Yaba pill smuggling | মাদক পাচারে গ্রেপ্তার কোচবিহার তৃণমূলের ২ প্রভাবশালী নেতা, অস্বস্তিতে শাসকদল

Yaba pill smuggling | মাদক পাচারে গ্রেপ্তার কোচবিহার তৃণমূলের ২ প্রভাবশালী নেতা, অস্বস্তিতে শাসকদল

ব্যবসা-বাণিজ্যের /BUSINESS
Spread the love


কোচবিহার ও সিতাই: শীতলকুচিতে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যার বাড়িতে ব্রাউন সুগার বানানোর কারখানার হদিস মিলেছিল। গ্রেপ্তারও হন বেশ কয়েকজন। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই নেশার ওষুধের কারবারে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেন গীতালদহ-১ অঞ্চলের দুই প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা সহ মোট ৫ জন। ধৃত তৃণমূল নেতারা হলেন গীতালদহ-১ অঞ্চলের চেয়ারম্যান মাফুজার রহমান, এলাকারই তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্য সেরাজুল। ৭৫ লক্ষ টাকার মাদক সহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। আন্তর্জাতিক পাচার চক্রের সঙ্গে ধৃতদের যোগ রয়েছে বলে অনুমান পুলিশের। মাদকপাচার চক্রে তৃণমূলের দুই প্রভাবশালী নেতার জড়িত থাকার ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা জেলা তৃণমূল। যদিও তৃণমূলের দাবি, অসামাজিক কার্যকলাপের জন্য ধৃতদের দল থেকে অনেক আগেই বহিষ্কার করা হয়েছে।

জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত সোমবার সন্ধ্যায়। গোপনসূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে কোচবিহার শহরের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন গুঞ্জবাড়িতে অভিযান চালায় এসটিএফের একটি বিশেষ দল। সেখানে অভিযান চালিয়ে ৭৫ লক্ষ টাকা মূল্যের প্রায় দেড় কেজি ইয়াবা ট্যাবলেট বাজেয়াপ্ত করে এসটিএফের শিলিগুড়ি শাখার আধিকারিকরা। মাদক রাখার অপরাধে গীতালদহ-১ অঞ্চলের চেয়ারম্যান মাফুজার রহমান, এলাকারই তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্য সেরাজুল, খাজিদুল হক, তোতা বিবি ও এরশাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এসটিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতরা ইয়াবা ট্যাবলেটগুলি নাগাল্যান্ডের ডিমাপুর থেকে নিয়ে এসেছিল। এই ট্যাবলেটগুলো দিনহাটা হয়ে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পাচার করার পরিকল্পনা ছিল ধৃতদের। কোতোয়ালি থানায় এবিষয়ে একটি মামলাও শুরু করা হয়েছে। মঙ্গলবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে ছয়দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘটনার সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে এসটিএফের এসপি ইন্দ্রজিৎ বসু জানিয়েছেন।

এদিকে মাদকপাচারে তৃণমূল নেতাদের গ্রেপ্তারে ইতিমধ্যেই লেগে গিয়েছে রাজনৈতিক রং। বিষয়টিকে হাতিয়ার করে ময়দানে নেমে পড়েছে বিজেপি। বিজেপির দাবি, মাফুজার ও সেরাজুলের মাধ্যমে মাদকপাচারের টাকা ঢুকতো তৃণমূলের নেতাদের ঘরে। জেলার তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে ধৃতদের ছবি প্রকাশ্যে এনে ময়দানে নেমে পড়েছে জেলা বিজেপি। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে তড়িঘড়ি মাফুজার ও সেরাজুলকে ছয় বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে তৃণমূল। মাফুজার দলের অঞ্চল চেয়ারম্যানের পাশাপাশি গীতালদহ-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিজলি বিবির স্বামী। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেছেন, ‘মাফুজার রহমান ও সেরাজুল হককে দলবিরোধী কার্যকলাপ ও সামাজিক অধঃপতনের অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কার করা হল। ভবিষ্যতে সে যদি আদালতে নির্দোষ প্রমাণিত হয় তাহলে দলে আসতে পারবে।’

এদিন বিজেপির জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, ‘অভিযুক্ত মাফুজার দীর্ঘদিন ধরেই আন্তর্জাতিক পাচারচক্রে জড়িত। ২০১৪ সালে সে বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হয়ে জেল খেটেছিল। নতুন করে আবার সে ইয়াবা পাচারে ধরা পড়েছে। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সেরাজুলও গ্রেপ্তার হয়েছে। এরাই হল তৃণমূলের সম্পদ।’ জেলা পুলিশের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বিরাজবাবু বলেছেন, ‘জেলা পুলিশ সবই জানে। কিন্তু তারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না। তাই এসটিএফকে অভিযান চালাতে হচ্ছে।’

সূত্রের খবর, মাফুজার বাংলাদেশের মাদক পাচারের অভিযোগে সেখানকার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিল। তিনমাস সেখানে জেলে থাকার পর জামিনে মুক্তি পায়। এরপরই সে পালিয়ে ভারতে চলে আসে বলে অভিযোগ। গিতালদহ এলাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক সংঘর্ষে এই তৃণমূল নেতার নাম জড়িয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ সহ জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে মাফুজারের ছবি প্রকাশ্যে এনেছে বিজেপি। এ প্রসঙ্গে উদয়ন জানান, পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। অভিযুক্তের সঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক, রাজ্য সহসভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া সহ অনেকের সঙ্গেই ছবি প্রকাশ্যে এসেছে।

সম্প্রতি অপ্রীতিকর বেশকিছু ঘটনায় শাসকদল যথেষ্ট বিপাকে পড়েছে। দিনকয়েক আগে দিনহাটায় ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল নেতা আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধে। ধর্ষণ, পাচার, ব্রাউন সুগার তৈরি সহ এই সম্পর্কিত অভিযোগে আপাতত অস্বস্তিতেই রয়েছে জোড়ফুল শিবির।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *