দীপঙ্কর মিত্র, রায়গঞ্জ: আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অবৈধভাবে মৃত মানুষের নামে ওয়ারিশ বা উত্তরাধিকার সার্টিফিকেট ইস্যু করে ২ শতক জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে উত্তর দিনাজপুরের (Uttar Dinajpur) বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জিন্নাতুন খাতুনের বিরুদ্ধে। ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে মৃত আবদুল কাদেরের পরিবার থেকে ১৪ শতক জমি কেনেন জিন্নাতুন খাতুন। সেসময় পরিবারে ওই জমির ওয়ারিশ ছিলেন ৬ জন- মা রাসেদা বেওয়া, চার ছেলে ইয়াদ রহমান, রুস্তম আলি, রফিজা আলি, রেজাউল হক এবং এক মেয়ে তুলি খাতুন। বিন্দোল পঞ্চায়েতের তৎকালীন প্রধান মহম্মদ জালালউদ্দিন আইন অনুযায়ী জীবিত ওই ৬ জনের নামেই ওয়ারিশ সার্টিফিকেট ইস্যু করেছিলেন। কারণ, আবদুল কাদেরের মেয়ে হুসনারা খাতুন ২০০২ সালে বাবার জীবদ্দশাতেই মারা যান।
অভিযোগ, জিন্নাতুন খাতুন নিজে প্রধান পদে আসীন হওয়ার পর মৃত হুসনারা খাতুনের নামও সম্প্রতি ওয়ারিশ সার্টিফিকেটে যুক্ত করে তাঁর ছেলেমেয়েদের দাবিদার বানান। এরপর তাঁদের কাছ থেকে ২ শতক জমি ক্রয় করেন তিনি।
আইন অনুযায়ী কোনও মৃত ব্যক্তির নামে ওয়ারিশ সার্টিফিকেট ইস্যু করা যায় না। এক্ষেত্রে মৃত হুসনারা খাতুনের নামে প্রধান কীভাবে ওয়ারিশ সার্টিফিকেট ইস্যু করলেন, সেই প্রশ্নই তুলছেন উত্তরাধিকারীরা। আবদুল কাদেরের ছেলে রাফেজ আলির দাবি, ‘আমাদের মৃত বোনের নাম ইচ্ছে করে ওয়ারিশ সার্টিফিকেটে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর তাঁর ছেলেমেয়েদের চাপ দিয়ে ২ শতক জমি রেজিস্ট্রি করানো হয়েছে। ২০১৭ সালে আমরা ৬ জনই বৈধ ওয়ারিশ ছিলাম। বর্তমান প্রধান জিন্নাতুন খাতুন অবৈধ ওয়ারিশ সার্টিফিকেট ইস্যু করে জমি দখল করেছেন।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধান জিন্নাতুন খাতুন বলেন, ‘ওই পরিবার আমার সংসদের লোক। আমি ভালোভাবে চিনি। তাঁদের বাবা আগে মারা গিয়েছেন, তারপর মেয়ে মারা গিয়েছেন। তাই মৃত হুসনারা খাতুনের নামে ওয়ারিশ সার্টিফিকেট দিয়েছি। তাঁর ছেলেমেয়েদের প্রাপ্য জমি আমার মেয়ে কিনেছে।’ জিন্নাতুনের পালটা দাবি, ‘পূর্বতন প্রধান ভুল করে ৬ জনের নামে সার্টিফিকেট ইস্যু করেছিলেন। আমি সেটা শুধরে দিয়েছি।’
পূর্বতন প্রধান মহম্মদ জালালউদ্দিন অবশ্য নিজের অবস্থানে অনড়। তিনি বলেন, ‘একজন মৃত মানুষকে ওয়ারিশ সার্টিফিকেট দেওয়া যায় না। তাই আমি জীবিত ৬ জনের নামেই সার্টিফিকেট ইস্যু করেছিলাম।’