোষ ওরফে শীতলের পর এক লিংকম্যানকে কলকাতা থেকে গ্রেপ্তার করেছে অশোকনগর থানার পুলিশ। এই গ্রেপ্তারির পরই সূত্র মারফত চাঞ্চল্যকর তথ্য জানা গিয়েছে। যার অভিযোগের ভিত্তিতে অশোকনগর থানা কিডনি বিক্রির তদন্ত শুরু করেছে, সেই অভিযোগকারীর স্ত্রী কিডনি দানের আবেদন করলেও তা জেলা প্রশাসনের তরফে ‘রেকমেন্ড’ করা হয়নি। তাহলে কীভাবে কলকাতার নামী বেসরকারি হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপনের অস্ত্রপচার করতে পারল! তাহলে কি এর পিছনে বড় কোনও মাথা যুক্ত, নাকি প্রাতিষ্ঠানিক স্তরেরই কিডনি পাচারের শিকড় লুকিয়ে রয়েছে, এই প্ৰশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে। কারণ, কিডনি দান করতে দাতার প্রয়োজনীয় আইনি স্বীকারক্তির দেওয়ার পর মহকুমা প্রশাসন স্বাস্থ্য ও পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে শুনানি করার পর অনুমোদন দিলে, তারপরেই মেলে সর্বোচ্চ স্তর থেকে ছাড়পত্র। আত্মীয়, পরিজন বা বন্ধু হলে এই ছাড়পত্র পাওয়াটা কিছুটা সহজ। তবে, ‘কোনভাবেই আর্থিক লেনদেন করা যাবে না’― এই মূল শর্ত মানতেই হবে।

ইতিমধ্যেই পুলিশ জানতে পেরেছে করোনা কাল থেকে চলছে চড়া সুদের আড়ালে কিডনি পাচার চক্র। তাই এই সময়কালে কতজন কিডনি দেওয়ার আবেদন স্বাস্থ্য জেলায় এসেছিল তা জানতে চেয়েছে পুলিশ। বিশেষ সূত্রের খবর, বিগত দু’বছরে বারাসত মহকুমা এলাকায় কমবেশি ২৫ জন কিডনি দান করতে চায় বলেই আবেদন করেছিল। তার মধ্যে সবথেকে বেশি সংখ্যায় আবেদন হয়েছে অশোকনগর থানা এলাকা থেকে, সংখ্যা ১০ জন। এরপরই রয়েছে মধ্যমগ্রাম থানার এলাকার ৬ জন, তারপর হাবড়া থানা এলাকার ৫ জন। সকলে কিন্তু অনুমতি পায়নি। যেহেতু অভিযোগকারী স্ত্রী অনুমতি না পেয়েও কিডনি দিতে পারলেন, তাই সবক’টি আবেদনকেই আতস কাঁচের নিচে রেখে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এক্ষেত্রে জাল শুধুমাত্র অশোকনগর নয়, হাবড়া, বারাসত, মধ্যমগ্রাম থানা এলাকাতেই বিস্তৃত বলেই মনে করা হচ্ছে। শীতলের মতোই এই এলাকার সুদখোররা মানুষের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে এই কাজটা করেছে বলেই প্রাথমিক অনুমান পুলিশের।

শীতল নিজেই পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে অভিযোগকারীর স্ত্রীর কিডনি বিক্রি করিয়ে সে কুড়ি লক্ষ টাকা পেয়েছিল। তার থেকে সে জ্বালানির ১৫-১৬ লক্ষ টাকা রেখেছিল। বাকি এজেন্টরাও বিপুল পরিমাণ এই টাকার লোভেই চড়া সুদের ব্যবসার আড়ালে কিডনি পাচারের চক্রে নাম লিখিয়েছিল বলেই জানা যাচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা ‘কিংপিং’ যে খদ্দের জোগার করত তার খোঁজে ইতিমধ্যেই তল্লাশি চিরুণি তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। সুদখোর এজেন্টরা একটি কিডনি বিক্রি করিয়ে যদি ১৫ থেকে ১৬ লক্ষ টাকা পেতে পারে, তাহলে এই কিংপিং বিগত পাঁচ বছরে টাকার পাহাড়ে দাঁড়িয়ে যে বিশাল সাম্রাজ্য তৈরি করে ফেলেছে তা সহজেই অনুমান করা যাচ্ছে। বারাসত জেলা পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খারিয়া জানিয়েছেন, “চাপ দিয়ে যাদের কিডনি বিক্রি করানো হয়েছে তাদের প্রত্যেকের সঙ্গে আমি কথা বলব। আরেকজন যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সে ও তাঁর স্ত্রী কিডনি পাচারের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ বানাত বলেই প্রাথমিক অনুমান। বেসরকারি হাসপাতালের যোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *