মুল্লানপুর: প্রথম সুযোগেই ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত। পাঞ্জাব কিংসকে গুঁড়িয়ে দিয়ে ৯ বছর পর ফাইনালে পা রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর। তবে কাজ এখনও শেষ হয়নি। আরও একটা এবং সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ফাইনালের ‘যুদ্ধ’ বাকি। মুল্লানপুরের নতুন পিসিএ স্টেডিয়ামে দুরন্ত জয়ের পর সেই সুরটাই ধরা পড়ল আরসিবি শিবিরে। ম্যাচের সেরা সুযশ শর্মা থেকে অধিনায়ক রজত পাতিদার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বলেও দেন, উৎসব তোলা থাক ফাইনালের জন্য।
একই আবেদন বিরাট কোহলিরও। গ্যালারিতে আরসিবি-র সবথেকে বড় ‘চিয়ারলিডার’ অনুষ্কা শর্মাকে যা ইশারায় বুঝিয়েও দেন। জয়ের পর গ্যালারিতে বন্ধুদের নিয়ে উচ্ছ্বসিত অনুষ্কাকে উদ্দেশ্য করে একটা আঙুল উঁচু করে দেখিয়ে বুঝিয়ে দেন, কাজ শেষ হয়নি। আরও একটা ম্যাচ, আরও একটা জয় দরকার।
বীরুষ্কার যে ভিডিও প্রত্যাশামাফিক ভাইরাল। পরিষ্কার হয়ে যায় বিরাট এবং আরসিবি শিবিরের মনের কথা। আসলে তীরে এসে তরী ডোবা, ফাইনালে স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা কী হয়, বারেবারে টের পেয়েছেন বিরাট। ২০০৮, ২০১১, ২০১৬-তিনবার ফাইনালে হেরেছে আরসিবি। ৯ বছর আগে অধিনায়ক ছিলেন বিরাট। এখনই তাই উৎসবে ভেসে যেতে নারাজ। অপেক্ষা ৩ জুন আহমেদাবাদের ফাইনাল-শোয়ের জন্য।
যন্ত্রণার যে সফরে বিরাটের অন্যতম সঙ্গী এবি ডিভিলিয়ার্স মজার গল্প শোনালেন। জানান, ‘এ সালা কাপ নামদে’ বলা যাবে না! বিরাটের অলিখিত নিষেধাজ্ঞা! কন্নড় ভাষায় বলা যে স্লোগানের বাংলা অর্থ, ‘এবার কাপ আমাদের’। গত সতেরো বছর বারবার যে স্লোগান তুললেও কাপ আসেনি। একই পথে আর তাই হাঁটতে নারাজ বিরাটরা!
টিমের বাইরে থাকলেও বন্ধুর কথা রাখতে এবি বলেন, ‘এবার সময় আসন্ন। ওই কথাগুলি অবশ্য ব্যবহার করব না, বিরাটের নিষেধ। তবে বিশ্বাস, এবার সবকিছু ঠিকঠাক হবে। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল, দলের একঝাঁক খেলোয়াড় চাপের মুখে এগিয়ে এসেছে। বিভিন্ন পরিস্থিতি, ম্যাচে দলকে ভরসা জুগিয়েছে।’
লক্ষ্মীবারে ফাইনালে টিকিট প্রাপ্তির পর সাংবাদিক সম্মেলনে মুখোমুখি হন জোশ হ্যাজেলউড। সামনে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল। কাঁধের চোট সারিয়ে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরতে বেছে নিয়েছেন আইপিএল-কে। প্রত্যাবর্তন ম্যাচেই শ্রেয়স আইয়ার, জোশ ইনগ্লিসের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট।
হ্যাজেলউড বলেছেন, ‘টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রস্তুতি হিসেবে বোলিং শুরু জরুরি ছিল। সেটা বিশ্বের যে কোনও প্রান্তেই হতে পারে। দরকার ছিল বাইশ গজে বল হাতে বেশ কিছুটা সময় কাটানো। সেদিক থেকে আইপিএলের চেয়ে ভালো মঞ্চ কী আর হতে পারে?’
টেস্ট বোলিং লাইন-লেংথেই সুপারহিট হ্যাজেলউড। ১১ ম্যাচে ২১ উইকেট। পার্পল ক্যাপের দৌড়ে তৃতীয় স্থানে। প্রত্যাবর্তনে সাফল্যের খুশি নিয়ে বলেন, ‘কাঁধ নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ প্রচুর পরিশ্রম করেছি। গত দিন দশেকের বেশ কিছু ওভার করেছি। এদিন সাফল্য পেয়ে ভালো লাগছে।’
সতীর্থ বোলারদের প্রশংসা ভরিয়ে দিলেন। হ্যাজেলউডের মতো ভুবনেশ্বর কুমারের মতো দক্ষ, অভিজ্ঞ বোলারকে সঙ্গী হিসেবে পাওয়া প্লাস পয়েন্ট। বাকিরাও দলকে ভরসা জোগাচ্ছে। তারই প্রতিফলন কোয়ালিফায়ার ওয়ানে। তবে কাজ শেষ হয়নি। এই ছন্দটাই ৩ জুন খেতাবি যুদ্ধে বজায় রেখে আরসিবি-কে প্রথম আইপিএল ট্রফি উপহার দেওয়ার পাখির চোখ।