বিশ্বজিৎ সরকার, রায়গঞ্জ: মিলছে না ১০, ২০ এবং ৫০ টাকার নন–জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প পেপার। তাই বাইরের জেলা থেকে স্ট্যাম্প পেপার কিনে প্রশাসনিক কাজ চলছে। এমন পরিস্থিতি চলছে উত্তর দিনাজপুরের (Uttar Dinajpur) রায়গঞ্জ জেলা আদালত চত্বরে। চাহিদামতো স্ট্যাম্প পেপার না মেলায় আদালতে কাজ করাতে এসে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
রায়গঞ্জ জেলা আদালতে প্রতিদিন গড়ে ৩০০টি অ্যাফিডেভিট হয়। আদালত চত্বরের সরকারি ভেন্ডারদের কাছে ১০, ২০ এবং ৫০ টাকার নন–জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প পেপার নেই। ফলে বাইরের থেকে স্টাম্প পেপার এনে কাজ করতে হচ্ছে আইনজীবীদের। তাঁদের একাংশের অভিযোগ, জেলা আদালত চত্বরে স্ট্যাম্প পেপারের কালোবাজারি চলছে। ১০, ২০ ও ৫০ টাকার স্ট্যাম্প পেপার দ্বিগুণ দামে বিক্রি করা হচ্ছে। রায়গঞ্জ জেলা আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুজিত সরকারের প্রশ্ন, ‘আমাদের আদালত চত্বরের ভেন্ডারদের কাছে যে স্ট্যাম্প পেপারগুলি আসে সেগুলি কোথায় যাচ্ছে?’ এর সঙ্গে বড় কোনও চক্র জড়িত রয়েছে বলে তাঁর সন্দেহ। এবিষয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলার বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাওন চৌধুরী জানান, এই সমস্যা দীর্ঘদিনের। সব মূল্যের স্ট্যাম্প পেপার অনেক সময় পাওয়া যায় না। তাই বাড়তি দাম দিয়ে স্ট্যাম্প পেপার কিনতে হয়।
আদালতের স্ট্যাম্প ভেন্ডার বিধানচন্দ্র পাল বলেন, ‘আমরা জেলা আদালত থেকে ১০, ২০, ৫০ টাকার স্ট্যাম্প পেপার পাই না। যা পাই তাই বিক্রি করি। কেন ১০ বা ২০ টাকার স্ট্যাম্প পেপার পাওয়া যাচ্ছে না এর উত্তর জেলা প্রশাসন দিতে পারবে।’
১০ টাকার স্ট্যাম্প পেপার পর্যাপ্ত পরিমাণে না থাকায় বাধ্য হয়ে মানুষ ১০০ টাকার স্ট্যাম্প পেপার কিনছে। আবার অনেক সময় স্ট্যাম্প পেপারের অভাবে কাজ বন্ধ রাখতে হচ্ছে আদালতকর্মীদের। প্রায় এক মাস ধরে এই সমস্যা চলছে বলে অভিযোগ করেন আদালতের কর্মীরা। রায়গঞ্জ জেলা আদালতের স্ট্যাম্প পেপার ভেন্ডার তন্দ্রা বিশ্বাস সরকার বলেন, ‘আমরা ১০ এবং ২০ টাকার স্ট্যাম্প পেপার চেয়েও পাচ্ছি না। এই দামের স্ট্যাম্প পেপারের চাহিদা সব থেকে বেশি থাকে। উপায় না পেয়ে একপ্রকার বাধ্য হয়ে অন্যান্য দামের স্ট্যাম্প পেপার বিক্রি করছি।’
সদ্য উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য অ্যাফিডেভিট করাতে এসে নাজেহাল হতে হচ্ছে কলেজ পড়ুয়াদের। এই প্রসঙ্গে, এক কলেজ পড়ুয়া ডোনা পাল বলেন, ‘বাইরের কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য আবেদন করেছি। এক্ষেত্রে অ্যাফিডেভিট করা বাধ্যতামূলক। আদালত চত্বরে এসে দেখি ১০ বা ২০ টাকার একটিও স্ট্যাম্প পেপার নেই। তাই বাধ্য হয়ে ১০০ টাকার স্ট্যাম্প পেপার কিনে কাজ করাতে হল।’